প্রশ্ন: কোন কাফের শাসকের হাতে বাইআত করা কি জায়েয?
কাফের শাসকের হাতে বাইআত করা কি জায়েয?
প্রশ্ন: 82681
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
আলহামদুলিল্লাহ।
বাইআতহচ্ছে-আনুগত্য করারপ্রতিশ্রুতি।এটিবাইআতকারী ওবাইআতগ্রহণকারীরমধ্যে আইনানুগচুক্তি।বাইআতগ্রহণকারীহচ্ছে- আমীরকিংবা খলিফা।
আহলেহিল্ল ওয়া আকদকর্তৃক খলিফামনোনীত করারমাধ্যমেইবাইআত সংঘটিতহয়; আহলেহিল্ল ওয়া আকদবলা হয় ঐসমস্ত ব্যক্তিবর্গকেযাদের মধ্যেআমানতদারিতাও নীতিনির্ধারণেরযোগ্যতা রয়েছে।
‘আল-মাওসুআআল-ফিকহিয়্যা’গ্রন্থে(৯/২৭৪) এসেছে-
বাইআতেরপারিভাষিকসংজ্ঞায় ইবনেখালদুন তাঁর ‘মুকাদ্দিমা’গ্রন্থে বলেন:আনুগত্যেরপ্রতিশ্রুতিগ্রহণ; যেনবাইআতকারীআমীরের সাথে এমর্মে চুক্তিবদ্ধহচ্ছেন যে,তার নিজেরব্যাপারে ওমুসলমানদেরব্যাপারেসিদ্ধান্তদেয়ার অধিকারআমীরকেপ্রদান করা হল।এ ব্যাপারেতার সাথে দ্বন্দকরবে না।এমনকিসুখ-দুঃখসর্বাবস্থায় আমীরকর্তৃক যেদায়িত্বপ্রদান করা হয়সেক্ষেত্রেতার আনুগত্যকরবে। লোকেরাযখন আমীরেরহাতে বাইআতকরত: তখন তারা আমীরেরহাতে হাতরাখত। তাই এটিযেন বিক্রেতাও ক্রেতারচুক্তির মত।হাতে হাত রেখেমুসাফাহা এরমাধ্যমে বাইআতসংঘটিতহয়।[সমাপ্ত]
উল্লেখিতগ্রন্থে(৯/২৭৮) আরওএসেছে:
আহলেহিল্ল ওয়া আকদকর্তৃক ইমাম(রাষ্ট্রপ্রধান)মনোনীত করা ওতাদেরবাইআতেরমাধ্যমেইতাঁর ইমামত ওখিলাফতেরবাইআত সংঘটিতহয়। আহলেহিল্ল ওয়া আকদহচ্ছে- আলেমশ্রেণী ও নীতিনির্ধারকশ্রেণী।যাদের মাঝেইলমের সাথে আমানতদারিতা,ন্যায়পরায়নতাও সিদ্ধান্তদেয়ার যোগ্যতারয়েছে।[সমাপ্ত]
আহলেহিল্ল ওয়া আকদএর সদস্যদেরমধ্যে যেমন কিছুগুণাবলি থাকাশর্ত ঠিকতেমনি বাইআতগ্রহণকারীখলিফারমধ্যেও কিছুগুণাবলি থাকাশর্ত। এরমধ্যে কিছুগুণাবলি নিয়েমতভেদ আছে; আর কিছুগুণাবলিসর্বসম্মত।খলিফা মুসলিমহতে হবে এব্যাপারেআলেমদের কারোমাঝে কোন দ্বিমতনেই। কারণবাইআত গ্রহণকরার দাবী হচ্ছে-আল্লাহর আইনবাস্তবায়নকরা, দণ্ডবিধিকায়েম করা, রাষ্ট্রেরসীমান্তসংরক্ষণ করা।তাই একজন কাফেরকিভাবেআল্লাহর আইনকায়েম করবেএবং এ কাজগুলোবাস্তবায়নকরবে?! বরঞ্চযে খলিফা মুসলিমছিল; কিন্তুসে কাফের হয়েগেছে তাহলেতার কুফরীরকারণে তাকেপদচ্যুত করাহবে।
ইবনেহাজম (রহঃ)খলিফা হওয়ারশর্তগুলোউল্লেখ করতেগিয়ে বলেন:
মুসলিমহওয়া। কারণআল্লাহ তাআলাবলেন: “আল্লাহকখনইমুসলিমদেরবিরুদ্ধেকাফেরদেরজন্য কোন পথরাখবেননা।”।[সূরানিসা, আয়াত:১৪১] খিলাফতহচ্ছে- সবচেয়েবড় পথ। এছাড়াওআল্লাহ আহলেকিতাবদেরকেছোট করে রাখারএবং তাদেরনিকট থেকেজিযিয়া আদায়করার নির্দেশদিয়েছেন।[সমাপ্ত;আল-ফাসলু ফিলমিলাল ওয়াল আহওয়াওয়ান নিহাল(৪/১২৮)]
ইমাম নববীবলেন:
কাযীবলেন:আলেমগণেরইজমা অনুযায়ীকোন কাফেরেরইমামত ওখিলাফতসংঘটিত হবেনা। যদি খলিফারমধ্যেনতুনভাবেকুফরী প্রবেশকরে তাহলে তাকেপদচ্যুত করাহবে।[সমাপ্ত;শারহু মুসলিম(১২/২২৯)]
আল-মাওসুআআল-ফিকহিয়্যা(৬/২১৮) তেএসেছে:
ফিকাহবিদগণখলিফা হওয়ারজন্য কতগুলোশর্ত করেথাকেন। এরমধ্যে কিছুশর্ত আছেসর্বসম্মত; আরকিছু শর্তনিয়ে মতভেদআছে। খলিফাহওয়ার জন্যসর্বসম্মতশর্তের মধ্যেরয়েছে:
১. ইসলাম।এটি সাক্ষ্যগ্রহণ করা ওকারো অভিভাবকত্বগ্রহণ করারক্ষেত্রেওশর্ত। যেকাজগুলোখিলাফতেরচেয়ে অনেক কমগুরুত্বপূর্ণ।আল্লাহ তাআলাবলেন: “আল্লাহকখনইমুসলিমদেরবিরুদ্ধেকাফেরদেরজন্য কোন পথরাখবেননা।”।[সূরানিসা, আয়াত:১৪১] যেমনটিইবনে হাজমবলেছেন: ইমামতবা খিলাফতহচ্ছে- সবচেয়েবড় পথ এবংযাতে করে মুসলিমখলিফামুসলমানদেরসুবিধাগুলোকেঅগ্রাধিকারদিতেপারে।[সমাপ্ত]
উপরোক্তআলোচনারভিত্তিতে:কাফের শাসকেরহাতে বাইআতকরা নাজায়েয।
আল্লাহইভাল জানেন।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব