প্রশ্ন: আমি একজন যুবক মানুষ; বিয়ে করতে যাচ্ছি। আমি যে দেশে বিয়ের আকদ করতে যাচ্ছি সে দেশে তারা ‘ফাতিহা পড়া’ নামক একটি বিষয় করে থাকে। আমাদের দেশে যখন কোন পুরুষ বিয়ে করতে যায় তখন তারা সূরা ফাতিহা পড়ে। এ উদ্দেশ্যে তারা বরের আত্মীয়-স্বজনকে দাওয়াত করে, তাদের জন্য মিষ্টান্ন ও পানীয় পেশ করে। এভাবে ফাতিহা পড়া কি সুন্নত? যদি সুন্নত হয় তাহলে এটা করা দ্বারা কী আরোপিত হয়?
বিয়ের খোতবা পড়াকালে সূরা ফাতিহা পড়া
প্রশ্ন: 76413
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
আলহামদুলিল্লাহ।
বিয়েরআকদকালেকিংবাপ্রস্তাবকালেসূরা ফাতিহাপড়া সুন্নাহনয়; বরং এটিবিদআত।কুরআনেরবিশেষ কোন অংশদিয়ে বিশেষকোন আমল করাদলিল ছাড়াজায়েয নয়।
আবুশামাআল-মাকদিসি‘আল-বায়িস আলইনকারিল বিদাও হাওয়াদিস’গ্রন্থে (১৬৫)বলেন: কোনইবাদতকে বিশেষকোন সময়েরজন্য খাস করা—শরিয়ত যাকরেনি—অনুচিত। কারণবান্দার এধরণের খাসকরার অধিকারনেই। বরং সেটাশরিয়তপ্রণেতারঅধিকার।[সমাপ্ত]
ফতোয়াবিষয়ক স্থায়ীকমিটিরআলেমগণকেজিজ্ঞেস করাহয়েছিল: পুরুষকর্তৃকনারীকে বিয়েরপ্রস্তাবদেয়াকালেসূরা ফাতিহাপড়া কী বিদআত?
জবাবেতাঁরা বলেন:পুরুষ কর্তৃককোন নারীকে বিয়েরপ্রস্তাবদেয়াকালেকিংবা বিয়েরআকদ কালে সূরাফাতিহা পড়াবিদআত।[সমাপ্ত]
এভাবেসূরা ফাতিহাপড়ারপ্রেক্ষিতেবিয়ের আকদসংক্রান্তকোন বিধানআরোপিত হয় না।কারণ সূরাফাতিহা পড়ারমানে এ নয় যে,বিয়ের আকদসম্পন্নহয়েছে। বরংধর্তব্য হবে— অভিভাবক ওসাক্ষীদেরউপস্থিতিতেইজাব (বিয়েরপ্রস্তাবনা) ওকবুল (গ্রহণ)।
সুন্নাহহচ্ছে- বিয়েরখোতবার সময়‘খোতবাতুলহাজাহ’ পড়া।
আব্দুল্লাহবিন মাসউদ(রাঃ) থেকেবর্ণিত যে, তিনিবলেন:রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামবিয়েরক্ষেত্রে ওঅন্যান্য ক্ষেত্রেআমাদেরকে‘খোতবাতুলহাজাহ’(প্রয়োজন পূরণেরখোতবা বাবক্তৃতা)শিখাতেন: ‘ইন্নালহামদালিল্লাহ,নাসতায়িনুহু,ওয়া নাসতাগফিরুহু,ওয়ানাউজুবিহিমিন শুরুরিআনফুসিনা, মানইয়াহদিহিল্লাহুফালামুদিল্লাল্লাহ,ওয়া মানইউদলিল ফালাহাদিয়া লাহ,ওয়া আশহাদু আনলা ইলাহাইল্লাল্লাহ,ওয়া আশহাদুআন্নামুহাম্মাদানআবদুহু ওয়ারাসূলুহ।’(অর্থ- সমস্তপ্রশংসাআল্লাহরজন্য। আমরাতাঁর কাছেই সাহায্যচাই। তাঁরকাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করি।আমাদেরআত্মারঅনিষ্ট থেকে তাঁরকাছে আশ্রয়চাই। আল্লাহযাকে হেদায়েতদেন তাকে পথভ্রষ্টকরার কেউ নেই।আল্লাহ যাকেপথভ্রষ্ট করেনতাকে হেদায়েতদেয়ার কেউনেই। আমিসাক্ষ্যদিচ্ছি যে,আল্লাহ ছাড়াসত্য কোনউপাস্য নেই।আমি আরওসাক্ষ্যদিচ্ছি যে,মুহাম্মদতাঁর বান্দাহও তাঁররাসূল।)
يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُواْ رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍوَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالاً كَثِيراًوَنِسَاء وَاتَّقُواْ اللّهَ الَّذِي تَسَاءلُونَ بِهِ وَالأَرْحَامَ إِنَّ اللّهَكَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيباً
(অর্থ- হেমানুষ! তোমরাতোমাদের রবেরতাকওয়া অবলম্বনকর; যিনিতোমাদেরকে একব্যক্তি থেকেসৃষ্টিকরেছেন ও তারথেকে তারস্ত্রীকেসৃষ্টিকরেছেন এবংতাদের দুজনথেকে বহুনর-নারী ছড়িয়েদেন; আর তোমরাআল্লাহ্রতাকওয়াঅবলম্বন করযাঁর নামেতোমরা একে অপরেরকাছে নিজ নিজহক্ দাবী করএবং তাকওয়াঅবলম্বন কররক্ত-সম্পর্কিতআত্মীয়েরব্যাপারেও।নিশ্চয়আল্লাহ্তোমাদের উপরপর্যবেক্ষক।[সূরনিসা, আয়াত: ০১]
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلاَتَمُوتُنَّ إِلاَّ وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ
(অর্থ- হেমুমিনগণ!তোমরাযথার্থভাবেআল্লাহ্রতাকওয়াঅবলম্বন করএবং তোমরামুসলিম (পরিপূর্ণআত্মসমর্পণকারী)না হয়ে কোনঅবস্থায় মৃত্যুবরণকরো না”[সূরাআলে-ইমরান,আয়াত: ১০২]
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوااللَّهَ وَقُولُوا قَوْلاً سَدِيداً يُصْلِحْ لَكُمْ أَعْمَالَكُمْ وَيَغْفِرْلَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَمَن يُطِعْ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزاًعَظِيماً
(অর্থ-হে ঈমানদারগণ!তোমরাআল্লাহ্রতাকওয়াঅবলম্বন করএবং সঠিক কথাবল; তাহলে তিনিতোমাদের জন্য তোমাদেরকাজ সংশোধনকরবেন এবংতোমাদের পাপ ক্ষমাকরবেন। আর যেব্যক্তিআল্লাহ্ ওতাঁর রাসূলেরআনুগত্য করে,সে অবশ্যইমহাসাফল্যঅর্জনকরবে।”[সূরাআহযাব, আয়াত:৭০-৭১]
[সুনানেআবু দাউদ (২১১৮),আলবানী ‘সহিহআবু দাউদ’গ্রন্থেহাদিসটিকে ‘সহিহ’আখ্যায়িতকরেছেন]
লোকেরাএ সুন্নতকেবাদ দিয়েবিদআতকেআঁকড়ে ধরেছে।
আমরাআল্লাহর কাছেপ্রার্থনাকরি তিনি যেনমুসলমানদেরকেতাদের আসলদ্বীনের দিকেউত্তমরূপেফিরিয়ে আনেন।
আল্লাহইভাল জানেন।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব