0 / 0

জনৈক ব্যক্তি মোবাইল ফোনের দোকানের একজন অংশীদার, সে কি নিজে কিনে অন্যের কাছে কিস্তিতে বিক্রি করতে পারবে?

السؤال: 259211

আমার স্মার্টফোন বিক্রির একটা দোকান আছে। দোকানটা কয়েকজন উত্তরাধিকারীর; তাদের মধ্যে আমিও একজন এবং আমিই দোকানটা চালাই। বর্তমানে আমি দোকানের ভেতর বিক্রির একটা নতুন ধরণ চালু করেছি। সেটা হল কিস্তিতে বিক্রি। এটা বিশেষভাবে শুধু আমার পক্ষ থেকে করছি। এখন কোনো কাস্টমার যদি কিস্তিতে একটা মোবাইল সেট কিনতে চায়, তাহলে আমি তার কাছে কিস্তির মূল্যে সেটা পেশ করি। আমরা একমত হওয়ার পর আমি দোকান থেকে নিজের নামে নগদ দামে মেমো বানাই। তারপর কিস্তিতে ঐ কাস্টমারের কাছে সেটা বিক্রি করি। এই পদ্ধতিটা কি জায়েয? উল্লেখ্য, আমি কিস্তিতে বিক্রি কৱার জন্য কিছু মোবাইল সেট নিজে কিনতে পারি না। যেহেতু মোবাইলের বহু মডেল, নানাবিধ রঙ ও প্রত্যেক মোবাইলের বিভিন্ন মেমোরি কার্ড থাকে। তাই এটি আমার জন্য উপযুক্ত পন্থা। আমি মনে করি এভাবে আমি লাভ করতে পারব। আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

الجواب

الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وآله وبعد.

অংশীদার বা মুদ্বারাবা ব্যবসার অংশীদার বা এজেন্টের জন্য অন্য অংশীদার বা এজেন্ট নিযুক্তকারীর অনুমতি ছাড়া নিজের জন্য কিছু কেনা জায়েয নয়। যেহেতু এতে তার উপর নিজের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অপবাদ উঠবে। এবং যেহেতু এজেন্ট বা অংশীদারের উপর আবশ্যক হল তাকে নিযুক্তকারী ব্যক্তি বা অন্য অংশীদারদের জন্য সর্বাধিক লাভজনক কাজটা করা। আর সে নিজের জন্য কেনার দাবী হলো সর্বাধিক কমে কেনা। সর্বোচ্চ লাভ করা ও সর্বাধিক কমে কেনা এ দুটি পরস্পর সাংঘর্ষিক।

একজন অংশীদার অংশীদারিত্ব কারবারে মৌলিকভাবে নিজের পক্ষ থেকে এবং অন্য শরীকদারদের প্রতিনিধি হিসেবে লেনদেন করে।

ইবনে কুদামা রাহিমাহুল্লাহ তার ‘আল-মুগনী’ (৫/৬৮) বইয়ে বলেন: “এজেন্টের জন্য নিজের থেকে নিজে কেনা জায়েয নেই। অনুরূপভাবে অসীয়তের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির জন্যেও।

সারকথা হল, কেউ যখন কোনো কিছু বিক্রির দায়িত্বে নিযুক্ত হয়, তখন তার জন্য নিজের থেকে নিজে কেনা জায়েয নয়। এটা দুই বর্ণনার এক বর্ণনা, যা মুহান্না রেওয়ায়েত করেছেন এবং এটি শাফেয়ী ও আহলে রায় এর মাযহাব।

অনুরূপভাবে অসীয়তের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির জন্য এতীমের সম্পদ থেকে কিছু নিজের জন্য কিনে নেওয়া জায়েয নয়। এটি দুই বর্ণনার এক বর্ণনা এবং শাফেয়ীর মাযহাব।”[সমাপ্ত]

মিরদাওয়ী ‘আল-ইনসাফ’ বইয়ে (৫/৩৭৭) বলেন: “দুটো টীকা: প্রথমটি হলো: এজেন্ট কর্তৃক মক্কেলের জন্য নিজের থেকে নিজে ক্রয় করার হুকুমও একই। অনুরূপভাবে শাসক, কোষাধ্যক্ষ, অসীয়তের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি, ওয়াকফের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি, মুদ্বারাবা ব্যবসার অংশীদার সবাই এজেন্টের মতই।”[সমাপ্ত]

আল-মাউসুয়াতুল ফিকহিয়্যাহ (৩৯/৪৫) বইয়ে আছে: “হানাফী, শাফেয়ী অধিকাংশ ফিকাহবিদের অভিমত ও হাম্বলী মাযহাব অনুযায়ী এবং মালেকীদের নির্ভরযোগ্য মতানুযায়ী: জেনারেল সেল্‌স এজেন্টের জন্য কোনোভাবেই নিজের কাছে বিক্রি করা জায়েয নেই। যেহেতু বিক্রয়ের ক্ষেত্রে লোকাচার হলো: ব্যক্তি অন্যের কাছে বিক্রি করা। তাই ওকালতি তথা এজেন্ট নিযুক্তিকে সেই লোকাচারে ব্যাখ্যা করা হয়েছে; যেমনটি ঘটত যদি তিনি স্পষ্টভাবে সেটা বলে দিতেন। এবং যেহেতু (নিজের কাছে বিক্রি করলে) সে অপবাদের শিকার হবে।

হানাফী ও শাফেয়ীরা এই হুকুমের কারণ দর্শিয়েছেন এভাবে: এক ব্যক্তি একসাথে ক্রেতা ও বিক্রেতা হতে পারে না। তারা বলেন: এজেন্ট নিযুক্তকারী যদি এজেন্টকে নিজের কাছে বিক্রি করার নির্দেশ দেন তবুও সেটা বৈধ হবে না।

অন্যদিকে মালেকী ও হাম্বলীরা স্পষ্ট বলেছেন: এজেন্ট নিজের কাছে বিক্রি করতে পারবে যদি তাকে নিযুক্তকারী ব্যক্তি অনুমতি দেন।”

অনুরূপভাবে কোন অংশীদারের এই অধিকার নেই যে, অন্য শরীকদারদের অনুমতি ছাড়া তাদের দোকানকে ব্যবহার করবে এবং সেখানে নিজের ব্যক্তিগত বেচাবিক্রি করবে।

কোন কর্মচারীর এই অধিকার নেই যে, সে তার চাকুরীকালীন সময়ে তার নিয়োগকর্তা ছাড়া অন্য কারো কাজ করবে।

অতএব তিনটি বিষয়ে আপনার সাথে যারা দোকানের অংশীদার তাদের অনুমতি নেওয়া আবশ্যক:

১) তারা আপনাকে এই অনুমতি দেয়া যে আপনি নিজস্ব বেচাবিক্রি করতে পারবেন।

২) তারা আপনাকে এই অনুমতি দেয়া যে, এই কাজ আপনি দোকানের ভেতরে এবং অংশীদারদের মালিকানাভুক্ত পণ্য দিয়ে করতে পারবেন।

৩) তারা আপনাকে কর্মকালীন এই কাজ করার অনুমতি দেওয়া।

আপনার অংশীদাররা যদি আপনাকে এই কাজের অনুমতি দেয় এবং তারা যদি প্রাপ্তবয়স্ক ও সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন হয় তাহলে এমনটা করতে বাধা নেই। যদি আপনার কাছে কেউ কিস্তিতে কিনতে আসে তখন আপনি নিজ অর্থ দিয়ে দোকান থেকে সেটটা নিজের জন্য কিনে নিবেন। এরপর তার কাছে বিক্রি করবেন।

আর যদি অংশীদারদের মধ্যে অপরিপক্ক বুদ্ধির কেউ থাকে; তথা যে এখনও বালেগ হয়নি কিংবা বালেগ হলেও নির্বোধ, তাহলে এই লেনদেন করা জায়েয হবে না; এমনকি সে আপনাকে অনুমতি দিলেও। কারণ তার অনুমতি শরীয়তের দৃষ্টিতে বিবেচ্য নয়।

আল্লাহ সর্বজ্ঞ।

المصدر

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android