আমাদের দেশের সরকার আমাদেরকে গাড়ীর ইন্সুরেন্স করতে বাধ্য করে। গাড়ীর মালিক এর থেকে কোন সুবিধা ভোগ করে না। এ গাড়ীটি যদি কাউকে ধাক্কা দেয়, যার ফলে সে ব্যক্তি আহত হয় কিংবা নিহত হয় তখন মৃতব্যক্তি র পরিবার ইন্সুরেন্স কোম্পানীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আহত বা নিহতের পরিবার ক্ষতিপূরণ পায়। এই ক্ষতিপূরণ প্রদানের দ্বারা গাড়ীর মালিকের কোন সুবিধা বা অসুবিধা হয় না। এর হুকুম কী? উল্লেখ্য, মৃতের পরিবার গাড়ীর মালিককে ক্ষমা করে দেয় এবং আমাদের দেশ মানবরচিত আইন দিয়ে শাসিত।
ইন্সুরেন্স কোম্পানি থেকে তারা কি তাদের মৃতব্যক্তির মুত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করবে?
প্রশ্ন: 70318
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
এক:
ট্রেড ইন্সুরেন্স হারাম চুক্তির অন্তর্ভুক্ত। এই ইন্সুরেন্সের যত পদ্ধতি আছে সবগুলো হারাম। কারো জন্য এমন ইন্সুরেন্স করা নাজায়েয; যদি না কেউ একান্ত নিরুপায় না হয়; যেমন জবরদস্তির শিকার হলো। ইতিপূর্বে 8889 নং প্রশ্নোত্তরে এর বিধান উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে দেখুন।
দুই:
ইন্সুরেন্স করা হারাম হওয়ার অর্থ এ নয় যে, ইন্সুরেন্স কোম্পানী থেকে তার প্রাপ্য অধিকার গ্রহণ করা হারাম হবে; যদি ইন্সুরেন্স কোম্পানী যে ব্যক্তি এক্সিডেন্ট করেছে তার পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করার দায়িত্ব নিয়ে থাকে।
অতএব, রোড এক্সিডেন্টের ফলে অনিচ্ছাকৃত হত্যারশিকার ব্যক্তির মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ (দিয়ত) কিংবা আহত ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করতে কোন আপত্তি নেই; এটি গ্রহণ করার জন্য হকদারদেরকে ঘাতকের পক্ষ থেকে কিংবা কোর্টের পক্ষ থেকে যে পক্ষের কাছেই প্রেরণ করা হোক না কেন; সেটা ইন্সুরেন্স কোম্পানি হোক কিংবা অন্য কোন পক্ষ হোক। কেননা দিয়তের দাবীদারগণ ন্যায্য অধিকারের দাবীদার। ইন্সুরেন্স কোম্পানীর সাথে অপর পক্ষের লেনদেন হালাল কিনা সেই দায়িত্ব তাদের নয়।
আমরা শাইখ বিন জিবরীনকে ইন্সুরেন্স কোম্পানী থেকে ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে জবাবে তিনি বলেন: "সেটি জায়েয। কেননা এই কোম্পানীগুলো ইন্সুরেন্সকারী ব্যক্তির পক্ষ থেকে যে ভুল ঘটবে সেটার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। যেহেতু তারা ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করার জন্য দায়বদ্ধ সুতরাং ক্ষতিপূরণ গ্রহণ না করা তাকওয়ার দাবী নয়। যদি দুর্ঘটনার ফলে কারো মৃত্যু ঘটে তাহলে এক্সিডেন্টকারীর উপর ভুলক্রমে হত্যার কাফ্ফারা ছাড়া আর কিছু বর্তাবে না; যদি এক্সিডেন্টটি ভুলক্রমে হয়ে থাকে।"
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব