ডাউনলোড করুন
0 / 0

উপহারপ্রদানকারী, দাতা ও সদকাকারীর উদ্দিষ্ট খাতের পরিবর্তে অন্য খাতে সম্পদ ব্যয় করা যাবে কি?

প্রশ্ন: 266939

আমার এক আত্মীয় কাজের খোঁজে অন্য শহরে সফর করার সিদ্ধান্ত নিল। তদপ্রেক্ষিতে তার বাবা ও ভাইয়েরা কিছু অর্থ-সম্পদ জমিয়ে দিয়েছিল; যেন সে সফরে থাকা অবস্থায় কাজে লাগাতে পারে। এই আত্মীয়ের সাথে আমার যখন দেখা হয় তখন সে ঐ অর্থের একটা ভালো অংক আমাকে উপহার হিসেবে দিয়ে দেয়। আমার জন্য কি এটা নেওয়া জায়েয হবে? আমার প্রবল ধারণা হচ্ছে— যদি তারা জানতে পারে তাহলে রাগ করবে। কারণ সে তাদের উদ্দিষ্ট খাতের পরিবর্তে ভিন্ন খাতে সম্পদটি ব্যয় করেছে। হতে পারে তাদের মধ্যে কেউ কেউ এই সম্পদ পাওয়ার অধিক হকদার। নাকি এটা তার নিজের সম্পদ হয়ে গিয়েছে এবং সে ইচ্ছামত এটি ব্যয় করতে পারে?

আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা

যদি এই ব্যক্তিকে সফরের জন্যই এই অর্থ দেওয়া হয়ে থাকে; যেমনটা প্রশ্ন থেকে বুঝা যাচ্ছে; তাহলে এ অর্থ অন্য কোন খাতে ব্যয় করা বা কাউকে উপহার দেয়ার অধিকার তার নেই। তবে যারা তাকে এই অর্থ দিয়েছে তাদের অনুমতি নিয়ে দিতে পারবে।

এই অর্থ থেকে কিছু অতিরিক্ত থাকলে সেটা ফেরত দেওয়া তার উপর অনিবার্য।

আর যদি এই অর্থ উপহার, দান বা সদকা হিসেবে তাকে দেওয়া হয় এবং ব্যয় করার কোন খাত নির্ধারণ না করা হয় অথবা দৃশ্যমান সুনির্দিষ্ট কোন কারণে তাকে দেওয়া না হয়; তাহলে এর দাবী হলো: সে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে এটি ব্যয় করার অধিকার লাভ করেছে।

শাইখ যাকারিয়া আনসারীর ‘আসনাল মাত্বালিব’ বইয়ে (২/৪৭৯) এসেছে: “যদি তাকে কিছু দিরহাম দিয়ে বলে যে, তুমি তোমার জন্য একটা পাগড়ী কিনো কিংবা এটা দিয়ে হাম্মামে ঢুকো কিংবা অনুরূপ কিছু; তাহলে দাতার উদ্দেশ্যকে বিবেচনায় রেখে সেটি করা আবশ্যক।

এটি সেক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে যদি দাতা তার মাথা খালি দেখে পাগড়ী দ্বারা মাথা ঢাকাকে উদ্দেশ্য করে থাকে এবং শরীর নোংরা ও ময়লা দেখে হাম্মামে প্রবেশ দ্বারা পরিচ্ছন্নতাকে উদ্দেশ্য করে থাকে।

আর যদি এমন কিছুকে উদ্দেশ্য করে না থাকে; তথা স্বভাবগত আলাপচারিতা হিসেবে বলে থাকে; তাহলে সেটা আবশ্যক হবে না। বরঞ্চ ব্যক্তি নিজে সেটার মালিক হয়ে যাবে এবং যেভাবে ইচ্ছা সেটাকে সেভাবে ব্যয় করতে পারবে।”[সমাপ্ত]

শাইখ সুলাইমান ইবনএ উমর আল-জামাল রাহিমাহুল্লাহ বলেন: “ব্যক্তিকে যদি ইফতার করার জন্য খেজুর প্রদান করা হয়; অগ্রগণ্য মতানুযায়ী তার জন্য সেটা করাই নির্ধারিত হয়ে যাবে। অন্য কিছুতে সে খেজুর ব্যবহার করা জায়েয হবে না। দাতার উদ্দেশ্য রক্ষার্থে।”[হাশিয়াতুল জামাল আলা শারহিল মানহাজ (২/৩২৮)]

দারদীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন: “যদি একদল লোক বা এক ব্যক্তি কোন মুকাতিব দাসকে সাহায্য করে। সে দাস এ সাহায্য দিয়ে নিজের ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম হয় এবং এর থেকে কিছু অতিরিক্ত থেকে যায় কিংবা সে ঋন পরিশোধ করতে অক্ষম হয়; তাহলে তারা যদি এ সাহায্য দ্বারা সদকা করার উদ্দেশ্য না করে দাসমুক্তির উদ্দেশ্য করে থাকে কিংবা তাদের কোনো উদ্দেশ্য না থাকে; তাহলে তারা অতিরিক্ত সম্পদ দাসের কাছ থেকে ফেরত নিবেন। আর যদি দাস ঋণ পরিশোধ করতে অক্ষম হয় তাহলে তাদের যে সম্পদ দাসের মনিব হস্তগত করেছে সেটা তারা তার থেকে ফেরত নিবেন; কেননা তাদের উদ্দেশ্য হাসিল হয়নি।

অন্যথায় অর্থাৎ তারা যদি মুকাতাব দাসকে এ সাহায্য সদকা হিসেবে করে থাকেন তাহলে তারা অতিরিক্ত সম্পদ দাসের কাছে ফেরত চাইতে পারবে না এবং দাস ঋণ পরিশোধ করতে অক্ষম হলে তাদের যে সম্পদ দাসের মনিব হস্তগত করেছে সেটা তারা তার কাছে ফেরত চাইতে পারবে না। কেননা এক্ষেত্রে দানের উদ্দিষ্ট হল দাসের আপন সত্ত্বা। আর হস্তগত করার মাধ্যমে সে ওটার মালিক হয়ে গিয়েছে।”[দারদীরের ‘আশ-শারহুল কাবীর’ (৪/৪০৪)]

সুতরাং আপনার জন্য আপনার বন্ধুর এমন অবস্থা জানার পর তার উপহার গ্রহণ করা জায়েয নেই। আপনাকে তার সম্পদ ফিরিয়ে দিতে হবে। আর আমরা যা উল্লেখ করলাম আপনি তাকে তা জানিয়ে দিবেন।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android
at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android