প্রশ্ন: সাহাবায়ে কেরাম যেভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাতে বাইআত করেছেন, খুলাফায়ে রাশেদীন এর হাতে বাইআত করেছেন সেভাবে প্রত্যেক মুসলমানকে কী অন্য কোন ব্যক্তির হাতে বাইআত করতে হবে?
কার হাতে বাইআত করতে হবে
প্রশ্ন: 23320
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
সমস্তপ্রশংসাআল্লাহরজন্য।বাইআত করতেহয় শুধুমাত্রমুসলিমশাসকের হাতে।আহলে হিল্ল ওআকদ তাঁর হাতেবাইআত করবেন।আহলে হিল্ল ওআকদ হচ্ছে-আলেম সমাজ, সম্মানিতও প্রভাবশালীব্যক্তিবর্গ।এ পর্যায়েরব্যক্তিবর্গরাষ্ট্রপ্রধানেরহাতে বাইআতকরার মাধ্যমেতাঁরকর্তৃত্বসাব্যস্তহবে। সাধারণমানুষকেব্যক্তিগতভাবেরাষ্ট্রপ্রধানেরহাতে বাইআতকরতে হবে না।বরং তারা তারআনুগত্য করবেযতক্ষণ নাসেটা গুনাহরআওতায় না পড়ে।
আল-মাজেরিবলেন: “যারাআহলে হিল্লওয়াল আকদ শুধুতারা ইমাম বারাষ্ট্রপ্রধানেরহাতে বাইআতকরলে যথেষ্ট;সর্বসাধারণেরবাইআত করাওয়াজিব নয়।প্রত্যেকব্যক্তিকেসশরীরে তারকাছে হাযিরহয়ে হাতে হাতরাখতে হবে এটাজরুরী নয়। বরংপ্রত্যেকেতার আনুগত্যকরবে, তার কথামেনে চলবে,তার বিরোধিতাকরবে না, তারবিপক্ষে যাবেনা।”[ফাতহুলবারী থেকেসংকলিত]
ইমাম নববী ‘শরহে সহিহমুসলিম’ গ্রন্থেবলেন: বাইআতেরব্যাপারে সকলআলেম একমত যে, বাইআতশুদ্ধ হওয়ার জন্যপ্রত্যেকব্যক্তিকে বাইআতকরতে হবে এমনকোন শর্ত নেই।আহলে হিল্লওয়াল আকদেরপ্রত্যেকব্যক্তিকে বাইআতকরতে হবেসেটাও শর্তনয়। বরং শর্তহচ্ছে- আলেমসমাজ,নেতৃত্বস্থানীয়ব্যক্তিবর্গও প্রভাবশালীলোকদের মধ্যেযাদেরকেএকত্রিত করা সম্ভবহয় তাদের বাইআতকরা…। প্রত্যেকব্যক্তিকেইমাম বারাষ্ট্রপ্রধানেরকাছে এসে হাতেহাত রেখে বাইআতকরতে হবেএমনটি ওয়াজিবনয়। বরং সকলেরউপর ওয়াজিবহচ্ছে-রাষ্ট্রপ্রধানেরনির্দেশ মেনেচলা, তারবিরোধিতা নাকরা, বিদ্রোহীনা হওয়া।” সমাপ্ত
যেসব হাদিসে বাইআতেরকথা এসেছেসেখানে বাইআতদ্বারা রাষ্ট্রপ্রধানেরহাতে বাইআতকরাউদ্দেশ্য।যেমন- নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামেরবাণী: “যেব্যক্তিমৃত্যুবরণকরল কিন্তুতার গর্দানে বাইআতনেই সেজাহেলিয়াতেরমৃত্যুবরণকরল।”[সহিহ মুসলিম(১৮৫১)]
নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী:“যেব্যক্তি কোনরাষ্ট্রপ্রধানেরহাতে বাইআতকরেছে, হাত দিয়েও অন্তর থেকেতার সাথেওয়াদাবদ্ধহয়েছে সে যেনযথাসম্ভব সেরাষ্ট্রপ্রধানেরআনুগত্য করে।যদি কোন লোক এরাষ্ট্রপ্রধানেরদায়িত্ব নিয়েটানাটানিকরতে আসে তখনতোমরা সে লোকেরগর্দান ফেলেদাও।”[সহিহমুসলিম (১৮৪৪)]নবী সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামেরবাণী: “যদিদুইজন খলিফারহাতে বাইআতকরা হয় তখনশেষের জনকেহত্যা কর” [সহিহমুসলিম (১৮৫৩)]এ হাদিসগুলোপ্রত্যেকটি রাষ্ট্রপ্রধানেরহাতে বাইআতকরা সংক্রান্ত;এ ব্যাপারেকোন সন্দেহনেই।
বিভিন্নদলের হাতেবাইআত করাসম্পর্কে একপ্রশ্নেরজবাবে শাইখসালেহআল-ফাওযানবলেন: বাইআতশুধুমাত্রমুসলিমরাষ্ট্রপ্রধানেরহাতে করতেহবে। এ ছাড়াযত বাইআত আছেএগুলো বিদআত।এ বাইআতগুলোঅনৈক্যেরকারণ। একইদেশের একইরাজ্যেরমুসলমানদেরউপর আবশ্যকীয়হলো একজনরাষ্ট্রপ্রধানেরহাতে বাইআত করা।একাধিক বাইআতকরানাজায়েয।[আল-মুনতাকামিন ফাতাওয়াসশাইখ সালেহআল-ফাওযান১/৩৬৭]
রাষ্ট্রপ্রধানেরহাতে বাইআতকরার পদ্ধতি:পুরুষেরবাইআত করারপদ্ধতি হবেমৌখিকভাবে ও কর্মেরমাধ্যমেঅর্থাৎমুসাফাহাকরে। আর নারীদেরক্ষেত্রেশুধুমৌখিকভাবে। এপদ্ধতি রাসূলসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামেরহাতেসাহাবায়েকেরামেরবাইআতের মাধ্যমেসাব্যস্তহয়েছে। এবিষয়ে আয়েশা(রাঃ) এর উক্তিহচ্ছে- “না, আল্লাহরশপথ। রাসূলসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামেরহাত কখনো কোননারীর হাতকেস্পর্শকরেনি। তিনিতাদেরকেমৌখিকভাবেবাইআত করাতেন।”[সহিহবুখারী (৫২৮৮)সহিহ মুসলিম(১৮৬৬)]
ইমমা নববী(রহঃ)হাদিসটিরব্যাখ্যায়বলেন: এ হাদিসেমহিলাদের হাতনা ধরেমৌখিকভাবেবাইআত করানোরদলিল রয়েছেএবং পুরুষেরহাত ধরে ও মৌখিকভাবেবাইআত করানোরদলিল রয়েছে।” সমাপ্ত
আল্লাহই ভালজানেন।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব