যদি কোন ব্যক্তি পানি না পান কিংবা পানি ব্যবহার করতে না পারেন; তাহলে তিনি কোন পদ্ধতিতে তায়াম্মুম করবেন?
তায়াম্মুমের বিবরণ
প্রশ্ন: 21074
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম তায়াম্মুমের ব্যাপারে আম্মার বিন ইয়াসির (রাঃ) এর হাদিস সংকলন করেছেন। ইমাম বুখারী তাঁর সহিহ গ্রন্থের কয়েকটি স্থানে হাদিসটি উদ্ধৃত করেছেন। এক বর্ণনার (নং-৩৪৭) (খণ্ড-১, পৃষ্ঠা- ৪৫৫) ভাষ্য হচ্ছে: “বরঞ্চ এভাবে করাই তোমার জন্য যথেষ্ট ছিল: তিনি তাঁর হাতের তালু মাটিতে নিক্ষেপ করলেন। এরপর মাটি ঝেড়ে ফেললেন। তারপর তালুদ্বয় দিয়ে মাসেহ করলেন। তালুর পিঠ বাম তালু দিয়ে এবং বাম তালুর পিঠ অপর তালু দিয়ে। এরপর উভয় তালু দিয়ে চেহারা মাসেহ করলেন।”
বুখারীর এই একই সনদে এই হাদিস ইমাম আবু দাউদও সংকলন করেছেন; আউনুল মাবুদের (নং- ৩১৭)(খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৫১৫)]। তবে তিনি ইমাম বুখারীর শিক্ষক ‘মুহাম্মদ বিন সালাম’ এর বদলে ‘মুহাম্মদ বিন সুলাইমান আল-আনবারি’-র সনদে সংকলন করেছেন। এই রাবী সম্পর্কে ইবনে হাজার ‘তাকরীব’ গ্রন্থে (২/১৬৭) বলেন: সাদূক্ব (সত্যবাদী)। আবু দাউদের ভাষ্য হচ্ছে: “তিনি হাত মাটিতে নিক্ষেপ করলেন এবং মাটি ঝেড়ে নিলেন। এরপর বামকব্জি ডানকব্জির ওপর এবং ডানকব্জি বামকব্জির ওপর নিক্ষেপ করলেন (অর্থাৎ মাসেহ করলেন)। এরপর চেহারা মাসেহ করলেন”।
হাফেয ইবনে হাজার ‘ফাতহুল বারী’-তে (১/৪৫৭) উল্লেখ করেন যে, ইসমাঈলী হাদিসটি বর্ণনা করেছেন এই ভাষ্যে: “বরঞ্চ তোমার জন্য যথেষ্ট ছিল তোমার দুইহাত মাটিতে মারা। এরপর হাত দুটি ঝেড়ে ফেলা। এরপর ডানহাত দিয়ে তোমার বামহাত এবং বামহাত দিয়ে ডানহাত মাসেহ করা। এরপর চেহারা মাসেহ করা।”
শানক্বিতী ‘আযওয়াউল বায়ান’ (২/৪৩)-এ বলেন: “বুখারীর হাদিসটি হাতদ্বয় চেহারার আগে (মাসেহ করার ব্যাপারে) অকাট্য।”[সমাপ্ত]
শাইখুল ইসলাম ‘আল-ফাতাওয়া’ গ্রন্থে বলেন: “সহিহ বুখারীর বর্ণনাটি সুস্পষ্ট যে, চেহারার পূর্বে হাতের তালুর পিঠ মাসেহ করেছেন”। অপর বর্ণনায় উদ্ধৃত: “তালুদ্বয়ের পিঠদ্বয়” প্রমাণ করে যে, তিনি প্রত্যেক হাতের কব্জির পিঠ অপর হাতের তালু দিয়ে মাসেহ করেছেন।[সমাপ্ত] তিনি আরও বলেন (২১/৪২৫): “কিন্তু বুখারীর একক বর্ণনাটি প্রমাণ করে যে, তিনি কব্জিদ্বয়ের পিঠ চেহারার পূর্বে মাসেহ করেছেন।”[সমাপ্ত] আরও দেখুন: আল-ফাতাওয়া (২১/৪২২-৪২৭)
পূর্বোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে তায়াম্মুমের পদ্ধতি হবে:
তায়াম্মুমের নিয়ত করে বিসমিল্লাহ্ পড়া। এরপর ভূপৃষ্ঠের উপর দুই হাতের তালু একবার নিক্ষেপ করা। এরপর বাম হাতের তালু দিয়ে ডানহাতের কব্জির পিঠ মাসেহ করা এবং ডান হাতের তালু দিয়ে বামহাতের কব্জির পিঠ মাসেহ করা। এরপর দুই হাত দিয়ে চেহারা মাসেহ করা। ওজুর পর যে যে যিকিরগুলো পড়া হয় তায়াম্মুমের শেষেও সে দোয়াগুলো পড়া।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ
আমাদের নবী মুহাম্মদের প্রতি আল্লাহ্র রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক।
সূত্র:
শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ