ডাউনলোড করুন
0 / 0

সাঈ-এর পরে দুই রাকাত নামায পড়া কি সুন্নত?

প্রশ্ন: 314133

উমরা বা হজ্জের সাঈর পর দুই রাকাত নামায পড়ার হুকুম কি?

উত্তরের সংক্ষিপ্তসার

সাঈ-এর পর দুই রাকাত নামায পড়া সুন্নত নয়। এক্ষেত্রে তাওয়াফের উপর সাঈ-কে কিয়াস করা ঠিক নয়।

আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা

সাঈ-এর পরে দুই রাকাত নামায পড়া সুন্নত নয়। হানাফী মাযহাবের আলেমগণ এটাকে মুস্তাহাব বলেছেন।

ইবনুল হুমাম (রহঃ) বলেন: “সাঈ শেষ করার পর মসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাত নামায পড়া মুস্তাহাব; যাতে করে তাওয়াফের মত সাঈ-র শেষ কাজটি হয় এটি। যেমনিভাবে তাওয়াফের সূচনা হয় নবী সাল্লাল্লাহু আলা্হি ওয়া সাল্লামের সূচনার মত হাজারে আসওয়াদ স্পর্শ করার মাধ্যমে। এই কিয়াসের কোন প্রয়োজন নেই। যেহেতু এ ব্যাপারে সরাসরি দলিল রয়েছে। সেটি হলো: আল-মুত্তালিব বিন আবি ওয়াদাআ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

رأيت رسول الله – صلى الله عليه وسلم – حين فرغ من سعيه ، جاء، حتى إذا حاذى الركن ، فصلى ركعتين في حاشية المطاف، وليس بينه وبين الطائفين أحد .

(আমি দেখেছি যে, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সাঈ শেষ করলেন তখন তিনি রুকন বরাবর এলেন এবং মাতাফের (তাওয়াফস্থলের) প্রান্তভাগে দুই রাকাত নামায পড়লেন। তাঁর মাঝে ও তাওয়াফকারীদের মাঝে আর কেউ ছিল না।)[মুসনাদে আহমাদ, সুনানে ইবনে মাজাহ ও সহিহ ইবনে হিব্বান][ফাতহুল কাদির (২/৪৬০) থেকে সমাপ্ত]

এই হাদিস দিয়ে দলিল পেশ করা দুটো দিক থেকে ভুল:

এক: হাদিসটির ভাষ্য হচ্ছে:  حين فرغ من سُبعه  (যখন তিনি সাতচক্কর সমাপ্ত করলেন); হাদিসটির ভাষ্য: (سعيه) (সাঈ শেষ করলেন) নয়। এখানে সাতচক্কর দ্বারা উদ্দেশ্য তাওয়াফের সাতচক্কর।

ইমাম নাসাঈ (২৯৫৯) ও ইবনে মাজাহ (২৯৮৫) এর বর্ণনাতে এসেছে:

عَنْ الْمُطَّلِبِ بْنِ أَبِي وَدَاعَةَ، قَالَ:   رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، حِينَ فَرَغَ مِنْ سُبُعِهِ، جَاءَ حَاشِيَةَ الْمَطَافِ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، وَلَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الطَّوَّافِينَ أَحَدٌ   .

(আল-মু্ত্তালিব বিন আবি ওয়াদাআ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি দেখেছি যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সাঈ শেষ করলেন তখন তিনি মাতাফের (তাওয়াফস্থলের) প্রান্তভাগে দুই রাকাত নামায পড়লেন। তাঁর মাঝে ও তাওয়াফকারীদের মাঝে আর কেউ ছিল না।)

এবং ইবনে খুজাইমা (৮১৫) ও ইবনে হিব্বান (২৩৬৩)-এর বর্ণনাতে তাওয়াফের কথাটি স্পষ্টভাবে উদ্ধৃত হয়েছে:

عَنِ الْمُطَّلِبِ بْنِ أَبِي وَدَاعَةَ قَالَ :   رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ فَرَغَ مِنْ طَوَافِهِ، أَتَى حَاشِيَةَ الْمَطَافِ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، وَلَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الطَّوَّافِينَ أَحَدٌ  .

(আল-মু্ত্তালিব বিন আবি ওয়াদাআ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি দেখেছি যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন তাওয়াফ শেষ করলেন তখন তিনি মাতাফের (তাওয়াফস্থলের) প্রান্তভাগে এসে দুই রাকাত নামায পড়লেন। তাঁর মাঝে ও তাওয়াফকারীদের মাঝে আর কেউ ছিল না।)

দুই: হাদিসটি দুর্বল। আলবানী ‘তামামুল মিন্নাহ’ (পৃষ্ঠা-৩০৩) বলেন: উল্লেখিত হাদিসটি দুর্বল। কেননা সেটি কাছির বিন কাছির বিন আল-মুত্তালিব এর বর্ণনা থেকে। এ সনদে তাকে কেন্দ্র করে মতভেদ হয়েছে। ইবনে উওয়াইনা বলেছেন: তার থেকে, তার পরিবারের কোন সদস্য থেকে, তিনি তার নানা আল-মুত্তালিবকে শুনেছেন।

ইবনে জুরাইজ বলেছেন: কাছির বিন কাছির আমাকে খবর দিয়েছেন তার পিতা থেকে তিনি তার দাদা থেকে।[সমাপ্ত]

আল-আজমী তার কৃত ইবনে খুজাইমার তাহকীকে (পাঠোদ্ধারে) বলেন: সনদটি দুর্বল। ইবনে জুরাইজ মুদাল্লিস এবং তিনি ‘থেকে থেকে’ বলে বর্ণনা করেছেন। এর সনদ নিয়ে এত মতভেদ রয়েছে যে, তা বিস্তারিত উল্লেখ করার সুযোগ এখানে নেই।[সমাপ্ত]

সহিহ ইবনে হিব্বানের ‘তাহকীকে’ (পাঠোদ্ধারে) শুআইব আল-আরনাউত হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন।

সারকথা:

সাঈ-এর পর দুই রাকাত নামায পড়া সুন্নত নয়। এক্ষেত্রে তাওয়াফের উপর সাঈ-কে কিয়াস করা ঠিক নয়।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android
at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android