আশা করি আপনারা জানাযার নামাযের পদ্ধতি পরিস্কার করবেন; ঠিক যেভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়েছে। কেননা অনেক মানুষ জানাযার নামাযের পদ্ধতি জানে না।
জানাযার নামাযের পদ্ধতি
প্রশ্ন: 12363
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
জানাযার নামাযের পদ্ধতি যেমনটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবীবর্গ বর্ণনা করেছেন তা হল: প্রথমে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে তাকবীর দিবে, তারপর ‘আউজুবিল্লাহ্’ ও ‘বিসমিল্লাহ্’ পড়বে। তারপর সূরা ফাতিহা ও ছোট একটি সূরা পড়বে কিংবা কিছু আয়াত পড়বে। অতঃপর তাকবীর দিবে এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরুদ পড়বে যেভাবে নামাযের শেষাংশে পড়া হয়। এরপর তৃতীয় তাকবীর দিবে এবং মৃতব্যক্তির জন্য দোয়া করবে। উত্তম হচ্ছে এই দোয়াটি পড়া:
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيرِنَا وَكَبِيرِنَا وَذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا اللَّهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَأَحْيِهِ عَلَى الإِسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الإِيمَانِ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ وَعَافِهِ وَاعْفُ عَنْهُ وَأَكْرِمْ نُزُلَهُ وَوَسِّعْ مُدْخَلَهُ وَاغْسِلْهُ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَنَقِّهِ مِنَ الْخَطَايَا كَمَا يُنَقّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ، اللَّهُمَّ أَبْدِلْهُ دَارًا خَيْرًا مِنْ دَارِهِ، وَأَهْلاً خَيْرًا مِنْ أَهْلِهِ، اللَّهُمَّ أَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ، وَأَعِذْهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ عَذَابِ النَّارِ وَافْسَحْ له في قَبْرِهِ، وَنَوِّرْ له فِيهِ اللَّهُمَّ لا تحرِمنا أجرَه ولا تُضِلَّنا بعدَه
(হে আল্লাহ! আমাদের জীবিত ও মৃত, উপস্থিত ও অনুপস্থিত, ছোট ও বড় এবং নর ও নারী সবাইকে ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ! আমাদের মধ্যে যাকে আপনি জীবিত রাখবেন তাকে ইসলামের ওপর জীবিত রাখুন এবং যাকে মৃত্যু দিবেন তাকে ঈমানের সাথে মৃত্যু দিন। হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করুন, তার প্রতি দয়া করুন, তাকে পূর্ণ নিরাপত্তায় রাখুন, তাকে মাফ করে দিন, তার মেহমানদারীকে মর্যাদাপূর্ণ করুন, তার প্রবেশস্থলকে প্রশস্ত করে দিন। আপনি তাকে পানি, বরফ ও শিলা দিয়ে ধৌত করুন। তাকে গুনাহ থেকে এভাবে নির্মল করুন যেভাবে সাদা কাপড়কে ময়লা থেকে নির্মল করা হয়। হে আল্লাহ্! তাকে তার ঘরের বদলে উত্তম ঘর দিন, তার পরিবারের পরিবর্তে উত্তম পরিবার দিন। হে আল্লাহ্! আপনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান এবং কবরের আযাব ও জাহান্নামের আযাব থেকে আশ্রয় দিন। তার কবরকে প্রশস্ত করে দিন এবং তার জন্য আলোকিত করে দিন। হে আল্লাহ! আমাদেরকে তার (মৃত্যুতে ধৈর্যধারণের) সওয়াব থেকে বঞ্চিত করবেন না এবং তার (মৃত্যুর) পর আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করবেন না।) এ দোয়ার সম্পূর্ণ অংশ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত আছে। আর যদি মৃতব্যক্তির জন্য অন্য কোন দোয়া করে তাহলে তাতেও কোন বাধা নেই। যেমন যদি এভাবে বলে যে,
اللَّهُمَّ إِنْ كَانَ مُحْسِنًا، فَزِدْ فِي إِحْسَانِهِ، وَإِنْ كَانَ مُسِيئًا، فَتَجَاوَزْ عَنْ سَيِّئَاتِهِ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَثَبِّتْهُ بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ
(হে আল্লাহ্! যদি তিনি সৎকর্মশীল হয়ে থাকেন তাহলে তার সৎকর্মে বৃদ্ধি দান করুন। আর যদি বদকর্মশীল হয়ে থাকে তাহলে তার গুনাহগুলোকে এড়িয়ে যান। হে আল্লাহ্! তাকে ক্ষমা করে দিন। তাকে অটল বাণী দিয়ে অবিচল রাখুন।) এরপর চতুর্থ তাকবীর দিবে এবং কিঞ্চিৎ অপেক্ষা করবে। তারপর ‘আস্-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ্’ বলে ডান দিকে এক সালাম ফিরিয়ে ফেলবে।
সূত্র:
মাননীয় শাইখ আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ্ বিন বায (রহঃ) এর ফতোয়া ও প্রবন্ধ সংকলন (খণ্ড-১৩, পৃষ্ঠা-১৪১)।