ডাউনলোড করুন
0 / 0

যে ব্যক্তি তাওয়াফের এক চক্কর ভুলে বাদ দিয়েছে এবং সাঈ শেষ করার পর সেটি আদায় করেছে

প্রশ্ন: 23876

আমি উমরা করাকালে কাবা শরীফ ভুলবশতঃ ছয় চক্কর তাওয়াফ করেছি; এ কথা মনে ছিল না যে, তাওয়াফ সাত চক্কর। সাঈ করাকালে আমার সেটি মনে পড়েছে। সাঈ শেষ করার পর আমি সে চক্করটি সম্পন্ন করেছি। আমার উপর কি কোন কিছু বর্তাবে?

আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা

এক:

উমরা কিংবা হজ্জের জন্য সাত চক্কর তাওয়াফ করা ওয়াজিব। এর চেয়ে কম চক্কর করলে সেটা যথেষ্ট নয়। কেননা আল্লাহ্‌ তাআলা তাওয়াফ করার নির্দেশ দিয়ে বলেন: এবং তাদের কর্তব্য প্রাচীন ঘরের তাওয়াফ করা।[সূরা হাজ্জ, আয়াত: ২৯] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কর্মের মাধ্যমে এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং তিনি সাত চক্কর তাওয়াফ করেছেন। এর সাথে তিনি বলেছেন: তোমরা আমার কাছ থেকে তোমাদের হজ্জ-উমরার কার্যাবলী শিখে নাও[সহিহ মুসলিম (২২৮৬)]

নববী (রহঃ) বলেন: “তাওয়াফের শর্ত হচ্ছে সাত চক্কর হওয়া। প্রত্যেকবার হাজারে আসওয়াদ থেকে হাজারে আসওয়াদ পর্যন্ত। এমনকি যদি এক চক্কর বাকী তবুও তা তাওয়াফ হিসেবে গণ্য হবে না। চাই সে ব্যক্তি মক্কাতে থাকুক কিংবা মক্কা ছেড়ে নিজ দেশে ফিরে আসুক। এর প্রতিকার দম (পশু জবাই) বা অন্য কিছুর মাধ্যমে করা যাবে না।”[আল-মাজমু (৮/২১) থেকে সমাপ্ত]

দুই:

তাওয়াফের চক্করগুলোর মধ্যে পরম্পরা রক্ষা করা মালিকী ও হাম্বলী মাযহাবে শর্ত। যদি চক্করগুলোর মাঝে দীর্ঘ সময়ের ছেদ ঘটে তাহলে পুনরায় তাওয়াফ করা আবশ্যক।

কাশ্‌শাফুল ক্বিনা গ্রন্থে (২/৪৮৩) বলেন: “প্রচলিত প্রথায় যা দীর্ঘ ছেদ হিসেবে গণ্য তাওয়াফের মধ্যে এমন বিচ্ছেদ ঘটলে; সেটা ভুলবশতঃ হোক কিংবা কোন ওজরের কারণে হোক; সে তাওয়াফটি ধর্তব্য হবে না। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাওয়াফের চক্করগুলোর মাঝে পরম্পরা রক্ষা করেছেন। এবং তিনি বলেছেন: তোমরা আমার কাছ থেকে তোমাদের হজ্জ-উমরার কার্যাবলী শিখে নাও[পরিমার্জিতরূপে সমাপ্ত]

দেখুন: মাওয়াহিবুল জালিল (৩/৭৫), আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা (২৯/১৩২)

স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্রতে (১১/২৫৩) এসেছে: “যদি কোন হাজীসাহেব ফরয তাওয়াফ করেন; কিন্তু কোন এক চক্কর দিতে ভুলে যান, এর মাঝে দীর্ঘ সময়ের বিচ্ছেদ ঘটে; তাহলে তিনি তাওয়াফটি পুনরায় আদায় করবেন। আর যদি বিচ্ছেদ অল্প সময়ের জন্য হয় তাহলে তিনি বাদ যাওয়া চক্করটি আদায় করে নিবেন।”[সমাপ্ত]

তিন:

অধিকাংশ ফিকাহবিদ (এর মধ্যে চার মাযহাবের আলেমগণও রয়েছেন) এর মতে, সাঈকে তাওয়াফের আগে আদায় করা নাজায়েয। যে ব্যক্তি আগে সাঈ করে ফেলেছে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না।

ইবনে কুদামা (রহঃ) আল-মুগনী গ্রন্থে (৩/১৯৪) বলেন: “সাঈ তাওয়াফের অনুবর্তী। সাঈর পূর্বে কোন তাওয়াফ না থাকলে সে সাঈ সহিহ নয়। যদি তাওয়াফের আগে সাঈ করে ফেলে সহিহ হবে না। এটি মালেক, শাফেয়ি ও আহলুর রায় এর অভিমত।”[সমাপ্ত]

সুতরাং এর ভিত্তিতে সাঈ শেষ করার পর আপনি যে, সপ্তম চক্করটি করেছেন সেটি গ্রহণযোগ্য নয়; এই চক্করটি ও অন্য চক্করগুলোর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটার কারণে।

অনুরূপভাবে আপনার সাঈও গ্রহণযোগ্য নয়; যেহেতু সেটি তাওয়াফ শেষ করার পূর্বে সংঘটিত হয়েছে।

এর আলোকে আপনি এখনও ইহরামের ওপর আছেন। ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ সব কিছু থেকে বিরত থাকা ও মক্কায় ফিরে যাওয়া আপনার উপর আবশ্যক; যাতে করে আপনি তাওয়াফ ও সাঈ করে মাথার চুল কামাই করে কিংবা ছাটাই করে আপনার উমরা শেষ করতে পারেন।

শাইখ উছাইমীনকে এমন এক নারী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যিনি ছয় চক্কর তাওয়াফে ইফাযা (ফরয তাওয়াফ) করেছেন। তার বিশ্বাস ছিল যে, সাত চক্কর। সাঈ করা ও চুল কাটার পর সে নারী আরেকটি চক্কর আদায় করেছে। এটি কি যথেষ্ট হয়েছে?

শাইখ জবাব দেন: “যদি সেই নারীর নিশ্চিত থাকেন যে, ছয় চক্কর করেছেন; তাহলে এই দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর সপ্তম চক্কর করার মাধ্যমে কোন লাভ হবে না। তার কর্তব্য হলো সাত চক্কর তাওয়াফ শুরু থেকে পুনরায় আদায় করা। আর যদি তাওয়াফ শেষ করার পর এটি নিছক সন্দেহ হয় যে তিনি বোধহয় তাওয়াফ পরিপূর্ণ করেননি; তাহলে এমন সন্দেহের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করা অনুচিত।”[মাজমুউ ফাতাওয়াশ শাইখ ইবনে উছাইমীন (২২/২৯৩)]

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android
at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android