0 / 0
15,577২৪/শাওয়াল/১৪৪১ , 16/জুন/2020

মোহরানা স্ত্রীর সাব্যস্ত অধিকার

السؤال: 2378

আমি মোহরানার ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে আগ্রহী। ইসলাম কি মোহরানা নেয়ার অনুমতি দেয়; নাকি মোহরানা নেয়াটাকে গুনাহ হিসেবে গণ্য করে? যদি মোহরানা নেয়াটা গুনাহ হয় তাহলে যে ব্যক্তি ইতিপূর্বে মোহরানা নিয়েছে সে এটাকে কি করবে?

الجواب

الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وآله وبعد.

ইসলামে মোহরানা স্ত্রীর প্রাপ্য অধিকার। স্ত্রী সম্পূর্ণ মোহরানা হালাল হিসেবে গ্রহণ করবেন। কিছু কিছু দেশে যে কথা ছড়িয়ে আছে যে, স্ত্রীর কোন মোহরানা প্রাপ্য নেই ইসলামের বিধান এর বিপরীত। স্ত্রীকে মোহরানা দেয়া ওয়াজিব হওয়ার পক্ষে অসংখ্য দলিল রয়েছে। যেমন:

আল্লাহ্‌র বাণী:

وَءاتُوا النِّسَاءَ صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً   سورة النساء/ 4

"তোমরা সন্তুষ্ট চিত্তে/ফরয জেনে/ নারীদেরকে তাদের মোহরানা প্রদান কর।"[সূরা নিসা, আয়াত: ৪]

ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন: النحلة মানে মোহরানা।

ইবনে কাছীর (রহঃ) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরকারগণের বক্তব্যের মর্মার্থ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন: "পুরুষের উপর স্ত্রীকে মোহরানা দেওয়া অপরিহার্য ওয়াজিব এবং তা সন্তুষ্টচিত্তে দিতে হবে"।

আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন:

"আর তোমরা এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করতে চাইলে এবং তাদের কাউকে (মোহরানাস্বরূপ) বিপুল সম্পদ দিয়ে থাকলে তা থেকে কিছুই নেবে না। তোমরা কি অপবাদ দিয়ে আর স্পষ্ট পাপ করে তা (ফেরত) নিতে চাচ্ছ? তোমরা তা কিভাবে (ফেরত) নিতে পার, অথচ তোমরা একে অপরের সাথে একান্ত সম্পর্ক গড়েছ (সহবাস করেছ) আর তারাও তোমাদের কাছ থেকে শক্ত অঙ্গীকার নিয়েছে।"[সূরা নিসা ৪: ২০-২১]

ইবনে কাছীর (রহঃ) বলেন: অর্থাৎ কেউ যদি তার কোন স্ত্রীকে বিচ্ছেদ করে তার স্থলে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করতে চায় তাহলে সে যেন প্রথম স্ত্রীকে যে মোহরানা দিয়েছিল সেটা ফেরত না নেয়। এমনকি তার প্রদেয় মোহরানা যদি বিপুল সম্পদ হয়ে থাকে তবুও। মোহরানা পরিশোধ করা হয় যৌনাঙ্গের বিপরীতে (অর্থাৎ যা দিয়ে যৌনাঙ্গকে হালাল করা হয়েছে)। এ কারণে আল্লাহ্‌ তাআলা বলেছেন: " অথচ তোমরা একে অপরের সাথে একান্ত সম্পর্ক গড়েছ"। আর "শক্ত অঙ্গীকার"  হল বিয়ের চুক্তি।

আনাস বিন মালিক (রাঃ) বর্ণিত আছে যে, আব্দুর রহমান বিন আওফ (রাঃ) একবার রাসূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসলেন। তখন তার মাঝে (জাফরানের) হলুদ রঙ দেখে রাসূল সাল্লাল্লাহু্ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন। সে বলল: আমি এক আনসারী নারীকে বিয়ে করেছি। তিনি বললেন: তুমি তাকে কত মোহরানা দিয়েছে? জবাবে সে বলল: এক দানা পরিমাণ স্বর্ণ। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: তুমি একটি ভেড়া দিয়ে হলেও ওয়ালিমা কর।"[সহিহ বুখারী (৪৭৫৬)]

মোহরানা হচ্ছে কনের প্রাপ্য অধিকার। কনের বাবা কিংবা অন্য কারো জন্য এটি গ্রহণ করা জায়েয নয়; যদি না কনে সন্তুষ্ট চিত্তে তাদেরকে প্রদান না করে।

আবু সালেহ থেকে বর্ণিত আছে যে, প্রথা ছিল যখন কোন লোক তার মেয়েকে বিয়ে দিত তখন মেয়ের পরিবর্তে সে নিজেই মোহরানার অর্থ গ্রহণ করত। আল্লাহ্‌ সেটাকে নিষেধ করে নাযিল করেন:

وَءاتُوا النِّسَاءَ صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً   سورة النساء 4

"তোমরা সন্তুষ্ট চিত্তে/ফরয জেনে/ নারীদেরকে তাদের মোহরানা প্রদান কর।"[সূরা নিসা, আয়াত: ৪]

অনুরূপভাবে নারী যদি তার স্বামীকে মোহরানার কোন অংশ ছেড়ে দেয় তাহলে স্বামীর জন্য সেটা গ্রহণ করা জায়েয আছে। যেমনটি আল্লাহ্‌ তাআলা বলেছেন:

فَإِنْ طِبْنَ لَكُمْ عَنْ شَيْءٍ مِنْهُ نَفْسًا فَكُلُوهُ هَنِيئًا مَرِيئًا

"তবে তারা যদি খুশিমনে তোমাদেরকে তার কিছু অংশ ছেড়ে দেয় তাহলে তোমরা তা স্বাচ্ছন্দ্যে খেতে (ভোগ করতে) পার।"[সূরা নিসা ৪: ৪]

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

المصدر

শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android