ডাউনলোড করুন
0 / 0

ডায়াবেটিকস রোগীর রোযা রাখার হুকুম এবং তার জন্য কখন রোযা ভাঙ্গা জায়েব

প্রশ্ন: 1319

আমি ১৪ বছর যাবৎ দ্বিতীয় পর্যায়ের ডায়াবেটিকস রোগে ভুগছি। এটি এমন ডায়াবেটিকস যার কারণে ইনসুলিন নেয়া লাগে না। আমি কোন ঔষধ খাই না। কিন্তু খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করি ও কিছু ব্যায়াম করি; যাতে করে ডায়াবেটিকস এর মাত্রা যথাযথ সীমাতে থাকে। গত রমযান মাসে আমি কিছুদিন রোযা রেখেছি। তবে সব রোযা রাখতে পারিনি; সুগার মাত্রাতিরিক্ত কমে যাওয়ার কারণে। তবে, এখন আমি অনুভব করছি যে, আলহামদু লিল্লাহ্‌ আমার অবস্থা আগের চেয়ে ভাল। কিন্তু রোযা রাখলে আমার মাথায় ব্যথ্যা হয়।

আমার রোগের অবস্থা যেটাই হোক না কেন আমার উপর রোযা রাখা কি অবধারিত?

রোযা অবস্থায় আমি কি রক্তে সুগারের পরিমাণ পরীক্ষা করতে পারব (যেহেতু আঙ্গুল থেকে রক্ত নেয়া লাগে)?

আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা

রোগীর জন্য রমযানের রোযা না-রাখা শরিয়ত অনুমোদিত; যদি রোযা রাখলে রোগীর শারীরিক ক্ষতি হয় কিংবা কষ্ট হয় কিংবা রোগীর যদি দিনের বেলায় ট্যাবলেট ও পানীয় কিংবা সেবন জাতীয় অন্য কোন কোন ঔষধ গ্রহণ করতে হয়। যেহেতু আল্লাহ্‌ তাআলা বলেছেন: "আর যদি কেউ অসুস্থ হয় কিংবা সফরে থাকে তাহলে অন্য দিনগুলোতে সে সংখ্যা পূর্ণ করবে।" এবং যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:"নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তাঁর রুখসতগুলো গ্রহণ করাকে পছন্দ করেন যেভাবে তিনি তাঁর অবাধ্যতায় লিপ্ত হওয়াকে অপছন্দ করেন।" অপর এক বর্ণনায় এসেছে যে, "যেভাবে তিনি তাঁর ফরজকৃত আমলগুলো পালন করাকে পছন্দ করেন।"[আলাবানী "ইরওয়াউল গালিল" গ্রন্থে (৫৬৪) হাদিসটিকে সহিহ বলেন]"

পরীক্ষা করার জন্য রগ থেকে যে রক্ত নেওয়া হয় সঠিক মতানুযায়ী এতে করে রোযা ভঙ্গ হবে না। তবে বেশি রক্ত নেওয়া হলে উত্তম হল রাতে নেয়া। যদি দিনের বেলায় নিতে হয় সেক্ষেত্রে সতর্কতাপূর্ণ অভিমত হল উক্ত রোযাটির কাযা পালন করা; যেহেতু রক্ত নেয়া শিংগা লাগানোর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।"[সমাপ্ত]

শাইখ বিন বাযের ফতোয়া ফাতাওয়া ইসলামিয়্যা (খণ্ড-২; পৃষ্ঠা-১৩৯):

"অসুস্থ ব্যক্তির অবস্থা:

১। রোযা রাখার দ্বারা স্বাস্থ্যের উপর কোন প্রভাব না পড়া। যেমন- হালকা সর্দি, হালকা মাথা ব্যাথ্যা, দাঁতের ব্যাথ্যা, এ ধরণের অন্যান্য রোগ। এমন রোগীর জন্য রোযা না-রাখা জায়েয হবে না। যদিও কোন কোন আলেম বলেন: "আর যে ব্যক্তি অসুস্থ থাকে"[সূরা বাক্বারার, ১৮৫ নং আয়াতের ভিত্তিতে তার জন্যেও জায়েয হবে। তবে আমরা বলব: এ বিধানটির একটি হেতু উল্লেখ করা হয়েছে। সেটা হল: রোযা না-রাখাটা তার জন্য সহজতর হওয়া। আর যদি রোযা রাখলে সেটা তার উপর কোন প্রভাব না ফেলে সেক্ষেত্রে তার জন্য রোযা না-রাখাটা জায়েয হবে না। বরং তখন রোযা রাখা তার উপর ওয়াজিব।

২। যদি রোযা রাখা তার উপর কষ্টকর হয়; কিন্তু তার জন্য ক্ষতিকর না হয়। এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে রোযা রাখা মাকরুহ; রোযা না-রাখা সুন্নত।

৩। যদি রোযা রাখা তার জন্য কষ্টকর ও ক্ষতিকর হয়; যেমন যে ব্যক্তি কিডনির রোগে আক্রান্ত কিংবা ডায়াবেটিকস রোগ আক্রান্ত কিংবা এ ধরণের অন্য কোন রোগে আক্রান্ত। এমন ব্যক্তির জন্য রোযা রাখা হারাম।

"এর মাধ্যমে আমরা কিছু ইজতিহাদকারী ও অনেক রোগীদের ভুল জানতে পারি যাদের রোযা রাখতে কষ্ট হয়; হয়তোবা শারীরিক ক্ষতিও হয় কিন্তু তারা রোযা ভাঙ্গতে অস্বীকৃতি জানান। আমরা বলব: উনারা ভুল করছেন; যেহেতু তারা আল্লাহ্‌র দেয়া বদান্যতাকে গ্রহণ করেননি এবং তাঁর দেয়া অবকাশকে গ্রহণ করেননি এবং নিজেদের ক্ষতি করেছেন। অথচ আল্লাহ্‌ তাআলা বলছেন: "তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না।"[সূরা নিসা, আয়াত: ২৯]

[আশ-শারহুল মুমতি (খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৫২-৩৫৪)]

সূত্র

শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android