আমি কুরআনে কারীম মুখস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি; ইনশাআল্লাহ্। কার্যতঃ আমি দেড় পারা মুখস্ত করেছি। কিন্তু আমাকে আমার স্বামী বললেন: আমার উপর ওয়াজিব হলো তাজবীদের বিধিবিধান মুখস্ত করা; এরপর আমি কুরআন মুখস্ত করব। প্রশ্ন হলো আমি প্রথমে কুরআন মুখস্ত করা; তারপর তাজবীদের বিধি-বিধান শেখা কি ভুল?
যে নারী কুরআন শরীফ মুখস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে; কিন্তু তাকে বলা হয়েছে আগে তাজবীদ শিখ
প্রশ্ন: 84312
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
কুরআনে কারীম মুখস্ত করা মহান নেয়ামতগুলোর মধ্যে অন্যতম। কেননা এই নেয়ামতটি হলো: আল্লাহ্ তাআলার বাণী মুখস্ত করা; যে বাণীকে তিনি মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে এবং অন্তরসমূহের জন্য নিরাময়ক হিসেবে নাযিল করেছেন। আপনার এই সিদ্ধান্ত তাওফিকপ্রাপ্ত সিদ্ধান্ত। আমরা আল্লাহ্র কাছে দোয়া করছি যে, তিনি যেন আপনি যে কল্যাণের ইচ্ছা করেছেন আপনাকে সেটি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেন।
তাজবীদের বিধি-বিধান শেখা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর উপর হরফগুলোর সঠিক উচ্চারণ, তেলাওয়াতের সৌন্দর্য বর্ধন ও নির্ভুল পঠন নির্ভর করে। কিন্তু আমরা মনে করি না যে, আপনি মুখস্তকরণ বন্ধ করে রাখবেন। বরঞ্চ আপনি উভয়টির মাঝে সমন্বয় করুন। আপনি যা মুখস্ত করবেন সেটা প্রথমে সঠিকভাবে পড়ার উপর গুরুত্ব দিন। উত্তম হলো তাজবীদে পারদর্শী কোন শিক্ষিকার কাছে পড়া। যদি তা সম্ভবপর না হয় তাহলে রেকর্ডকৃত ক্যাসেট ও কুরআন মুখস্তকরণ সপ্টওয়্যারগুলোর সহযোগিতা নিয়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে শেখা। এ সপ্টওয়্যারগুলোতে তাজবীদ শেখারও ব্যবস্থা আছে। এটি সুবিদিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরআন পড়া ও মুখস্ত করার আগে সাহাবীদেরকে তাজবীদ শেখার দিক নির্দেশনা দেননি। কিন্তু তিনি তাদেরকে উবাই বিন কাব (রাঃ) ও ইবনে মাসউদ (রাঃ) প্রমুখ কুরআন পাঠে পারদর্শীদের কাছ থেকে কুরআন শেখার দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। এতে কুরআন পাঠ, মুখস্তকরণ ও তাজবীদ শেখার মধ্যে সমন্বয় রয়েছে।
কুরআন মুখস্তকরণের ক্ষেত্রে মানুষের রীতি এখনও এভাবেই বিদ্যমান। তারা প্রথমে কুরআন মুখস্ত করা শুরু করে; হরফগুলোর সঠিক উচ্চারণ ও হরকতগুলো চেনার উপর গুরুত্ব দেয়ার সাথে। এরপর মুখস্ত শেষ করার পর কিংবা ভাল একটা অংশ মুখস্ত করার পর তারা তাজবীদের অন্যান্য বিধি-বিধান ও খুঁটিনাটি বিষয়গুলো শেখে।
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব
সংশ্লিষ্ট প্রশ্নোত্তরসমূহ