আমি কিছু লোককে বলতে শুনেছি যে, নারীদের যে জামা গোটা শরীর ঢাকে না অর্থাৎ শর্ট জামা এমন জামা বিক্রি করা ও সেলাই করা জায়েয। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উমর (রাঃ) কে লাল রেশমী জামা উপহার দিয়েছিলেন। এরপর উমর (রাঃ) যখন সেটি পরল এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে সেটি পরা অবস্থায় দেখলেন তখন বললেন: আমি আপনাকে জামাটি দিয়েছি সেটি আপনি উপহার দেয়ার জন্য; পরার জন্য নয়। তখন উমর (রাঃ) সে জামাটি জাহেলী যামানার এক বন্ধুকে উপহার দিলেন। এই কথা কি সঠিক? যদি এই কথা সঠিক হয় তাহলে এর উপর সিগারেট, তামাক, নারীদের প্যান্ট এবং নারী-পুরুষের গোসলের ড্রেস বিক্রি করাকে কি কিয়াস করা যায়? অথচ আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “সৎকর্ম ও আল্লাহভীতিতে একে অন্যকে সাহায্য করো। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যকে সহায়তা করো না।”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ০২] আশা করি আপনারা জবাব দিবেন। আল্লাহ্ আপনাদেরকে হেফাযতে করুন।
যা পরিধান করা জায়েয নেই তা বিক্রি করা
প্রশ্ন: 34674
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
উল্লেখিত হাদিসটি সহিহ বুখারী (২১০৪) ও সহিহ মুসলিমে (২০৬৮) এবং অন্যান্য গ্রন্থের একাধিক স্থানে একাধিক সনদে বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে সহিহ বুখারীর বর্ণনাটি ‘নর-নারীর জন্য যা পরিধান করা মাকরুহ’ পরিচ্ছেদের অধীনে সালিম বিন আব্দুল্লাহ্ বিন উমর থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উমর (রাঃ) এর কাছে একটি রেশমী জামা বা চাদর পাঠালেন। এরপর তিনি তার গায়ে সেটি দেখে বললেন: আমি আপনাকে এটি নিজে পরার জন্য পাঠাইনি। এটি এমন ব্যক্তি পরে যার (আখিরাতে) কোন অংশ নেই। বরঞ্চ আমি আপনাকে এটি পাঠিয়েছি যাতে করে এর দ্বারা আপনি উপকৃত হতে পারেন তথা বিক্রি করে।”
এই হাদিসটি প্রমাণ করে যে, ঐ সব পোশাক দিয়ে ব্যবসা করা, উপহার দেয়া বা দান করা জায়েয যে সব পোশাক কোন কোন পদ্ধতিতে কাজে লাগানো জায়েয; আবার কোন কোন পদ্ধতিতে নাজায়েয। আরও প্রমাণ করে যে, যে ব্যক্তি এমন কোন পোশাক খরিদ করেছে কিংবা তাকে অনুদান হিসেবে দেয়া হয়েছে তার কর্তব্য হলো বৈধ পদ্ধতিতে এটিকে কাজে লাগানো; হারাম পদ্ধতিতে নয়। উদাহরণস্বরূপ: স্বর্ণালংকার, অস্ত্র, ছুরি ও আঙ্গুর ইত্যাদি বৈধভাবে ব্যবহার করা যায় কিংবা হারামভাবেও ব্যবহার করা যায়। তাই এ সব জিনিস দিয়ে ব্যবসা করা, দান করা ও উপহার দেয়া জায়েয।
যে ব্যক্তি এমন কিছু কিনে ফেলেছে কিংবা তাকে উপঢৌকন হিসেবে দেয়া হয়েছে তার কর্তব্য হলো বৈধ পন্থায় যেমন বিক্রি করা, উপহার দেয়া কিংবা অন্য কোন বৈধ উপায়ে এর থেকে উপকৃত হওয়া; হারাম উপায়ে নয়।
পক্ষান্তরে কোন জিনিস যদি স্বত্তাগতভাবে সর্ব দিক থেকে ব্যবহার করা হারাম হয় তাহলে এটা দিয়ে ব্যবসা করা বা উপহার দেয়া জায়েয নয়; যেমন শূকর, সিংহ, চিতাবাঘ। উল্লেখিত হাদিসে প্রশ্নে যে সব জিনিসের উল্লেখ করা হলো সে সব জিনিস বিক্রি করা জায়েয হওয়ার পক্ষে কোন দলিল নেই। সুতরাং সিগারেট, তামাক ও নর-নারীর গোসলের অনাচ্ছাদক পোশাককে এমন জিনিসের ব্যবসার উপর কিয়াস করা সঠিক নয়; যে জিনিসগুলো কোন কোন পদ্ধতিতে জায়েয, কোন কোন পদ্ধতিতে নাজায়েয; কোন কোন অবস্থায় জায়েয এবং কোন অবস্থায় নাজায়েয। যেহেতু পূর্বোক্ত জিনিসগুলো ব্যবহার করা সর্বাবস্থায় হারাম।
আল্লাহ্ই তাওফিকের মালিক।
সূত্র:
গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটি (১৬/১৭৯)