প্রশ্ন :
আমি ছুটি কাটাচ্ছিলাম। ছুটিকালীন সময়ে উমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে পবিত্র মক্কা নগরী সফর করি। মক্কা থেকে মদিনা মুনাওয়ারাতে যাই। সেখানে আমি রমজানের দিনের বেলায় আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছি; কিন্তু কোন বীর্যপাত হয়নি। প্রশ্ন হলো- এজন্য আমার উপর কি কোন কিছু আবশ্যক হবে? যদি আমার উপর কিছু আবশ্যক হয়ে থাকে আমার জানা মতে সেটা এই ক্রমধারায় আবশ্যক হয়- একজন দাসমুক্তি; আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় এটা পালন করা আমার পক্ষে সম্ভবপর নয়। অথবা একাধারে দুই মাস সিয়াম পালন; আমার ফিল্ড ওয়ার্কধর্মী চাকুরী ও গ্রীষ্মের তীব্র গরমের কারণে এটা পালন করাও আমার জন্য কঠিন। তবে কি আমি ৬০ জন মিসকীনকে খাদ্য খাওয়াবো? আমার স্ত্রীর উপরও কি একই জরিমানা আবশ্যক হবে, যদি সে সহবাসের প্রস্তাবে রাজি থাকে? এখানে উল্লেখ্য যে, আমি রিয়াদের অধিবাসী। কিন্তু মদিনাতে আমার একটি বাড়ি আছে। ছুটি কাটাতে আমি মদিনাতে যাই।
মদিনাতে তার যে বাড়িটি রয়েছে তিনি সফরের দূরত্ব ভ্রমণ করে সেখানে পৌঁছেছেন এবং রমজানে দিনের বেলা বীর্যপাত না করে স্ত্রী সহবাস করেছেন
প্রশ্ন: 148163
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
সমস্তপ্রশংসাআল্লাহরজন্য।
নিজএলাকায় অবস্থানরত রোযাপালনকারী (মুকীম) রমজানেদিনের বেলাসহবাস করলেতার উপর কঠিনকাফ্ফারাআবশ্যক হয়। আর তা হল একজনদাস মুক্তকরা।কেউযদি তা নাপারেনতবে দুই মাসএকাধারে সিয়ামপালন। কেউযদি তা নাপারেনতবে ৬০ জনমিসকীনকে খাদ্যখাওয়ানোএবং সেই সাথেতার উপর তওবাকরা এবংসেই দিনের কাযা করাওআবশ্যক।
সেইস্ত্রীরক্ষেত্রেওএকই হুকুমপ্রযোজ্য; যদি তিনিসহবাসেরপ্রস্তাবেসম্মতি দিয়েথাকেন। এক্ষেত্রেবীর্যপাতনা হওয়ারকারণে হুকুমেরকোন পার্থক্যহবে না। কারণসঙ্গমতথাএকটি অঙ্গ অপরএকটি অঙ্গেরভিতরে প্রবেশকরানো সংঘটিতহয়েছে। এটাই রোযার কাফ্ফারাফরজ করে দেয়।
আর যদিতারা উভয়েসফররতঅবস্থায় থাকেন তবে তাদেরকোন গুনাহ হবেনা।তাদেরকেকোন কাফ্ফারাদিতেহবে না এবং দিনেরবাকি অংশমুফাত্তিরাত(রোযা ভঙ্গ কারীবিষয়সমূহ)থেকে বিরতথাকতে হবে না।বরংতাদের উভয়কেশুধু সেইদিনের রোযা কাযা করতেহবে।কারণ (সফররতঅবস্থায়)তাদেরউভয়ের জন্যরোযা পালনআবশ্যক নয়।
আপনিযদি রিয়াদের অধিবাসীহয়ে থাকেন এবংমদিনাতেআপনার আরেকটিবাড়ি থাকেযেখানে আপনিছুটিরদিনগুলোতেযান, তবে মদিনাতে গেলেওআপনি নিজএলাকায়বসবাসকারী ‘মুক্বীম’ হিসেবেগণ্য হবেন। আপনারউপর সালাত ওরোযা সম্পন্নকরা আবশ্যক হবে,সহবাস বা অন্যকোন মাধ্যমে রোযাভঙ্গ করাহারাম হবে এবংসহবাসেরকারণে আপনারউপর কাফ্ফারাওয়াজিব হবে।আর যদি আপনিমক্কায় সফর করেন তবেআপনি নিজএলাকায়বসবাসকারী ‘মুক্বীম’ হিসেবেগণ্যহবেন না;যদি আপনিসেখানে চারদিনের বেশিথাকার নিয়্যতনা করেন।যদি এর কমসময় থাকারনিয়্যত করেনতবে আপনার ক্ষেত্রেমুসাফিরেরহুকুমপ্রযোজ্য হবেঅর্থাৎ আপনি মুসাফিরহিসেবে গণ্যহবেন।
শাইখইবনে উছাইমীন(রাহিমাহুল্লাহ)কে প্রশ্ন করাহয়েছিল:“একজনলোক এক দেশ থেকেঅন্য দেশে সফরকরেছে এবং যেদেশে সফর করেছেসেখানে তারএকটি বাড়িআছে। সে কীসেখানে পুরোসালাত আদায়করবে,নাকি ক্বসর(সংক্ষিপ্ত)করবে?
শাইখ: কিন্তুতিনি কি সেইবাড়িতে দুই,তিন মাসঅবস্থান করেন?আর অন্যবাড়িতেও দুই,তিন মাসঅবস্থান করেন?নাকি কেমন?
প্রশ্নকারী: তিনিগ্রীষ্মেরছুটিতেসেখানেঅবস্থান করেন।
শাইখ: তিনিকিগ্রীষ্মেরমৌসুমেসেখানে যান?
প্রশ্নকারী: হ্যাঁ।
শাইখ: তবে তিনিক্বসর (সালাতসংক্ষিপ্ত)করবেননা।কারণপ্রকৃতপক্ষেতার দুটি বাড়িআছে।”সমাপ্ত [লিকাউলবাবিল মাফতুহ(২৫/১৬২)]
এরউপর ভিত্তিকরে বলাযায়, আপনিযদিমদিনাতেপ্রবেশের আগেরোযা ভঙ্গ করেথাকেন তবেআপনি যাকরেছেন তাতেকোন সমস্যানেই।সেক্ষেত্রেআপনাকে শুধুসেই দিনের রোযাটি কাযাকরতে হবে।কারণ আপনিসফরের কারণেরোযা ভঙ্গ করেছেন।আর আপনিযদি মদিনাতেপ্রবেশের পর রোযাভঙ্গ করেথাকেন তবেআপনার উপর কাফ্ফারাওয়াজিব হবে। আপনারজন্য উপদেশ হলো-আপনি শীতেরমৌসুমে অথবানাতিশীতোষ্ণ মৌসুমেদুই মাসএকাধারেসিয়াম পালন করারচেষ্টা করবেন; যখন দিনেরদৈর্ঘ্য ছোটহয় এবং কষ্টকম হয়। অথবা অফিসথেকে প্রাপ্তবাৎসরিকছুটিরদিনগুলোতে অথবা এজাতীয় অন্যকোনসুযোগকে কাজে লাগিয়েআপনি রোযারাখার চেষ্টাকরবেনযাতে আপনারউপর যা ওয়াজিব হয়েছে তা পালন করতেপারেন।
আর যদি সত্যিসত্যিই আপনিসিয়াম পালনে অপারগ হয়েথাকেন,তবে আপনারজন্য শুধু তখন ৬০জন মিসকীনখাওয়ানো জায়েযহবে। এক্ষেত্রেআপনি ৬০ জনকেএকসাথেও খাওয়াতে পারেন।অথবাবিভিন্নসময়েখাওয়ানোরমাধ্যমে ৬০জনের সংখ্যা পূর্ণকরতেপারেন।
আপনারস্ত্রীর উপরওসিয়াম পালনআবশ্যক।আরযদি তিনিতা না পারেন তবে ৬০জন মিসকীনকেখাদ্যখাওয়াবেন।আরো দেখুন(106532) নংপ্রশ্নেরউত্তর।
আল্লাহইসবচেয়ে ভালজানেন।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব