0 / 0

সদ্য-বিধবা নারী যা কিছু থেকে বিরত থাকবেন

السؤال: 10670

আমার স্বামী মারা গেছেন। আমার কি করণীয়। কি কি বিষয় থেকে আমাকে বিরত থাকতে হবে?

الجواب

الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وآله وبعد.

সদ্য-বিধবা তথা স্বামীর শোকপালনরত নারীকে যে বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকতে হবে হাদিসে সেগুলোর বর্ণনা এসেছে। সেগুলো হচ্ছে– পাঁচটি বিষয়:

এক. যে বাড়ীতে তার স্বামী মারা গেছে সে বাড়ীতে অবস্থান করা। তার ইদ্দত শেষ হওয়া পর্যন্ত তিনি এখানে থাকবেন। ইদ্দত শেষ হবে চার মাস দশদিনে। তবে যদি গর্ভবতী হন তাহলে সন্তান প্রসব করার মাধ্যমে তার ইদ্দত শেষ হবে। যেমনটি আল্লাহ্‌ তাআলা বলেছেন: “আর গর্ভধারিনীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত।”[সূরা ত্বালাক, আয়াত: ৪] কোন প্রয়োজন কিংবা জরুরী অবস্থা ব্যতীত ঘর থেকে বের হবেন না। যেমন- অসুস্থ হলে হাসপাতালে যাওয়া, প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য ও এ জাতীয় অন্য কিছু কেনার জন্য কাউকে না পেলে বাজারে যাওয়া, অনুরূপভাবে ঘরটি যদি ধ্বসে পড়ে তাহলে তিনি এ ঘর ছেড়ে অন্য ঘরে চলে যাবেন, কিংবা তাকে সঙ্গ দেয়ার মত যদি কেউ না থাকে এবং তিনি নিজের উপর আশংকা করেন এ রকম প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে আপত্তি নেই।

দুই. তিনি সুন্দর কাপড়-চোপড় পরবেন না; সেটা হলুদ হোক বা সবুজ হোক বা অন্য কোন রঙের হোক। বরং অসুন্দর কাপড়-চোপড় পরবেন; সেটা কালো বা সবুজ হোক বা অন্য কোন রঙের হোক। মোটকথা হল, অসুন্দর কাপড় হওয়া। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবেই নির্দেশ দিয়েছেন।

তিন. স্বর্ণ, রৌপ্য, ডায়মন্ড, মুক্তা কিংবা এসব ধাতুর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ অন্য কোন ধাতু দিয়ে তৈরী অলংকার পরবেন না; সেটা গলার হার হোক, হাতের চুড়ি হোক, আংটি হোক কিংবা এ ধরণের অন্য কোন অলংকার হোক না কেন; ইদ্দত শেষ হওয়া পর্যন্ত পরবেন না।

চার. সুগন্ধি পরিহার করবেন। সেটা ধূপধুনার মাধ্যমে সুগন্ধি গ্রহণ হোক কিংবা অন্য কোন সুগন্ধি হোক না কেন। তবে, হায়েয থেকে পবিত্র হলে কিছু ধূপ দিয়ে ধূপধুনা করতে কোন অসুবিধা নেই।

পাঁচ. সুরমা লাগানো বর্জন করবেন। তিনি সুরমা লাগাবেন না এবং সুরমার মত অন্য যা কিছু চেহারার রূপ চর্চায় ব্যবহৃত হয় সেগুলোও ব্যবহার করবেন না। অর্থাৎ যে বিশেষ রূপচর্চা দ্বারা মানুষ আকৃষ্ট হয় সেটা বর্জন করবেন। পক্ষান্তরে, সাবান ও পানি দিয়ে সাধারণ রূপচর্চা করতে কোন বাধা নেই। কিন্তু, সুরমা যা দিয়ে চক্ষুদ্বয়কে সুন্দর করা হয় কিংবা সুরমার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ অন্য যে সকল জিনিস নারীরা চেহারাতে ব্যবহার করে থাকে সেগুলো ব্যবহার করবেন না।

যে নারীর স্বামী মারা গেছে তার এই পাঁচটি বিষয় মেনে চলতে হবে।

পক্ষান্তরে, সাধারণ মানুষ যেসব ধারণা করে থাকে কিংবা বানিয়ে বানিয়ে বলে থাকে, যেমন- কারো সাথে কথা বলতে পারবে না, টেলিফোনে কথা বলতে পারবে না, সপ্তাহে একবারের বেশি গোসল করতে পারবে না, খালি পায়ে ঘরে হাঁটতে পারবে না, চাঁদের আলোতে বের হতে পারবে না ইত্যাদি এগুলো কুসংস্কার; এগুলোর কোন ভিত্তি নেই। বরং তিনি খালি পায়ে ও জুতা পায়ে নিজ ঘরে হাঁটতে পারবেন। নিজের প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারবেন। নিজের জন্য ও মেহমানের জন্য খাদ্য রান্না করতে পারবেন। বাড়ীর ছাদে কিংবা বাগানে চাঁদের আলোতে হাঁটতে পারবেন। যখন ইচ্ছা তখন গোসল করতে পারবেন। সন্দেহের উদ্রেক সৃষ্টি করে না এমন কথাবার্তা যে কারো সাথে বলতে পারবেন। নারীদের সাথে ও মাহরামদের সাথে মোসাফাহা করতে পারবেন; গায়রে মাহরামদের সাথে নয়। তার কাছে মাহরাম ছাড়া অপর কেউ না থাকলে মাথার ওড়না খুলে রাখতে পারবেন। মেহেদি, জাফরান ও সুগন্ধি ব্যবহার করবেন না। পোশাকাদিতেও না, কফিতেও না। কেননা জাফরান এক ধরণের সুগন্ধি। বিয়ের প্রস্তাব দিবেন না; তবে ইঙ্গিত দিতে অসুবিধা নাই। কিন্তু, স্পষ্ট বিয়ের প্রস্তাব দিবেন না। আল্লাহ্‌ই তাওফিকদাতা।

[শাইখ বিন বাযের ফতোয়া ‘ফাতাওয়া ইসলামিয়্যা’ (খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-৩১৫-৩১৬)]

আরও বিস্তারিত জানতে দেখুন: ফাইহান আল-মুতাইরি রচিত ‘আল-ইমদাদ বি আহকামিল ইহদাদ’ এবং খালেদ আল-মুসলিহ রচিত ‘আহকামুল ইহদাদ’।

المصدر

শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android