আমি শখবশতঃ ও রোজগারের উৎস হিসেবে নিজ হাতে কিছু উৎসব-কার্ড তৈরী করি। আমি জানতে চাই— এ ধরণের কাজ কি বিদাত? আমি জেনেছি যে, সবকিছুর মূলগত বিধান হচ্ছে— বৈধতা; যতক্ষণ না এর হারাম হওয়াটা সাব্যস্ত হয়। আমার খুব জানা প্রয়োজন, আমি যা করছি সেটা কি ভুল; না ঠিক?
ঈদ-উৎসব উপলক্ষে কিছু কার্ড তৈরী করে বিক্রি করা কি জায়েয?
প্রশ্ন: 65943
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
হ্যাঁ; লেনদেনগুলোর সাধারণ বিধান হচ্ছে— বৈধতা ও জায়েয হওয়া। তাই দলিল ছাড়া কোন লেনদেনকে হারাম বলা জায়েয নয়। আপনি উৎসব উপলক্ষে যে কার্ডগুলো তৈরী করেন সে উৎসবগুলোর ভিন্নতার ভিত্তিতে বিধানও ভিন্ন হবে। আপনি কার্ড তৈরী করছেন সেটা যদি কাফেরদের কোন উৎসব-কার্ড হয় যেমন— বড়দিন কিংবা কোন বিদাতী উৎসব হয় যেমন— ঈদে মিলাদুন্নবী, মিরাজ দিবস কিংবা কাফেরদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ কোন উৎসব যেমন— জাতীয় দিবস, জন্মদিবস ইত্যাদি তাহলে এ ধরণের কার্ড প্রস্তুত করা ও বিক্রি করা জায়েয হবে না। এবং আপনার থেকে এগুলো ক্রয় করাও কারো জন্য জায়েয হবে না। কেননা এর মাধ্যমে শরিয়ত বিরোধী সে সব উৎসবের প্রতি সম্মতি দেয়া হয় এবং গুনাহর কাজে সহযোগিতা করা হয়।
আর যদি সেগুলো শরিয়ত অনুমোদিত উৎসব হয়; উল্লেখ্য ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা ছাড়া শরিয়ত অনুমোদিত আর কোন উৎসব নেই; তাহলে এ উৎসবদ্বয় উপলক্ষে কার্ড তৈরী করা বৈধ এবং আপনার জন্য সেগুলো বিক্রি করাও বৈধ। তবে এ শর্তে যে, আপনি শরিয়তসম্মত ভাষা কিংবা বৈধ ভাষা ব্যবহার করবেন। যেমন- تقبل الله منا ومنك (আল্লাহ্ আমাদের ও আপনার আমল কবুল করে নিন) কিংবা এ জাতীয় অন্য কোন ভাষা।
ইতিপূর্বে 947 নং প্রশ্নোত্তরে খ্রিস্টানদের উৎসব উপলক্ষে উৎসব-কার্ড বিক্রি করা হারাম উল্লেখ করা হয়েছে। এবং 50074 নং প্রশ্নোত্তরে মিলেনিয়াম উদযাপনের প্রোগ্রামগুলোতে যোগদান করা সম্পর্কে "ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটি"-এর আলেমগণের বিবৃতি রয়েছে। উক্ত বিবৃতিতে কাফেরদের উৎসব পালনে তাদেরকে সহযোগিতা করা নাজায়েয বলা হয়েছে। "পোশাক তৈরী করা, স্মৃতিবহ সামগ্রী তৈরী করা কিংবা কার্ড ছাপানো" তাদেরকে সহযোগিতা করার মধ্যে পড়বে মর্মে আলেমগণ উল্লেখ করেছেন।
এছাড়া 49014 নং, 49021 নং ও 36442 নং প্রশ্নোত্তরে শরিয়ত অনুমোদিত উৎসব তথা ঈদে শুভেচ্ছা জানানো বৈধতার বিষয় জানতে পারবেন।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব
সংশ্লিষ্ট প্রশ্নোত্তরসমূহ