0 / 0

ইহরাম অবস্থায় বেবি ক্যারিয়ার পরা

প্রশ্ন: 60186

ফরয উমরা আদায়কালে বেবি ক্যারিয়ার পরার হুকুম কি; যেটি গায়ে ঝুলানো হয়। ইংরেজীতে যেটাকে Kangoro বলা হয়?

উত্তর

আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা

ইহরাম অবস্থায় বেবি ক্যারিয়ার পরতে কোন আপত্তি নেই। কেননা এটি ইহরাম অবস্থায় নিষেধাজ্ঞা উদ্ধৃত হয়েছে এমন কোন পোশাক নয় এবং নিষেধাজ্ঞা উদ্ধৃত পোশাকগুলোর অধিভুক্তও নয়।

এটি পানির মশক বা টাকাপয়সার থলে বহন কিংবা বুকের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে পিঠের ওপর জিনিসপত্র বহনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। এতে নিষিদ্ধ কিছু নেই; সেই আলোচনা সামনে আসছে।

যে পোশাকগুলো পরা মুহরিমের জন্য নিষিদ্ধ সেগুলো হচ্ছে: জামা, পায়জামা, বুরনুস (এক ধরণের প্রশস্ত জামা যার সাথে মাথা ঢাকার অংশও যুক্ত থাকে), পাগড়ী, খুফ্‌ফ (চামড়ার মোজা তথা পায়ের ওপর চামড়ার তৈরী যা পরা হয়)।

এর পক্ষে প্রমাণ হচ্ছে বুখারী (৫৮০৫) ও মুসলিম (১১৭৭) কর্তৃক সংকলিত আব্দুল্লাহ্‌ বিন উমর (রাঃ) এর হাদিস; তিনি বলেন: এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল: ইয়া রাসূলুল্লাহ্‌! আমরা যখন ইহরাম করি তখন আপনি আমাদেরকে কি পরার নির্দেশ দেন? তিনি বললেন: আপনারা কামিজ পরবেন না, পায়জামা পরবেন না, পাগড়ী পরবেন না, বুরনুস পরবেন না, চামড়ার মোজা পরবেন না। তবে কারো যদি জুতা না থাকে তাহলে তিনি টাকনুদ্বয়েরর নীচের অংশে মোজা পরবেন এবং এমন কোন পোশাক পরবেন না যাতে জাফরান বা ওয়ারস (একজাতীয় সুগন্ধি উদ্ভিদ) লাগানো হয়েছে

এই নিষেধাজ্ঞার অধিভুক্ত হবে যা কিছু এর সমজাতীয়। যেমন- জুব্বা, আবায়া (জামার উপর পরিধেয়), আন্ডারওয়্যার, টুপি, কাপড়ের মোজা। তথা শরীরের অবয়ব অনুযায়ী কিংবা শরীরের অংশ বিশেষের অবয়ব অনুযায়ী প্রত্যেক যে পোশাক তৈরীকৃত, সাধারণত যেটা পরা হয়।

শাইখ বিন বায (রহঃ) ইহরামকারীর জন্য নিষিদ্ধ পোশাক বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন: “উল্লেখিত হাদিস থেকে পরিস্কার হয় যে, মাখীত (সেলাইকৃত) দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে: যা কামিজের মত গোটা দেহের অবয়ব অনুযায়ী সেলাই করা হয়েছে কিংবা বুনন করা হয়েছে। কিংবা গেঞ্জির মত যা দেহের উপরাংশের অবয়ব অনুযায়ী সেলাই করা হয়েছে কিংবা বুনন করা হয়েছে। কিংবা সেলোয়ারের মত যা দেহের নিম্নাংশের অবয়ব অনুযায়ী সেলাই করা হয়েছে কিংবা বুনন করা হয়েছে। এর অধিভুক্ত ধরা হবে হাতমোজা বা পা-মোজার মত যা কিছু হাতের অবয়ব অনুযায়ী সেলাই করা হয়েছে কিংবা বুনন করা হয়েছে।”[মাজমুউ ফাতাওয়াশ শাইখ বিন বায (১৭/১১৮)]

শাইখ ইবনে উছাইমীন (রহঃ) বলেন: “যদি কোন ব্যক্তি তলোয়ার বা পিস্তল ঝুলান তাহলে সেটি জায়েয হবে। কেননা সেটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সরাসরি ভাষ্যের গণ্ডিতে পড়ে না কিংবা ভাষ্যের ভাবের গণ্ডিতেও পড়ে না। যদি কেউ বেল্ট দিয়ে তার পেট বাঁধে তাহলে সেটি জায়েয হবে। যদি কেউ তার কাঁধে পানির মশক বাঁধে কিংবা টাকাপয়সা রাখার থলে বাঁধে, তাহলে সেটিও জায়েয হবে। মোটকথা হলো: যা কিছু পরা হারাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি একটি করে সেগুলো উল্লেখ করেছেন। আর যা কিছু উদ্ধৃত পোশাকগুলোর ভাষ্যের ভাবার্থভুক্ত আমরা সেগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করেছি। আর যা কিছু এর ভাষ্যের ভাবের আওতায় পড়ে না সেটিকে এর অধিভুক্ত করিনি। আর যে পোশাকের বিষয়ে আমরা সন্দিহান সেটিকে আমরা এ মূলনীতির অধিভুক্ত করেছি: “মূল বিধান হচ্ছে বৈধতা।”[আল-শারহুল মুমতি (৭/১৫২)]

তাই প্রশ্নে উল্লেখিত বেবি ক্যারিয়ার শাইখ কর্তৃক উল্লেখকৃত পানির মশক কাঁধে ঝুলানোর চেয়ে বেশি কিছু নয়। অনুরূপভাবে এটি জিনিসপত্র রশি দিয়ে বা এ জাতীয় অন্য কিছু দিয়ে বেঁধে বহন করার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

আলেমগর্ণ এই মর্মে দ্ব্যর্থহীনভাবে উল্লেখ করেছেন যে, ইহরামকারীর জন্য পিঠে জিনিসপত্র বহন করা জায়েয। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে তিনি রশি দিয়ে এটাকে বুকের সাথে বাঁধতে পারেন। কিছুটা দূরবর্তী হলেও এটি বেবি ক্যারিয়ারের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

দেখুন: মানহুল জালিল শারহু মুখতাছারিল খালিল (২/৩০৮)

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android