প্রশ্ন: কিছু কিছু সুদানি হাজি জেদ্দা থেকে সরাসরি মদিনায় চলে যান। এরপর আবইয়ার আলী থেকে ইহরাম বাঁধেন। সেসব হাজিদের মদিনাবাসীর মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধা কি সহিহ?
যে ব্যক্তি তার মীকাত অতিক্রমকালে সেখান থেকে ইহরাম বাঁধেনি; পরবর্তীতে মদিনার মীকাত থেকে ইহরাম বেঁধেছে
প্রশ্ন: 135298
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
আলহামদুলিল্লাহ।
এক:
সুদানের অধিবাসীদের মীকাতের ব্যাপারে ব্যাপক আলোচনা আছে। ইতিপূর্বে নং 41978 প্রশ্নোত্তরে তা উল্লেখ করা হয়েছে।
দুই:
সুদানের অধিবাসীগণ যখন জেদ্দায় পৌঁছবেন তাদের মীকাত হবে জুহফা কিংবা ইয়ালামলামের সমান্তরাল কোন স্থান কিংবা জেদ্দা; পূর্বোক্ত প্রশ্নোত্তরের বিস্তারিত আলোচনা থেকে এটাই জানা যায়। অতএব, তারা তাদের মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধেনি। তারা মদিনায় এসে আবইয়ার আলী থেকে ইহরাম বেঁধেছে। তদুপরি তাদের ইহরাম সহিহ। কারণ অগ্রগণ্য মতানুযায়ী যে ব্যক্তি দুইটি মীকাত অতিক্রম করে; তার জন্য পরবর্তী মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধা জায়েয আছে। এটি হানাফী মাযহাবের অভিমত।
কানযুদ দাকায়েক গ্রন্থে বলেছেন: “যে মদিনাবাসী যুলহুলাইফা থেকে ইহরাম না বেঁধে জুহফা থেকে ইহরাম বেঁধেছে তাতে কোন অসুবিধা নেই। অনুরূপ বিধান সে ব্যক্তির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য যে ব্যক্তি মদিনাবাসী নয়; কিন্তু মদিনার পথ দিয়ে গমনকারী।”
আবু হানিফা থেকে বর্ণিত আছে যে, তার উপর দম (পশু জবাই করা) ওয়াজিব হবে। অনুরূপভাবে দ্বিতীয় মীকাতটি যদি মক্কার সন্নিকটে হয় সেক্ষেত্রেও। তবে প্রথম অভিমতটি অগ্রগণ্য। আয়েশা (রাঃ) হজ্জের জন্য যুলহুলাইফা থেকে ইহরাম করতেন এবং উমরার জন্য জুহফা থেকে ইহরাম করতেন। যেন তিনি হজ্জের অতিরিক্ত ফজিলতের কারণে অতিরিক্ত সওয়াব পেতে সেটা করতেন। যদি জুহফা তার মীকাত না হত তাহলে উমরার ইহরাম সেখান থেকে বাঁধা জায়েয হত না। কারণ মীকাতের বাইরে অবস্থানকারীদের জন্য হজ্জ কিংবা উমরার ইহরামের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।[তাবয়িনুল হাকায়েক শারহু কানযিদ দাকায়েক (২/৭)]
স্থায়ী কমিটির আলেমগণকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল (১১/১৫৫):
জনৈক ব্যক্তি হজ্জ করতে চান; কিন্তু মক্কাতে তার একটা প্রয়োজন আছে এবং মক্কার পর মদিনাতেও তার একটা প্রয়োজন আছে। সে মীকাত পার হয়ে এসেছে; কিন্তু ইহরাম বাঁধেনি। মক্কায় প্রবেশ করেছে; এরপর মদিনার উদ্দেশ্যে সফর করেছে। মদিনার মীকাত থেকে হজ্জের ইহরাম বেঁধেছে। তার এ আমলের হুকুম কি?
তাঁরা জবাবে বলেন: যেহেতু সে ব্যক্তি মদিনার মীকাতে গিয়ে সেখান থেকে ইহরাম বেঁধে এসেছে সুতরাং (পূর্বে) ইহরাম ছাড়া মক্কায় প্রবেশের কারণে তার উপর কোন কিছু অবধারিত হবে না। যদিও তার জন্য উত্তম ছিল তার প্রথম মীকাত থেকে ইহরাম বেঁধে মক্কায় প্রবেশ করা”। সমাপ্ত
ফতোয়া ও গবেষণা বিষয়ক স্থায়ী কমিটি
আব্দুল্লাহ বিন গাদইয়ান; আব্দুর রাজ্জাক আফিফি; আব্দুল আযিয বিন বায।
শাইখ ইবনে উছাইমীনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল:
জনৈক ব্যক্তি জেদ্দা দিয়ে এসেছে কিন্তু ইহরাম বেঁধে আসেনি। প্রথমে মদিনায় গিয়ে মসজিদে নববী যিয়ারত করেছেন। তারপর মদিনার মীকাত থেকে ইহরাম বেঁধেছে। তার আমলটা কি সহহি হল?
উত্তরে তিনি বলেন: এতে কোন অসুবিধা নেই। কোন ব্যক্তি যদি দেশ থেকে প্রথমে মদিনায় যাওয়ার নিয়ত করে আসেন। জেদ্দায় নেমে জেদ্দা থেকে মদিনার উদ্দেশ্য সফর করেন। এরপর মদিনাবাসীর মীকাত থেকে ইহরাম বেঁধে আসেন। তাতে কোন অসুবিধা নেই।[লিকাউল বাব আল-মাফতুহ থেকে সমাপ্ত (নং ১২১)]
আল্লাহই ভাল জানেন।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব