সহিহ বুখারীতে দুটো হাদিস রয়েছে; ফাতহুল বারীর সংখ্যায়ন অনুযায়ী ৬৪৫ নং ও ৬৪৬ নং। ৬৪৫ নং হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “ব্যক্তিগত নামাযের ওপর জামাতে নামাযের মর্যাদা ২৭গুণ”। আর ৬৪৬ নং হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “ব্যক্তিগত নামাযের ওপর জামাতে নামাযের মর্যাদা ২৫ গুণ”। আশা করি আপনারা ব্যাখ্যা দিবেন ও স্পষ্ট করবেন।
ব্যক্তিগতভাবে নামায আদায়ের ওপর জামাতে নামায আদায়ের ফযিলত সংক্রান্ত হাদিসগুলোর মাঝে সমন্বয়
প্রশ্ন: 43147
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
প্রথম হাদিসটি আব্দুল্লাহ্ বিন উমর (রাঃ) এর হাদিস। এটি ইমাম বুখারী (৬১৯) ও ইমাম মুসলিম (৬৫০) বর্ণনা করেছেন। হাদিসটির ভাষ্য হচ্ছে: صلاة الجماعة أفضل من صلاة الفذ بسبع وعشرين درجة (ব্যক্তিগত নামাযের চেয়ে জামাতে নামায ২৭ গুণ বেশি উত্তম)।
আর দ্বিতীয় হাদিসটি আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) এর হাদিস। সেটি ইমাম বুখারী (৬১৯) বর্ণনা করেছেন। হাদিসটির ভাষ্য হচ্ছে: صلاة الجماعة تفضل صلاة الفذ بخمس وعشرين درجة (ব্যক্তিগত নামাযের ওপর জামাতে নামাযের মর্যাদা ২৫ গুণ)।
আলেমগণ এ হাদিসদ্বয়ের মাঝে সমন্বয় করেছেন। ইমাম নববী বলেন: হাদিসদ্বয়ের মধ্যে সমন্বয়ের তিন পদ্ধতি:
এক: দুটো হাদিসের মধ্যে কোন সংঘর্ষ নেই। যেহেতু কম সংখ্যা উল্লেখ বেশি সংখ্যা উল্লেখকে নাকচ করে না। আর উসুলবিদদের নিকট সংখ্যাগত মর্ম বাতিল।
দুই: প্রথমে তিনি কম সংখ্যাটির কথা জানিয়েছেন। এরপর আল্লাহ্ তাআলা তাঁকে অতিরিক্ত ফজিলতের কথা জানালে তখন তিনি সেটি অবহিত করেন।
তিন: মুসল্লি ও নামাযের অবস্থাভেদে এ ফজিলতের তারতম্য ঘটে। কারো কারো নামায হয় ২৫ গুণ। আর কারো কারো নামায হয় ২৭ গুণ। এটি নামাযের পূর্ণতা, নামাযের কাঠামাগুলো পরিপূর্ণভাবে রক্ষা করা, নামাযের একাগ্রতা, মুসল্লিদের সংখ্যা বেশি হওয়া ও তাদের মর্যাদা উচ্চ হওয়া এবং স্থানের মর্যাদা ইত্যাদিভেদে। আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।[আল-মাজমু (৪/৮৪)]
এগুলো ছাড়াও হাদিসদ্বয়ের মাঝে সমন্বয়ের আরও কিছু দিক রয়েছে। এর কোন কোনটি পূর্বোক্ত দিকগুলোর শাখা। ইবনে হাজার (রহঃ) ফাতহুল বারী গ্রন্থে (২/১৩২) অন্য একটি দিককে প্রাধান্য দিয়েছেন যা ইমাম নববী উল্লেখ করেননি। সেটি হচ্ছে: সশব্দে তেলাওয়াতকৃত নামাযের জন্য ২৭ গুণ; আর চুপে চুপে তেলাওয়াতকৃত নামাযের জন্য ২৫ গুণ।
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব