ডাউনলোড করুন
0 / 0
130225/09/2002

ওযুতে বিসমিল্লাহ বলার বিধান

প্রশ্ন: 21241

ওযুতে বিসমিল্লাহ বলার বিধান কী?

আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা

ওযুতে বিসমিল্লাহ বলার বিধান নিয়ে আলেমরা মতভেদ করেছেন।

ইমাম আহমাদ বিসমিল্লাহ পড়া ওয়াজিব হওয়ার মত পোষণ করেছেন। তিনি দলীল দিয়েছেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদীস দিয়ে, যেখানে নবীজী বলেছেন: “যে ব্যক্তি ওযুর সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করে না তার ওযু নেই।” [হাদীসটি তিরমিযী (২৫) বর্ণনা করেছেন এবং শাইখ আলবানী সহীহুত তিরমিযীতে হাসান বলেছেন] দেখুন: আল-মুগনী (১/১৪৫)

পক্ষান্তরে অধিকাংশ আলেম তথা ইমাম আবু হানীফা, মালেক, শাফেয়ী ও ইমাম আহমদ থেকে অপর একটি বর্ণনা অনুযায়ী বিসমিল্লাহ বলা ওযুর অন্যতম একটি সুন্নত; এটা ওয়াজিব না।

বিসমিল্লাহ পড়া ওয়াজিব না হওয়ার পক্ষে তারা কিছু দলীল দিয়েছেন, যথা:

১- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক লোককে ওযু শেখানোর সময় বলেন: “আল্লাহ যেভাবে তোমাকে আদেশ দিয়েছেন সেভাবে ওযু করো।” [হাদীসটি তিরমিযী (৩০২) বর্ণনা করেছেন আর শাইখ আলবানী তার সহীহুত তিরমিযীতে (২৪৭) সহীহ বলেছেন]। এর মাধ্যমে নবীজী ইঙ্গিত দিয়েছেন আল্লাহর বাণীর দিকে: “হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য উঠবে (উদ্যোগী হবে) তখন মুখমণ্ডল ও কনু্ই পর্যন্ত হাত ধোবে, মাথা মুছবে এবং গোড়ালির উপরের গিঁট পর্যন্ত পা ধোবে।” [সূরা মায়েদা: ৬] আল্লাহর আদেশের মাঝে বিসমিল্লাহ পড়ার কথা নেই। দেখুন: নববীর ‘আল-মাজমূ’ (১/৩৪৬)।

আবু দাউদ (৮৫৬) এই হাদীসটি আরো বেশি পরিপূর্ণ ভাষ্যে বর্ণনা করেছেন। সেটা থেকে আরো স্পষ্ট বোঝা যায় যে ওযুতে বিসমিল্লাহ পড়া আবশ্যক না।

আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “পূর্ণাঙ্গরূপে ওযু না করলে তোমাদের কারো সালাত সম্পন্ন হবে না ঠিক যেভাবে মহান আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন; তথা ব্যক্তি তার মুখমণ্ডল ও উভয় হাত কনুই পর্যন্ত ধুবে, মাথা মাসেহ করবে এবং উভয় পা গোড়ালিসহ ধুবে। …” হাদীসটি।

উক্ত হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিসমিল্লাহ পড়ার কথা বলেননি। এর থেকে প্রমাণিত হয় এটা পড়া ওয়াজিব নয়। দেখুন: বাইহাকীর ‘আস-সুনানুল কুবরা’ (১/৪৪)।

২- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওযুর বিবরণ যারা দিয়েছেন তাদের অনেকে বিসমিল্লাহ উল্লেখ করেননি। যদি এটা ওয়াজিব হত তাহলে উল্লেখ করা হত। দেখুন: আশ-শারহুল মুমতি (১/১৩০)।

এই মতটটি আল-খিরাকী ও ইবনে কুদামার মতো অনেক হাম্বলী বেছে নিয়েছেন।

দেখুন: আল-মুগনী (১/১৪৫) ও আল-ইনসাফ (১/১২৮)।

বর্তমান সময়ের আলেমদের মধ্য থেকে শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে ইব্রাহীম ও মুহাম্মাদ ইবনে উছাইমীন রাহিমাহুমাল্লাহ এই মত বেছে নিয়েছেন।

দেখুন: ফাতাওয়াশ শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে ইব্রাহীম (২/৩৯) ও আশ-শারহুল মুমতি’ (১/১৩০, ৩০০)।

যারা বিসমিল্লাহ বলা ওয়াজিব মনে করেন তারা যে হাদীসটি দিয়ে দলীল পেশ করেন সেটার বিপরীতে এই মতাবলম্বীরা দুটো জবাব পেশ করেন:

এক: হাদীসটি দুর্বল।

একদল আলেম এটাকে দুর্বল বলেছেন। তন্মধ্যে রয়েছেন ইমাম আহমাদ, বাইহাকী, নববী ও বায্‌যার।

ইমাম আহমাদকে ওযুতে বিসমিল্লাহ পড়ার বিধান জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন: “এ ব্যাপারে কোনো হাদীস প্রমাণিত না। আমি এ প্রসঙ্গে এমন কোনো হাদীস জানি না যেটার সনদ ভালো।”[সমাপ্ত][আল-মুগনী (১/১৪৫)]

দেখুন: আস-সুনানুল কুবরা (১/৪৩), আল-মাজমু (১/৩৪৩) ও তালখীসুল হাবীর (১/৭২)।

দুই: হাদীসটি সহীহ হলে “তার ওযু নেই” এ কথার অর্থ হবে ‘তার ওযু কামেল নয়’। ‘তার ওযু সহিহ নয়’ এটি এ কথার অর্থ নয়।

দেখুন: আল-মাজমূ (১/৩৪৭) ও আল-মুগনী (১/১৪৬)।

সুতরাং হাদীসটা সহীহ হলেও সেটি প্রমাণ করবে যে বিসমিল্লাহ পড়া মুস্তাহাব; সেটি প্রমাণ করবে না যে, বিসমিল্লাহ্‌ পড়া ওয়াজিব। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে কোন মুসলিম যদি বিসমিল্লাহ না পড়ে ওযু করেন তাহলে তার ওযু সঠিক। তবে তিনি এই সুন্নাহ পালনের নেকী থেকে নিজেকে বঞ্চিত করলেন। তবে একজন মুসলিমের জন্য ওযুতে বিসমিল্লাহ ত্যাগ না করাই নিরাপদ।

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android
at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android