ডাউনলোড করুন
0 / 0
3503719/05/2001

ওয়াকফের বিধি-বিধান

প্রশ্ন: 13720

ওয়াকফের মাসয়ালায় ইসলামের বিধান কি?

আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা

ওয়াক্ফ মানে মূল সম্পত্তি আবদ্ধ রেখে এর উপকার আল্লাহ্‌র রাস্তায় দান করা। এখানে মূল দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে যে সম্পত্তি মূলকে আবদ্ধ রেখে এর দ্বারা উপকৃত হওয়া যায়; যেমন- ঘরবাড়ি, দোকানপাট, ক্ষেতখামার ইত্যাদি।

এখানে উপকার দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে- সে মূল সম্পত্তি থেকে লব্ধ আয়; যেমন- ফল, ভাড়া, ঘরে বসবাস করা ইত্যাদি।

ইসলামে ওয়াকফের বিধান হচ্ছে এটি একটি নেকীর কাজ ও মুস্তাহাব। দলিল হচ্ছে সহিহ হাদিস। উমর (রাঃ) বলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্‌! আমি খায়বারে এমন একটি সম্পদ পেয়েছি যে সম্পদের চেয়ে দামী কোন সম্পদ আমি কখনও পাইনি। আপনি এ সম্পদের বিষয়ে আমাকে কী নির্দেশ দেন? তিনি বলেন: "যদি আপনি মূল সম্পত্তিকে আবদ্ধ করে (ওয়াকফ করে) সদকা করে দিন। কিন্তু মূলটা বিক্রি করা যাবে না, হেবা করা যাবে না এবং মিরাছ হিসেবে মালিক হওয়া যাবে না।" তখন উমর (রাঃ) এ সম্পদ গরীব-মিসকীন, আত্মীয়-স্বজন, দাসমুক্তি, আল্লাহ্‌র রাস্তা, পথিক ও মেহমানের জন্য সদকা করে দেন।[সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম]

সহিহ মুসলিম এসেছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: "যখন কোন বনী আদম মারা যায় তখন তার আমল স্থগিত হয়ে যায়; কেবল তিনটি আমল ছাড়া: সদকায়ে জারিয়া কিংবা এমন ইলম; যে ইলম দিয়ে তার মৃত্যুর পরেও উপকৃত হওয়া যায় কিংবা নেক সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে।" জাবের (রাঃ) বলেন: "রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীদের মধ্যে যারই সক্ষমতা ছিল তিনি ওয়াক্ফ করে গেছেন।" কুরতুবী বলেন: "বিশেষতঃ সেতু ও মসজিদ ওয়াক্ফ করার ব্যাপারে আলেমদের মাঝে কোন মতভেদ নেই; অন্য ক্ষেত্রে মতভেদ আছে।"

ওয়াক্ফকারীর ক্ষেত্রে শর্ত হল: প্রাপ্তবয়স্ক, স্বাধীন ও বুঝদার হওয়ার মাধ্যমে লেনদেন করার উপযুক্ত হওয়া। কারণ নাবালগ, নির্বোধ ও ক্রীতদাস কর্তৃক সম্পাদিত ওয়াকফ সহিহ নয়।

ওয়াক্ফ দুটো বিষয়ের মাধ্যমে সংঘটিত হয়:

১। ওয়াকফ করার নির্দেশবহ কথার মাধ্যমে; যেমন এভাবে বলা যে, আমি এ স্থানটি ওয়াকফ করলাম কিংবা এ স্থানকে মসজিদ বানালাম।

২। মানুষের প্রচলনে ওয়াকফ করা বুঝায় এমন কোন কর্মের মাধ্যমে; যেমন- কেউ তার ঘরকে মসজিদ বানাল এবং মানুষকে সে স্থানে নামায আদায় করার সাধারণ অনুমতি দিল কিংবা তার জমিকে কবরস্থান বানাল এবং মানুষকে সে কবরস্থানে দাফন করার অনুমতি দিল।

ওয়াকফ নির্দেশক শব্দাবলী দুই প্রকার:

প্রথম প্রকার: প্রত্যক্ষ অর্থজ্ঞাপক শব্দাবলী; যেমন এভাবে বলা যে, وقفتُ (আমি ওয়াকফ করলাম) حبستُ (আমি আবদ্ধ করলাম), سبلتُ (আমি আল্লাহ্‌র রাস্তায় দিয়ে দিলাম) ইত্যাদি। এ শব্দগুলোকে প্রত্যক্ষ শব্দ বলার কারণ হলো যেহেতু এ শব্দগুলো (আরবীতে) ওয়াকফ ছাড়া অন্য কোন অর্থ বুঝায় না। তাই যখনই এমন কোন শব্দযোগে বলা হবে তখন সেটি ওয়াকফ হিসেবে সাব্যস্ত হবে; এর সাথে অন্য কোন কথা যুক্ত করার দরকার হবে না।

দ্বিতীয় প্রকার: পরোক্ষ অর্থজ্ঞাপক শব্দাবলী: যেমন এভাবে বলা যে, تصدقتُ (আমি দান করলাম), حرمتُ (আমি এর সুবিধা গ্রহণ থেকে নিজেকে নিষিদ্ধ করলাম), أبدت (আমি এটি চিরতরে আল্লাহ্‌র রাস্তায় দিলাম) ইত্যাদি পরোক্ষ অর্থজ্ঞাপক শব্দ। এ শব্দগুলোকে পরোক্ষ শব্দ বলার কারণ হলো যেহেতু এ শব্দগুলো দ্বারা ওয়াকফ করা যেমন বুঝায় তেমনি অন্য অর্থও বুঝায়। তাই কেউ যদি এ ধরণের কোন একটি শব্দ উচ্চারণ করে তখন শর্ত হচ্ছে এর সাথে ওয়াকফের নিয়ত করা কিংবা এর সাথে কোন একটি প্রত্যক্ষ শব্দ কিংবা অবশিষ্ট পরোক্ষ শব্দাবলীর কোন একটি উচ্চারণ করা।

প্রত্যক্ষ শব্দাবলী যোগ করে বলার পদ্ধতি হচ্ছে এভাবে: تصدقت بكذا صدقة موقوفة أو محبسة أو مسبلة أو محرمة أو مؤبدة (আমি অমুক সম্পদ দান করলাম ওয়াকফ হিসেবে কিংবা আবদ্ধকরণ হিসেবে কিংবা আল্লাহ্‌র রাস্তায় দিয়ে দেওয়া হিসেবে কিংবা নিজের জন্য এর উপযোগ নিষিদ্ধকরণ হিসেবে কিংবা স্থায়ী দান হিসেবে)। আর ওয়াকফের পরোক্ষ অর্থজ্ঞাপক শব্দ যোগ করে বলার পদ্ধতি হচ্ছে এভাবে বলা: تصدقتُ بكذا صدقة لا تباع ولا تورث (আমি অমুক সম্পদ এভাবে দান করলাম যে, এটি বিক্রি করা যাবে না, ওয়ারিশ হওয়া যাবে না)।

ওয়াকফ সহিহ হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে:

১। ওয়াকফকারী লেনদেন করার উপযুক্ত হওয়া; যেমনটি পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে।

২। ওয়াকফকৃত সম্পত্তির মূলকে অটুট রেখে এর থেকে অব্যাহতভাবে উপকৃত হওয়া যায় এমন হওয়া। যে জিনিসের মূল অটুট থাকে না এমন জিনিস ওয়াকফ করা যায় না; যেমন- খাবার।

৩। ওয়াকফকৃত সম্পত্তি নির্দিষ্ট হওয়া। তাই কোন অনির্দিষ্ট সম্পত্তি ওয়াকফ করা সহিহ নয়। যেমন- কেউ যদি বলে যে, আমি আমার কোন একটি দাসকে কিংবা আমার কোন একটি বাড়ীকে ওয়াকফ করলাম।

৪। ওয়াকফ নেকীর কাজে হতে হবে; যেমন- মসজিদ, সেতু, মিসকীন, পানির উৎস, ইলমী কিতাবপত্র, আত্মীয়স্বজন। কেননা ওয়াকফ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ্‌র নৈকট্য হাছিল। নেকী নয় এমন খাতে ওয়াকফ করা সহিহ নয়। যেমন- কাফেরদের উপাসনালয়ের জন্য ওয়াকফ করা, নাস্তিক্যবাদী পুস্তকের জন্য ওয়াকফ করা, মাজারে বাতি জ্বালানো কিংবা সুগন্ধি দেওয়ার জন্য ওয়াকফ করা কিংবা মাজারের রক্ষকদের জন্য ওয়াকফ করা। কেননা এগুলো হচ্ছে গুনাহের কাজ, শিরক ও কুফরের কাজে সহযোগিতা করা।

৫। নির্দিষ্ট কারো জন্য ওয়াকফ করলে সে ওয়াকফ সঠিক হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে ঐ ওয়াকফ সম্পত্তির উপর সেই নির্দিষ্ট ব্যক্তির মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। যেহেতু কারো জন্য ওয়াকফ করা মানে তাকে মালিক বানিয়ে দেওয়া। তাই যে ব্যক্তি মালিক হতে পারে না তার জন্য ওয়াকফ করা সহিহ নয়; যেমন মৃত ব্যক্তি বা পশু।

৬। ওয়াকফ সহিহ হওয়ার জন্য অবিলম্বে কার্যকরযোগ্য হওয়া শর্ত। তাই নির্দিষ্ট সময়কেন্দ্রিক ওয়াকফ কিংবা বিশেষ কিছুর সাথে সম্পৃক্ত করে ওয়াকফ করা সহিহ নয়। তবে কেউ যদি তার মৃত্যুর সাথে সম্পৃক্ত করে ওয়াকফ করে তাহলে সহিহ হবে। যেমন কেউ বলল যে, আমি যদি মারা যাই তাহলে আমার ঘরটি গরীবদের জন্য ওয়াকফ। যেহেতু আবু দাউদ বর্ণনা করেছেন যে, "উমর (রাঃ) ওসিয়ত করে গেছেন যদি আমার কিছু হয়ে যায় তাহলে 'সামগ' (তার একটি জমি) সদকা।" এ বিষয়টি সবাই জেনেছে। কিন্তু কেউ এর বিরোধিতা করেননি। সুতরাং এটি ইজমা (সর্বসম্মত অভিমত)। মৃত্যুর সাথে সম্পৃক্ত ওয়াকফ সম্পদের এক তৃতীয়াংশ দিয়ে করা যাবে। কারণ তা ওসিয়তের পর্যায়ভুক্ত।

ওয়াকফের অন্যান্য বিধানের মধ্যে রয়েছে:

ওয়াকফকারীর শর্ত মোতাবেক কাজ করা; যদি সেটা শরিয়ত বিরোধী না হয়। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "মুসলমানেরা তাদের শর্তাবলির উপর অটল থাকবে; শুধু এমন কোন শর্ত ছাড়া, যে শর্ত কোন হালালকে হারাম করে কিংবা কোন হারামকে হালাল করে।"  কেননা উমর (রাঃ) ওয়াকফ করেছেন এবং সে ওয়াকফের মধ্যে শর্ত করেছেন। যদি শর্ত অনুসরণ করা ওয়াজিব না হয় তাহলে এমন শর্ত করার তো কোন অর্থ হয় না। তাই ওয়াকফকারী যদি ওয়াকফ সম্পত্তির অংশ বিশেষের ক্ষেত্রে শর্ত করেন কিংবা কোন শ্রেণীর হকদারকে অপর শ্রেণীর হকদারদের উপর অগ্রাধিকার দেওয়ার শর্ত করেন কিংবা সকল হকদারের ক্ষেত্রে শর্ত করেন কিংবা বিশেষ কোন বৈশিষ্ট্যদারী হকদার হওয়ার শর্ত করেন কিংবা বিশেষ কোন বৈশিষ্ট্য না থাকার শর্ত করেন কিংবা ওয়াকফ সম্পত্তি তত্ত্বাবধান করার শর্ত করেন কিংবা অন্য কোন শর্ত করেন তাহলে উক্ত শর্ত কার্যকর করা আবশ্যক; যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী না হয়।

যদি ওয়াকফকারী কোন শর্ত না করেন সেক্ষেত্রে হকদার হিসেবে গরীব-ধনী, নর-নারী সবাই সমান। যদি ওয়াকফকারী কোন মুতাওয়াল্লি (তত্ত্বাবধায়ক) নিযুক্ত না করেন কিংবা যাকে নিযুক্ত করেছেন তিনি মারা যান তাহলে যার জন্য ওয়াকফ করা হয়েছে তিনি যদি সুনির্দিষ্ট কোন ব্যক্তি হন তিনিই ওয়াকফের তত্ত্বাবধান করবেন। আর যদি মসজিদের মত কোন প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়াকফ করা হয় কিংবা এমন সংখ্যক মানুষের জন্য ওয়াকফ করা হয় যাদের সংখ্যা অগণিত, যেমন গরীব-মিসকীন; সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপ্রধান এই ওয়াকফ সম্পত্তি তত্ত্বাবধান করার দায়িত্ব পালন করবেন কিংবা তার কোন প্রতিনিধিকে দায়িত্ব দিবেন।

মুতাওয়াল্লি বা তত্ত্বাবধায়কের উপর ওয়াজিব আল্লাহ্‌কে ভয় করা এবং যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করা। কেননা এটি আমনত; যার দায়িত্ব তার উপর ন্যস্ত করা হয়েছে।

যদি কেউ তার সন্তানদের জন্য ওয়াকফ করে যান তাহলে অধিকারের ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ে সবাই সমান। যেহেতু তিনি তাদের সকলকে অংশীদার বানিয়েছেন। কোন জিনিস অংশীদারিত্বভিত্তিক হওয়ার অর্থ হচ্ছে এতে সকলের অধিকার সমান। যেমনিভাবে তাদের অনুকূলে যদি কোন কিছু অনুমোদন করা হয় তাহলে তাদের সকলের ভাগ সমান। তদ্রূপ তাদের জন্য কোন কিছু ওয়াকফ করা হলে সেটাও এমন। ওয়াকফকারীর ঔরশজাত সন্তানদের পর এটি তার ছেলেদের সন্তানদের মালিকানায় স্থানান্তরিত হবে; মেয়েদের সন্তানদের জন্য নয়। কেননা মেয়েদের সন্তানরা হচ্ছে অন্য লোকের সন্তান; তাদেরকে তাদের পিতাদের দিকে সম্বোধিত করা হয়। এবং যেহেতু তারা আল্লাহ্‌ তাআলার এ বাণী "আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের (উত্তরাধিকারের) ব্যাপারে আদেশ দিচ্ছেন"-এর মধ্যেও অন্তর্ভুক্ত নয়। আলেমদের মধ্যে কারো কারো অভিমত হচ্ছে "সন্তান" শব্দের মধ্যে তারাও অন্তর্ভুক্ত হবে। কেননা মেয়েরা ওয়াকফকারীর সন্তান। অতএব, মেয়েদের সন্তানেরা প্রকৃতপক্ষে তার সন্তানদের সন্তান। আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

কেউ যদি বলেন: "আমার ছেলেদের জন্য ওয়াকফকৃত" কিংবা "অমুকের ছেলেদের জন্য ওয়াকফকৃত" তাহলে ওয়াকফকৃত সম্পত্তি শুধু পুরুষ ছেলেদের জন্য খাস হবে। কারণ "ছেলে" শব্দটি শুধু তাদের জন্যই গঠন করা হয়েছে। আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: "নাকি তাঁর জন্য মেয়ে আর তোমাদের জন্য ছেলে?" তবে সম্পত্তিটি যদি গোত্র হিসেবে তাদের জন্য ওয়াকফ করা হয়; যেমন বনু হাশেম ও বনু তামীমের জন্য সেক্ষেত্রে নারীরাও এর মধ্যে প্রবেশ করবে। কেননা "গোত্র" অভিধা নর-নারী সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে।

কিন্তু যদি সীমিত সংখ্যক কোন জনসমষ্টির জন্য ওয়াকফ করা হয় তখন তাদের সকলকে সমান অংশ দেওয়া আবশ্যক। কিন্তু যদি তাদের সংখ্যা অগণিত হয়; যেমন- বনু হাশেম ও বনু তামীম; তখন সকলকে অংশ দেওয়া আবশ্যক নয়। কেননা সেটা সম্ভবপর নয়। তাই তাদের মধ্য থেকে কিছু ব্যক্তিকে অংশ দেওয়া এবং কিছু অংশীদারকে অপর অংশীদারদের ওপর অগ্রাধিকার দেওয়া জায়েয।

ওয়াকফ— এমন চুক্তিসমূহের অন্তর্ভুক্ত যা কেবল কথার মাধ্যমে অনিবার্য হয়ে যায়। তাই এটি বাতিল করা জায়েয নয়। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "এর মূল সম্পত্তি বিক্রি করা যাবে না, হেবা করা যাবে না এবং উত্তরাধিকার হিসেবে লাভ করা যাবে না"। ইমাম তিরমিযি বলেন: "এ হাদিসের উপর আলেমগণ আমল করছেন।"    

তাই ওয়াকফ বাতিল করা যাবে না। কেননা সেটি চিরস্থায়ী; বিক্রয়যোগ্য ও স্থানান্তরযোগ্য নয়। তবে যদি ওয়াকফ সম্পত্তির উপযোগ একেবারেই নিঃশেষ হয়ে যায়; যেমন ঘর হলে সেটা ধ্বসে পড়ল এবং ওয়াকফের আয় থেকে এ ঘর মেরামত করা না যায় কিংবা চাষের জমি হলে সেটা বিরান হয়ে যায়, অনাবাদী হয়ে যায়। সাধারণ উপকরণ দিয়ে সেটাকে আবাদ করা না যায় এবং এটাকে আবাদ করার মত ওয়াকফের আয় না থাকে; এমন ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়ে এর মূল্য দিয়ে একই ধরণের ওয়াকফ করা হবে। যেহেতু ওয়াকফকারীর উদ্দেশ্যের এটাই সবচেয়ে নিকটবর্তী। যদি পুরোপুরি একই ধরণের ওয়াকফ করা সম্ভবপর না হয় তাহলে সম ধরণের ছোট পর্যায়ের ওয়াকফ করা হবে। খরিদ করার সাথে সাথে প্রতিস্থাপিত সম্পত্তি ওয়াকফ হিসেবে গণ্য হবে।

আর যদি ওয়াকফ সম্পত্তিটি মসজিদ হয় এবং ঐ এলাকা বিরান হয়ে পড়ায় মসজিদটি পরিত্যক্ত হয়ে যায় তাহলে সে মসজিদটি বিক্রি করে দিয়ে এর মূল্য অন্য কোন মসজিদের কাজে লাগানো হবে। যদি কোন মসজিদের আয় মসজিদের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি হয় তখন অতিরিক্ত আয় অন্য মসজিদের কাজে লাগানো জায়েয। যেহেতু অতিরিক্ত আয় একই ধরণের ওয়াকফের কাজে লাগানো হল। মসজিদের ওয়াকফ সম্পত্তির অতিরিক্ত আয় গরীবদের মাঝে বণ্টন করাও জায়েয।

আর যদি নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির জন্য ওয়াকফ করা হয়; যেমন কেউ যদি এভাবে বলে যে: 'এটি যায়েদের জন্য ওয়াকফকৃত প্রতি বছর এর থেকে একশ তাকে দেওয়া হবে।' যদি ওয়াকফের আয় এর চেয়ে বেশি হয় তাহলে অতিরিক্ত আয় সঞ্চয় করা হবে। শাইখ তাকী উদ্দীন (রহঃ) বলেন: যদি জানা যায় যে, ওয়াকফের আয় সবসময় বেশি হবে তাহলে সেটা বণ্টন করা আবশ্যক। কেননা সেটা জমিয়ে রাখা মানে সেটাকে নষ্ট করা।

আর যদি কোন মসজিদের জন্য ওয়াকফ করা হয়; কিন্তু মসজিদটি নষ্ট হয়ে যায় এবং ওয়াকফ থেকে সেটা পুনর্নির্মাণ করা সম্ভবপর না হয় তাহলে সেটা অনুরূপ কোন মসজিদের জন্য ব্যয় করা হবে।

সূত্র

শাইখ সালেহ আল-ফাওযান লিখিত "আল-মুলাখ্‌খাস আল-ফিকহি" (পৃষ্ঠা-১৫৮) থেকে সংকলিত

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android
at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android