যে চিকিৎসাগুলো জায়েয এবং রোযার সাথে সাংঘর্ষিক নয় এ সম্পর্কে স্কলারদের কোন মতামত আছে কি? বিশেষতঃ ১. ক্যাপসুল/সিরাপ ২. এ্যাজমার ইনহেলার ৩. সাপোজিটরি ৪. রগে ইনজেকশন দেয়া কি অনুমোদিত?
বিভিন্ন ঔষধ ও ডাক্তারি যন্ত্রপাতি ব্যবহারে রোযার উপর প্রভাব
প্রশ্ন: 2299
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
আমরা নিম্নে চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় এমন কিছু বিষয় উল্লেখ করব। এগুলোর মধ্যে কোন্টি রোযা নষ্ট করবে, আর কোন্টি রোযা নষ্ট করবে না তা উল্লেখ করব। মূলত এ বিবরণটি ‘ফিকাহ একাডেমী’ এর মিটিং গুলোতে যে গবেষণাপত্রগুলো উপস্থাপিত হয়েছে সেগুলোর সার-সংক্ষেপ:
এক: নিম্নোক্ত বিষয়গুলো রোযা ভঙ্গকারী হিসেবে গণ্য হবে না:
১. চোখের ড্রপ, কানের ড্রপ, কানের ক্লিনার, নাকের ড্রপ, নাকের ইনহেলার ইত্যাদির ব্যবহার। তবে এ ঔষুধগুলোর কিংদাংশ যদি যদি গলার ভেতরে চলে যায় তাহলে যেন গিলে না ফেলে।
২. শ্বাসকষ্টজনিত রোগের চিকিৎসা কিংবা অন্য কোন রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে জিহ্বার নীচে যে ট্যাবলেট বা অন্য কিছু রাখা হয় সেটা থেকে নির্গত কোন পদার্থ গলার ভিতরে চলে না গেলে।
৩. মেডিকেল টেস্টের জন্য যোনিপথে যা কিছু ঢুকানো হয়; যেমন- সাপোজিটরি, লোশন, কলপোস্কোপ, হাতের আঙ্গুল ইত্যাদি।
৪.স্পেকুলাম বা আই. ইউ. ডি. বা এ জাতীয় কোন মেডিকেল যন্ত্রপাতি জরায়ুর ভেতরে প্রবেশ করালে।
৫. নারী বা পুরুষের মুত্রনালী দিয়ে যা কিছু প্রবেশ করানো হয়; যেমন- ক্যাথিটার, সিস্টোস্কোপ, এক্সরে এর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত রঞ্জক পদার্থ, ঔষধ, মুত্রথলি পরিস্কার করার জন্য প্রবেশকৃত দ্রবণ।
৬. দাঁতের রুট ক্যানেল করা, দাঁত ফেলা, মেসওয়াক দিয়ে কিংবা ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিস্কার করা; যদি কোন কিছু গলায় চলে গেলে সেগুলো গিলে না ফেলে।
৭. গড়গড়া কুলি ও চিকিৎসার জন্য মুখে ব্যবহৃত স্প্রে; যদি কোন কিছু গলায় চলে আসলে সেটা গিলে না ফেলে।
৮. চিকিৎসার উদ্দেশ্যে চামড়াতে, পেশীতে, কিংবা রগে ইনজেকশন দেয়া; যদি সেটা পুষ্টিকর তরল বা ইনজেকশন না হয়।
৯. অক্সিজেন গ্যাস নেয়া।
১০. এ্যানেসথেসিয়ার জন্য ব্যবহৃত গ্যাস রোযা ভঙ্গ করবে না; যদি না রোগীকে এর সাথে কোন খাদ্য-দ্রবণ দেয়া হয়।
১১. চামড়া দিয়ে শরীরে যা কিছু প্রবেশ করে। যেমন- তৈল, মলম, মেডিসিন ও কেমিকেল সম্বলিত ডাক্তারি প্লাস্টার।
১২. ডাগায়নস্টিক ছবি তোলা কিংবা চিকিৎসার উদ্দেশ্যে হৃৎপিণ্ডের ধমনীতে কিংবা শরীরের অন্য কোন অঙ্গের শিরাতে ছোট একটি টিউব প্রবেশ করানো।
১৩. নাড়ীভুড়ি পরীক্ষা করার জন্য কিংবা অন্য কোন সার্জিকাল অপারেশনের জন্য পেটের ভেতর একটি মেডিকেল স্কোপ প্রবেশ করালেও রোযা ভাঙ্গবে না।
১৪.কলিজা কিংবা অন্য কোন অঙ্গের নমুনাস্বরূপ কিছু অংশ সংগ্রহ করলেও রোযা ভাঙ্গবে না; যদি এ ক্ষেত্রে কোন দ্রবণ গ্রহণ করতে না হয়।
১৫. পাকস্থলীতে গ্যাসট্রোস্কোপ (gastroscope) ঢুকানো; যদি এর সাথে অন্য কোন দ্রবণ বা পদার্থ ঢুকানো না হয়।
১৬. চিকিৎসার স্বার্থে মস্তিষ্কে কিংবা স্পাইনাল কর্ডে কোন মেডিকেল যন্ত্র কিংবা কোন ধরণের পদার্থ ঢুকানো।
১৭. অনিচ্ছাকৃত বমি; তবে ইচ্ছা করে বমি করলে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে।
দুই:
মুসলিম ডাক্তারের কর্তব্য হচ্ছে, উল্লেখিত চিকিৎসাগুলোর মধ্যে যেটি ইফতারের পরে করা সম্ভব সেটি ইফতারের পরে করার জন্য রোগীকে পরামর্শ দেয়া। যাতে করে, এ চিকিৎসা রোযার শুদ্ধতার উপর কোন প্রভাব তৈরী করার সম্ভাবনা না থাকে।
সূত্র:
মুজাম্মাউল ফিকহ আল-ইসলামী (ইসলামী ফিকাহ একাডেমি), পৃষ্ঠা ২১৩