এমন এক লোকের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে যিনি বংশগত চামড়ার শ্বেতী রোগে আক্রান্ত। এটি এমন শ্বেতী রোগ যার কারণে জন্ম থেকেই চামড়া সাদা হয়ে থাকে। এই লোকের ভাইদের এমন সন্তান রয়েছে যারাও এই রোগে আক্রান্ত। বিয়ের প্রস্তাবকালে আমাকে এই ত্রুটিটি জানতে দেয়া হয়নি। বাসরের দিন আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন: কোন এক ভয়ের প্রতিক্রিয়ায় তার ভাইদের রোগটি ঘটেছে। বিয়ের পর আমি সম্পূর্ণ বিপরীত বিষয় উদঘাটন করলাম যে, তাদের সবার রোগ জন্ম থেকে। এমতাবস্থায় আমার জন্য তালাক্ব গ্রহণ কি জায়েয হবে? উল্লেখ্য, এই রোগ আমার কাছে অস্বস্তিকর। আমি তাদেরকে দেখলে রেগে যাই। তবে তাকদীরের প্রতি আপত্তি করে নয়। আমি গর্ভ নিরোধক পিল খাচ্ছি। কেননা আমি আমার শিশুদেরকে এভাবে দেখতে চাই না।
যে নারী শ্বেতী রোগে আক্রান্ত সন্তান জন্ম দেয়ার আশংকা করছেন তার জন্য তালাক্ব চাওয়া কি বৈধ হবে?
প্রশ্ন: 352285
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
যদি এটি সাব্যস্ত হয় যে, আপনার স্বামীর ভাইদের ছেলেরা শ্বেতী রোগে আক্রান্ত এবং সেটি বংশগত এবং আপনি আশংকা করছেন যে, আপনারও শ্বেতী রোগে আক্রান্ত সন্তান হতে পারে তাহলে আপনার জন্য তালাক্ব চাওয়া জায়েয হবে। কেননা এটি একটি ওজর। ফিকাহবিদ আলেমগণ বিয়ে ভেঙ্গে দেয়ার কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখ করেছেন যে, যদি স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে শ্বেতী রোগ থাকে এবং সেটা বংশধরদের মাঝে সংক্রমিত হওয়ার আশংকা করা হয়।
ইবনে কুদামা (রহঃ) ‘আল-মুগনী’ গ্রন্থে (৭/১৮৫) বলেন:
“এই দোষগুলোর সাথে বিয়ে ভেঙ্গে দেয়াকে সংশ্লিষ্ট করার কারণ হলো এগুলো বিয়ের মাধ্যমে উদ্দিষ্ট উপভোগকে বাধাগ্রস্ত করে। যেহেতু কুষ্ঠ রোগ ও শ্বেতী রোগ অন্তরে অনীহা তৈরী করে; যা এমন ব্যক্তির নিকটবর্তী হতে দেয় না। তাছাড়া ব্যক্তি নিজে ও তার ভবিষ্যত প্রজন্ম এ রোগটিতে সংক্রমিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই এটি উপভোগকে বাধাগ্রস্ত করে।”[সমাপ্ত]
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে নারী কোন জটিলতা ছাড়া তার স্বামীর কাছে তালাক্ব চাইবে তার জন্য জান্নাতের ঘ্রাণ হারাম”।[মুসনাদে আহমাদ (২২৪৪০), সুনানে আবু দাউদ (২২২৬), সুনানে তিরমিযি (১১৮৭), সুনানে ইবনে মাজাহ (২০৫৫); ইবনে খুযাইমা ও ইবনে হিব্বান হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন যেমনটি ইবনে হাজার ‘ফাতহুল বারীতে’ (৯/৪০৩) উল্লেখ করেছেন এবং আলবানী ‘সহিহু আবি দাউদ’ গ্রন্থে ও শুআইব আল-আরনাউত মুসনাদের তাহকীকে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
মানসিক কষ্ট তালাক্ব চাওয়াকে বৈধকারী জটিলতার মধ্যে পড়ে।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব