আমরা ভুলজনিত সিজদাদ্বয় ও সিজদাদ্বয়ের মাঝখানে কী বলব? আমরা ফরয সালাতে যেভাবে বলি সেভাবেই কি বলব?
ভুলজনিত সিজদাদ্বয়ে ও সিজদাদ্বয়ের মাঝখানে কী পড়বেন?
প্রশ্ন: 39399
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
আমাদের জানামতে ভুলজনিত সিজদাদ্বয়ের জন্য বিশেষ কোন যিকির উদ্ধৃত হয়নি। অতবএ, এ সিজদাদ্বয়ের হুকুম নামাযের সিজদার মত হবে। তাই নামাযের সিজদাতে যা যা বলা হয় এ সিজদাদ্বয়েও তা তা বলা হবে। যেমন: سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلى (আমি আমার সুউচ্চ প্রভুর পবিত্রতা ঘোষণা করছি) ও দোয়া। যেহেতু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “বান্দা তার প্রভুর সর্বাধিক নিকটবর্তী হয় সিজদারত অবস্থায়। অতএব, সিজদাতে বেশি বেশি দোয়া কর।”[সহিহ মুসলিম (৪৮২)]
নামাযের সিজদাদ্বয়ের মাঝখানে যা বলা হয় এ সিজদাদ্বয়ের মাঝখানে তা বলা হবে। যেমন: ربِّ اغْفِرْ لِيْ (হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা করুন।)।
ইমাম নববী “আল-মাজমু” গ্রন্থে (৪/৭২) বলেন:
“ভুলজনিত সিজদা দুইটি। এ দুই সিজদার মাঝখানে একটি বৈঠক আছে। এই বৈঠকে ইফতিরাশ (ডান পা খাড়া রেখে, বাম পা বিছিয়ে এর উপর বসা) পদ্ধতিতে বসা এবং সিজদাদ্বয়ের পর সালাম ফিরানো পর্যন্ত তাওয়াররুক (ভূমির উপর নিতম্ব রেখে উভয় পা ডনা দিকে বের করে বসা) পদ্ধতিতে বসা সুন্নত। এ সিজদাদ্বয়ের পদ্ধতি ও যিকির নামাযের সিজদাগুলোর মত। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।”[সমাপ্ত]
‘আশ-শারহুল কাবীর’ গ্রন্থে (৪/৯৬) বলেন:
“মূল নামাযের সিজদাতে যা যা বলেন সাহু সিজদাতেও তা তা বলবেন। এটি নামাযের সিজদার ওপর কিয়াসের ভিত্তিতে।”[সমাপ্ত]
‘আসনাল মাতালিব’ গ্রন্থে (১/১৯৫) বলেন:
“ভুলজনিত সিজদা দুইটি…। এ সিজদাদ্বয়ের পদ্ধতি নামাযের সিজদাদ্বয়ের মত। সিজদাদ্বয়ের মাঝখানে ইফতিরাশ পদ্ধতিতে বসবেন এবং নামাযের সিজদার যিকির এ সিজদাদ্বয়ে পড়বেন।”[সমাপ্ত]
‘মুগনিল মুহতাজ’ গ্রন্থে (১/৪৩৯) বলেন:
“সিজদাদ্বয়ের পদ্ধতি নামাযের সিজদার পদ্ধতির মত। সিজদার ওয়াজিবসমূহ ও মানদুবসমূহের ক্ষেত্রে। যেমন: কপাল রাখা ও ধীরস্থিরতা ইত্যাদি…। এবং এ সিজদাদ্বয়ে নামাযের সিজদার যিকির পড়বেন।
আল-আযরাঈ এ সিজদাদ্বয়ের যিকির সম্পর্কে বলেন: “যা প্রতীয়মান তা হলো: এর যিকির মূল নামাযের সিজদার যিকিরের মত।”[সংক্ষেপে সমাপ্ত]
স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্রে (৬/৪৪৩) এসেছে:
“ভুলজনিত সিজদা ও তেলাওয়াতের সিজদা দানকারী নামাযের সিজদাতে যা যা বলেন তাই বলবেন: سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلى (আমার সুউচ্চ প্রভুর পবিত্রতা ঘোষণা করছি)। একবার বলা ওয়াজিব। পরিপূর্ণ মাত্রা হচ্ছে: ন্যূনতম তিনবার বলা। সিজদাতে সাধ্যমত শরয়ী দোয়াগুলো পড়া মুস্তাহাব।”[সমাপ্ত]
কোন কোন আলেম বলেন: " سُبْحَانَ مَنْ لا يَنَامُ وَلا يَسْهُو "(আমি সেই সত্তার পবিত্রতা ঘোষণা করছি যিনি ঘুমান না এবং ভুলে যান না।) কিন্তু হাফেয ইবনে হাজার ‘আত-তালখীস’ গ্রন্থে (২/১২) মন্তব্য করেছেন: আমি এর (পূর্বোক্ত দোয়ার) কোন ভিত্তি পাইনি।[সমাপ্ত]
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব