যদি স্ত্রী তৃতীয় সন্তান নিতে চায় এবং স্বামী বলে যে, তুমি যা চাও সেটা কর। কিন্তু স্ত্রী বুঝতে পারছে যে, স্বামী সন্তান নিতে চায়; কিন্তু সমস্যা হলো স্ত্রীর মা এ বিষয়টাকে একেবারে প্রত্যাখ্যান করে এবং স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করে; হতে পারে এ কারণে সম্পর্কও ছিন্ন করবে। আপনারা এ স্ত্রীকে কি উপদেশ দিবেন? সেকি তার নিজের ইচ্ছা বাস্তবায়ন করে সন্তান নিবে; নাকি সন্তান না নিয়ে তার মায়ের আনুগত্য করবে?
পিতামাতা সন্তান না-নেয়ার নির্দেশ দিলে তাদের সে নির্দেশ মানা ওয়াজিব নয়
السؤال: 166428
الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وآله وبعد.
এক:
ইসলামী শরিয়া বংশধর বাড়ানোর ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করে। যেহেতু বংশধর বাড়ানোর মধ্যে উম্মাহর শক্তি ও দাপট নিহিত এবং এর মাধ্যমে কিয়ামতের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গৌরব করবেন। ইমাম আবু দাউদ বর্ণনা করেন (২০৫০) মা’কিল বিন ইয়াসার (রাঃ) থেকে; তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমরা প্রেমময়ী ও অধিক সন্তানপ্রবসকারিনী নারী বিয়ে কর। কেননা আমি তোমাদের আধিক্য নিয়ে গৌরব করব।”[আলবানী ‘ইরওয়াউল গালিল’ গ্রন্থে (১৭৮৪) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
শাইখ ইবনে উছাইমীন (রহঃ) বলেন:
মুসলমানদের উচিত সাধ্যানুযায়ী সন্তান বাড়ানো। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তাঁর এ বাণীতে: “তোমরা প্রেমময়ী ও অধিক সন্তানপ্রবসকারিনী নারী বিয়ে কর। কেননা আমি তোমাদের আধিক্য নিয়ে গৌরব করব।” এবং কেননা সন্তানের সংখ্যাধিক্য মানে উম্মতের সংখ্যাধিক্য। উম্মতের সংখ্যাধিক্য উম্মতের ক্ষমতা। এজন্য আল্লাহ্ তাআলা বনী ইসরাঈলের প্রতি তাঁর অনুকম্পাকে স্মরণ করিয়ে দিতে গিয়ে বলেন: “এবং তোমাদেরকে সংখ্যাগরিষ্ঠ করেছিলাম।”[সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত: ৬] এবং শুআইব আলাইহিস সালাম তাঁর সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে বলেছিলেন: “আর স্মরণ কর, যখন তোমরা সংখ্যায় কম ছিলে। আল্লাহ্ তোমাদের সংখ্যা বাড়িয়ে দিলেন।”[সূরা আরাফ, আয়াত: ৮৫] কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে, উম্মতের সংখ্যাধিক্য উম্মতের শক্তি ও শৌর্যবীর্যের মাধ্যম। মন্দধারণা পোষণকারীগণ যে ধারণা পোষণ করে যে, উম্মতের সংখ্যাধিক্য দারিদ্র ও অনাহারের কারণ এর বিপরীত।[ফাতাওয়া ইসলামিয়্যা (৩/১৯০) থেকে সমাপ্ত]
দুই:
পিতামাতার পক্ষ থেকে সন্তান না-নেয়ার নির্দেশ মানা সন্তানের উপর আবশ্যক নয়। আর তা দুটো কারণে:
প্রথম কারণ: এই নির্দেশ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশের সাথে সাংঘর্ষিক।
দ্বিতীয় কারণ: সন্তান নেয়া স্বামী-স্ত্রী উভয়ের যৌথ অধিকার। তাই তাদের একজনের এ অধিকার নাই যে, এ বিষয়ে অন্যের অধিকারে অন্যায় হস্তক্ষেপ করবে। তা সত্ত্বেও স্ত্রীর উচিত তার মায়ের সাথে কোমল আচরণ করা এবং তার সাথে কথাবার্তায় কোমল হওয়া।
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।
المصدر:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব