0 / 0

মুসলিম খলিফার দায়িত্ব গ্রহণ পদ্ধতি

প্রশ্ন: 111836

প্রশ্ন: ইসলামী রাষ্ট্র কিভাবে পরিচালিত হত? ইসলামের প্রথম যুগে শাসন পদ্ধতি কেমন ছিল?

উত্তর

আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা

সমস্তপ্রশংসাআল্লাহরজন্য।

মুসলিম শাসকের কর্তব্যহচ্ছে-রাষ্ট্রীয় বড় বড়পদের জন্যযথাপোযুক্তব্যক্তিদেরকেদায়িত্বদেয়া।অনুরূপভাবে-আলেম সমাজ ও বিভিন্নক্ষেত্রেবিশেষজ্ঞব্যক্তিবর্গেরসমন্বয়ে একটিমজলিসে শুরাবা পরামর্শসভাগঠন করা।সাধারণমানুষ বা চাটুকারদেরএ পরিষদেস্থান দেয়াউচিত নয়। এটাকরলে তারা তাদেরআত্মীয়স্বজনবা দলীয় লোকবা যে ব্যক্তিবেশি অর্থপ্রদান করবে সেসবলোকদেরদায়িত্বদিবে।

শাইখ সালেহবিন ফাওযানআল-ফাওযানবলেন: খলিফার নীচেযেসব পদ রয়েছেসেসব পদেনিয়োগ দেয়ারঅধিকারখলিফার।খলিফা যোগ্য ওআমানতদারব্যক্তিদেরনির্বাচনকরবেন এবংতাদেরকে সেসবপদের জন্যনিয়োগ দিবেন।আল্লাহ তাআলাবলেন: “নিশ্চয়আল্লাহতোমাদেরকেনির্দেশদিচ্ছেন যারাআমানত ধারণেরযোগ্যতাদেরকেআমানত দিবে।আর যখনমানুষের মাঝেফয়সালা করবেতখন ন্যায়ভাবেফয়সালা করবে।”। এ আয়াতেকারীমাতেশাসকবর্গকেউদ্দিষ্ট করাহয়েছে। আরআমানত দ্বারাউদ্দেশ্যহচ্ছে- রাষ্ট্রীয়দায়িত্ব ওপদসমূহ।আল্লাহ তাআলাশাসকের কাছেএটাকে আমানতরেখেছেন।যোগ্য ওবিশ্বস্তলোককে এসবপদের জন্যনির্বাচন করাহলে এ আমানতযথাযথভাবেআদায় হবে।যেমনিভাবেনবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লামএবং তাঁরপরবর্তীতেখোলাফায়েরাশেদীন যারাএসব পদের জন্যযোগ্য ওযথাযথভাবেদায়িত্ব পালনকরতে সক্ষমতাদেরকে এসবদায়িত্বেরজন্যনির্বাচনকরতেন। বর্তমানযামানায়পৃথিবীরবিভিন্নরাষ্ট্রে যে নির্বাচনপদ্ধতি চালুআছে এটিইসলামী পদ্ধতিনয়। এসবনির্বাচনবিশৃঙ্খলা,ব্যক্তিগত পছন্দ,স্বজনপ্রীতিও লোভ-লালসার কেন্দ্রবিন্দু।এসব নির্বাচনেগণ্ডগোল ওরক্তপাত হয়েথাকে। এভাবেপ্রকৃতউদ্দেশ্যহাছিল হয় না।বরং এসব নির্বাচনভোটবাজারেপরিণত হয়।যেখানে ভোট বেচাকেনাচলে এবং সবমিথ্যাপ্রপাগাণ্ডাচলে। সমাপ্ত[দৈনিকআল-জাজিরা,সংখ্যা-১১৩৫৮]

ইসলামীরাষ্ট্রেররাষ্ট্রপ্রধানবা খলিফা তিনটিপ্রদ্ধতিরকোন একটিরমাধ্যমে এ দায়িত্বগ্রহণ করতেপারেন।

এক: আহলে হিল্ল ও আকদ এর পক্ষ থেকে মনোনীত বা নির্বাচিত হয়ে। উদাহরণতঃ আবু বকর (রাঃ) এর খিলাফত। তাঁর খিলাফত আহলে হিল্ল ও আকদ এর মনোনয়ন ও নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর সমস্ত সাহাবী তাঁর খিলাফতের পক্ষে ঐক্যমত্য পোষণ করেন, তাঁর হাতে বায়াত করেন এবং তাঁর খিলাফতের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

অনুরূপভাবেউসমান বিনআফফান (রাঃ) এরখিলাফতও এভাবেসাব্যস্তহয়েছিল। উমর(রাঃ) তাঁরপরবর্তীখলিফানির্ধারণকরার জন্য শীর্ষস্থানীয়ছয়জন সাহাবীরসমন্বয়ে একটি পরামর্শসভাগঠনকরেছিলেন।তাঁদের মধ্যথেকে আব্দুররহমান বিন আওফমুহাজির ওআনসারদেরসাথে পরামর্শকরলেন। যখনদেখলেন যে,লোকেরা উসমান(রাঃ) কেচাচ্ছে তখনতিনিই প্রথমতাঁর হাতেবায়াত করেন।এরপর ছয়জনের অবশিষ্টসাহাবীগণওতাঁর হাতেবায়াত করেন।এরপর মুহাজিরও আনসারগণতাঁর হাতেবায়াত করেন।এভাবে আহলেহিল্ল ও আকদএর মনোনয়ন ওনির্বাচনেরমাধ্যমে তাঁরখিলাফত প্রতিষ্ঠিতহয়েছিল।

অনুরূপভাবেআলী (রাঃ) এরমনোনয়ন ওনির্বাচনও অধিকাংশআহলে হিল্ল ওআকদ এর মনোনয়নও নির্বাচনেরমাধ্যমেসম্পন্নহয়েছিল।

দুই:পূর্ববর্তীখলিফার দেয়াপ্রতিশ্রুতিরমাধ্যমেখিলাফতপ্রতিষ্ঠিতহওয়া। অর্থাৎপূর্ববর্তীখলিফাসুনির্দিষ্টভাবেকাউকে তাঁরপরবর্তীখলিফা হিসেবেপ্রতিশ্রুতিদিবেন। এরউদাহরণ হচ্ছে-উমর (রাঃ) এরখিলাফত। তাঁরখিলাফত আবুবকর (রাঃ) এরদেয়াপ্রতিশ্রুতিরমাধ্যমেসাব্যস্তহয়েছিল।

তিন: শক্তি ওআধিপত্যবিস্তারেরমাধ্যমে।অর্থাৎ কেউযদি তারঅস্ত্র ওক্ষমতা বলেতাকে মেনেনিতে মানুষকেবাধ্য করে এবংস্থিতিশীলতাআনতে সক্ষম হনসেক্ষেত্রেতার আনুগত্যকরাঅপরিহার্য,তিনি মুসলমানদেররাষ্ট্রপ্রধানহিসেবেস্বীকৃতিপাবেন।উদাহরণতঃকিছু কিছুউমাইয়া খলিফা ওআব্বাসীখলিফা এবংতাদেরপরবর্তীতেকিছু কিছু খলিফাএভাবে ক্ষমতাগ্রহণকরেছিলেন।এটি শরিয়ত বিরোধী,বেআইনীপদ্ধতি। কারণঅন্যায়ভাবে,জোরজবরদস্তিকরে ক্ষমতাদখল করাহয়েছে। তবে উম্মতেরএকজন শাসকথাকুক সে মহানকল্যাণের দিক এবংদেশেরনিরাপত্তাবিঘ্নিতহওয়ার মত সাংঘাতিকঅকল্যাণেরদিক বিবেচনাকরেজোরপূর্বক ওঅস্ত্রবলেক্ষমতাগ্রহণকারীআল্লাহর দেয়াশরিয়তঅনুযায়ী শাসনকরলে তারআনুগত্য করতেহবে।

শাইখউছাইমীন (রহঃ)বলেন: যদি কোনলোক বিদ্রোহ করেক্ষমতা দখলকরে নেয়তাহলেও তারআনুগত্য করামানুষের উপরওয়াজিব।এমনকি সেক্ষমতাগ্রহণযদিজবরদস্তিমূলকহয়; মানুষেরঅসম্মতিতে হয়তবুও। কারণসেতো ক্ষমতানিয়েই ফেলেছে।

এর পক্ষেযুক্তি হচ্ছে-এই যে ব্যক্তিক্ষমতা দখলকরে ফেলেছেতার সাথে যদিক্ষমতা নিয়েটানাটানি করাহয় তাহলে মহাঅঘটন ঘটেযাবে। যেমনটিঘটেছে বনিউমাইয়ারাষ্ট্রে।সুতরাং কেউ যদিজবরদস্তি করেও প্রভাবখাটিয়ে করেক্ষমতা নিয়েনেয় তাহলে সেখলিফা হয়েযাবে, তাকেখলিফা ডাকাহবে এবংআল্লাহরনির্দেশপালনার্থেতার আনুগত্যকরতে হবে।সমাপ্ত।[শরহুলআকিদা আল-সাফারিনিয়্যা,পৃষ্ঠা-৬৮৮]

এ বিষয়ে আরওবিস্তারিত,রাষ্ট্রীয়কর্মনীতি ওকর্মেরকাঠামো জানতেপড়ুন আবুলহাসানআল-মাওয়ারদিআল-শাফেয়ি এর ‘আল-আহকামআল-সুলতানিয়া’ এবং আবুইয়ালাআল-ফাররাআল-হাম্বলি এর‘আল-আহকামআল-সুলতানিয়া’ এবংআল-কিত্তানিএর ‘আত-তারতিবআল-ইদারিয়্যা’। এইগ্রন্থেঅতিরিক্তঅনেক জ্ঞান ওতথ্য রয়েছে।

আল্লাহই ভালজানেন।

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android