প্রশ্ন: জমরাতে আকাবাতে কংকর নিক্ষেপ শেষে আমরা তাওয়াফে ইফাদা (ফরজ তাওয়াফ) আদায় করার জন্য মক্কায় গিয়েছি। তাওয়াফ শেষে আমরা খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়লাম; তাই রাত্রি যাপন করার জন্য মীনাতে যাওয়ার জন্য যানবাহন তালাশ করে পেলাম না। অবশেষে আমরা আযিযিয়া (রি সিদকি) তে গেলাম। আমরা জানতাম না যে, মীনার জমরাতগুলো আমাদের থেকে মাত্র এক কিলোমিটার বা তার চেয়ে কম দূরে। আমরা ঘুমিয়ে পড়লাম এবং এক ব্যক্তিকে বলে রাখলাম মধ্যরাত্রিতে যেন আমাদেরকে জাগিয়ে দেয় যাতে আমরা রাত্রি যাপনের জন্য মীনাতে যেতে পারি। সে লোক দেখল যে, আমরা খুব ক্লান্ত; তাই আর জাগাল না। মীনাতে রাত্রি যাপনের হুকুম কি; আমাদের উপর কী দম (পশু যবাই) ওয়াজিব হবে?
তারা মীনার বাহিরে রাত্রি যাপন করেছে; তারা জানত না যে মীনা তাদের নিকটে
প্রশ্ন: 225091
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
আলহামদুলিল্লাহ।
এক:
তাশরিকের তিনরাত্রি মীনাতে যাপন করা হজ্জের ওয়াজিব আমল। যে ব্যক্তি কোন ওজর ছাড়া মীনাতে রাত্রিযাপন পরিত্যাগ করবে জমহুর আলেমের মতে, তার উপর দম (পশু যবাই) আবশ্যক হবে।
আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা (১৭/৫৮) গ্রন্থে এসেছে,
তাশরিকের রাতগুলো মীনাতে যাপন করা জমহুর আলেমের মতে ওয়াজিব। যে ব্যক্তি কোন ওজর ছাড়া এ আমল ত্যাগ করবে তাকে দম দিতে হবে। সমাপ্ত
আরও জানতে নং 21258 ও 95374 নং প্রশ্নোত্তর দেখুন।
দুই:
যে ব্যক্তি মীনাতে রাত্রিযাপন করতে সক্ষম কিন্তু মীনার সীমানা না জানার কারণে মীনাতে রাত্রি যাপন করতে পারেনি এটি ওজর হিসেবে ধর্তব্য হবে না। কারণ সে ব্যক্তির উপর হচ্ছে- মীনা সম্পর্কে লোকদের জিজ্ঞেস করা; যাতে মীনাতে রাত্রিযাপন করতে পারে।
শাইখ বিন বায (রহঃ) বলেন:
যে ব্যক্তি মীনার সীমানা না জানার কারণে সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও মীনাতে রাত্রিযাপন করতে পারেনি তার উপর দম ওয়াজিব হবে। কারণ সে ব্যক্তি কোন শরয়ি ওজর ছাড়া একটি ওয়াজিব আমল ছেড়ে দিয়েছে। তার উপর ওয়াজিব ছিল মানুষকে জিজ্ঞেস করা যাতে করে এ ওয়াজিব আমলটি পালন করতে পারে।[শাইখ বিন বাযের ফতোয়াসমগ্র (১৬/১৪৯) থেকে সমাপ্ত]
এর আলোকে বলা যায় যে, যদি মীনাতে রাত্রিযাপন করার জন্য আপনাদের জায়গা থাকে তাহলে এ ওয়াজিব আমল পরিত্যাগ করতে আপনার কোন ওজর নেই। এ আমলটি ত্যাগ করার কারণে আপনাদের উপর সদকা করা ওয়াজিব হবে; দম (পশু জবাই) নয়। কারণ দম ওয়াজিব হয় সবকটি রাত যাপন পরিহার করার কারণে।
নববী (রহঃ) বলেন:
যদি তাশরিকের তিন রাত যাপন করা পরিত্যাগ করে তাহলে তার উপর দম ওয়াজিব হবে; এটাই মাযহাবের অভিমত…। আর যদি দুই রাত্রি যাপন পরিত্যাগ করে তাহলে বিশুদ্ধ মতানুযায়ী দুই মুদ্দ (দুই মুদ্দ খাদ্য সদকা করা) ওয়াজিব হবে।[আল-মাজমু (৮/২২৫) থেকে সমাপ্ত]
শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন:
গ্রন্থকারের কথা “অথবা যদি সেথায় রাত্রিযাপন না করে” এর থেকে জানা গেল যে, যদি একরাত যাপন করা পরিত্যাগ করে তাহলে দম ওয়াজিব হবে না। এটাই ঠিক। বরং তার উপর অপরিহার্য হবে- এক রাত যাপন না করলে একজন মিসকীনকে খাদ্য খাওয়ানো; দুই রাত যাপন না করলে দুইজন মিসকীনকে খাদ্য খাওয়ানো। আর তিন রাত যাপন না করলে তার উপর দম ওয়াজিব হবে।[আল-শারহুল মুমতি (৭/৩৫৮) থেকে সমাপ্ত]
মোদ্দাকথা, সে রাতে মীনাতে রাত যাপন ত্যাগ করার কারণে আপনাদের উপর একজন মিসকীন খাওয়ানো ওয়াজিব হবে।
আল্লাহই ভাল জানেন।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব
সংশ্লিষ্ট প্রশ্নোত্তরসমূহ