ডাউনলোড করুন
0 / 0

পানি ও পাথর দিয়ে শৌচকার্য করা

প্রশ্ন: 8003

আমি সারাদিন মাদরাসায় থাকি। সেখানে টয়লেটে যাই। পেশাব-পায়খানা করার জন্য বাসায় যেতে পারি না। আমি কি অযু করে নামায পড়ে নিব? নাকি নামায ছেড়ে দিয়ে পরে পড়ে নিব?

আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা

একজন মানুষ হাজত সারার (পেশাব-পায়খানা করার) পর হয় পানির সাহায্যে নাপাকি থেকে পবিত্রতা অর্জন করবে নতুবা পানি ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে নাপাকি দূর করবে। পানি দিয়ে নাপাকি দূর করা সর্বোত্তম ও পূর্ণাঙ্গ। আর পানি ছাড়া অন্য উপকরণ যেগুলো নাপাকি দূর করার উপযুক্ত, যেমন: টয়লেট টিস্যু, ন্যাকড়া বা পাথর ইত্যাদি।

শাইখ ইবনে উছাইমীন বলেন:

ব্যক্তি হাজত সারার পর তিন অবস্থার কোন এক অবস্থা অনুসরণ করতে পারে:

এক. পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন (শৌচকার্য) করা। এটা জায়েয। দলীল হলো আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদীস, তিনি বলেন: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজত সারার পর আমি আর আমার মত এক বালক পানির লোটা ও বর্শা বয়ে নিয়ে যেতাম। এরপর তিনি পানি দিয়ে শৌচকার্য করতেন[বুখারী (১৪৯) ও মুসলিম (২৭১) হাদীসটি বর্ণনা করেন]

যুক্তি হলো: নাপাকি মূলতঃ পানির দিয়ে দূর করা হয়। আপনি যেমন পানি দিয়ে নিজের পা থেকে নাপাকি দূর করেন তেমনি আপনার শরীর থেকে নির্গত বর্জ্য নাপাকিও আপনি পানি দিয়ে দূর করবেন।

দুই. পাথর দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা। পাথর দিয়ে শৌচকার্য করা যথেষ্ট। এর পক্ষে দলীল হলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা ও আমল।

কথা হলো: সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদিস: ‘আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে তিনটির কম পাথর দিয়ে শৌচকার্য করতে নিষেধ করেছেন।’ [মুসলিম (২৬২) হাদীসটি বর্ণনা করেন]

কাজ হলো: ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদীস: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন শৌচকার্যে যাওয়ার সময় আমাকে তিনটি পাথর কুড়িয়ে দেয়ার নির্দেশ দিলেন। আমি দুটি পাথর পেলাম। আরেকটি খুঁজলাম; কিন্তু পেলাম না। তাই একখণ্ড শুকনো গোবর নিয়ে তার কাছে গেলাম। তিনি পাথর দুটি নিলেন এবং গোবরখণ্ড ফেলে দিয়ে বললেন: “এটা অপবিত্র।”[বুখারী (১৫৫) হাদীসটি বর্ণনা করেন]

এবং আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদীস যে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য কিছু পাথর সংগ্রহ করে একটি কাপড়ে করে নিয়ে এলেন। এরপর সেগুলো তাঁর কাছে রেখে চলে গেলেন।[বুখারী (১৫৪) হাদিসটি বর্ণনা করেন] এ হাদিসটি পাথর দিয়ে শৌচকার্য বৈধ হওয়ার প্রমাণ করে।

তিন. প্রথমে পাথর দিয়ে, তারপর পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন (শৌচকার্য) করা।

এটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে মর্মে আমার জানা নেই। তবে নিঃসন্দেহে এ পদ্ধতিতে পবিত্রতা অর্জন অধিক পূর্ণাঙ্গ।[আশ-শারহুল মুমতি‘ (১/১০৩-১০৫)]

পূর্বোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে শৌচকার্য করতে পারছেন না বলে আপনার জন্য সালাত ত্যাগ করা ও বিলম্ব করার কোনো ওজর নেই। কারণ আপনি টিস্যু বা অনুরূপ কিছু দিয়ে নাপাকি দূর করতে ও পবিত্র হতে পারেন। প্রত্যেকে নিজের পকেটে কিছু টিস্যু রাখতে পারেন যেগুলো দিয়ে তিনি পরিষ্কার হবেন। তাছাড়া প্রশ্ন থেকে এটা স্পষ্ট হয়নি যে, টয়লেট সারার পর পানি দিয়ে শৌচ করতে আপনার বাধা কোথায়? যেহেতু আপনি বলেছেন: আমি কি অযু করে নামায পড়ে নিব; নাকি নামায ছেড়ে দিব? তার মানে পানি আছে। সুতরাং আপনি চাইলে পানি নিয়ে টয়লেটে গিয়ে শৌচকার্য করতে পারেন। যদি এটা না করতে পারেন তাহলে টিস্যু বা অনুরূপ কিছু দিয়ে নাপাকি দূর করা আপনার ওপর আবশ্যক। তারপর আপনি অযু করে নামায পড়বেন। ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত নামায দেরী করা আপনার জন্য জায়েয হবে না।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android
at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android