আমার সমস্যা হচ্ছে আমি যে কাজই শুরু করি সে কাজ শেষ করতে পারি না। হোক সে কাজ কার্যত আমি শুরু করেছি; কিংবা শুরু করার নিয়ত করেছি। হোক সে কাজ আমার ইবাদাতের সাথে সম্পৃক্ত কিংবা আমার দুনিয়াবী জীবনের সাথে সম্পৃক্ত। সবসময় আমি মাঝপথে এসে কেটে পড়ি। আশা করি আপনারা আমাকে পরামর্শ দিবেন। ধন্যবাদ।
ব্যক্তি কিভাবে যে কোন কর্ম পরিপূর্ণ করতে পারে?
প্রশ্ন: 111750
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
পরামর্শ বা দিক-নির্দেশনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান হবে না। আপনি যে সমস্যায় ভুগছেন সেটি একটি আচরণগত সমস্যা। এর সমাধান ও চিকিৎসা প্রয়োজন। শুধুমাত্র কিছু কথামালার ওয়াজ-নসিহত এক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়।
এ সমস্যাকে কাটিয়ে উঠার জন্য আপনার যা করা কর্তব্য সেটা হচ্ছে- “কর্মটির শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়া”। হতে পারে প্রথমবার সফলভাবে সমাধান করার অভিজ্ঞতা আপনাকে সকল কর্ম সফলভাবে শেষ করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করবে। এক্ষেত্রে আপনি দুইটি বিষয়ের সহায়তা নিতে পারেন:
১। আপনি কাজগুলোকে ছোট ছোট ধাপে ভাগ করে নিতে পারেন। যাতে করে আলাদা আলাদাভাবে প্রত্যেকটি ধাপ শেষ করার মত আপনার উদ্যমতা থাকে এবং শেষ ধাপ পর্যন্ত পৌঁছার জন্য আপনি চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারেন। মানুষ বড় ও দীর্ঘ কাজগুলোকে খুব কঠিন জ্ঞান করে। তাই এমন বড় কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে ভাগ ভাগ ও ধাপভিত্তিক করে নেয়া বাঞ্ছনীয়।
২। ছোট ও দ্রুত শেষ করা যায় এমন কাজ নির্বাচন করা এবং কাজটি শেষ করার জন্যই শুরু করা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “হে লোক সকল! তোমরা সে সব কাজ শুরু কর; যে কাজ করার মত তোমার সাধ্য রয়েছে”[সহিহ বুখারী (৫৮৬১) ও সহিহ মুসলিম (৭৮২)] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, “আল্লাহ্র কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল হচ্ছে, নিয়মিত আমল; সেটা কম হলেও”[সহিহ বুখারী (৬৪৬৪) ও সহিহ মুসলিম (৭৮৩)]
ইমাম নববী বলেন: অর্থাৎ তোমরা কোন ক্ষতি ছাড়া যে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সাধ্য রাখ। এ হাদিসে ভারসাম্য রেখে ইবাদত করা ও অতিরিক্ত মগ্নতা এড়িয়ে চলার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। হাদিসটি নামাযের সাথে খাস নয়। বরং সেটি সকল নেক আমলের ক্ষেত্রে আম।”[সমাপ্ত]
[শারহু নাওয়ায়ি আলা মুসলিম (৬/৭০-৭১)]
আমরা আপনাকে কিছু বই ও এডুকেশনাল স্টাডিজ সংক্রান্ত কিছু গবেষণা পড়ার পরামর্শ দিচ্ছি; যাতে করে সেগুলো থেকে আপনি উপকৃত হতে পারেন। যেমন- শাইখ নাসের আল-উমর রচিত ‘আল-ফুতুর আসবাবুহু ও ইলাজুহু’, ড. মুহাম্মদ মুসা আল-শরিফ ‘আজযুস সিকাত’।
আল্লাহ্ই ভাল জানেন।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব