আমি উমরা আদায় করার জন্য আমার স্ত্রীকে সাথে নিয়ে মক্কাতে ছিলাম। বাসায় ফেরার পরে আমাদের মাঝে সহবাস সংঘটিত হয়েছে। এরপর আমার স্ত্রীর মনে পড়েছে যে, সে তখনও হালাল হয়নি? এর হুকুম কি?
জনৈক নারী উমরা করেছেন, কিন্তু চুল কাটতে ভুলে গেছেন এবং তার স্বামী তার সাথে সহবাসে লিপ্ত হয়েছে
প্রশ্ন: 95860
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
মাথা মুণ্ডন করা কিংবা মাথার চুল ছোট করা উমরার একটি ওয়াজিব কাজ। যে ব্যক্তি তা পালন করতে ভুলে গেছেন তার যখনই স্মরণ পড়ে তখনই তিনি তা পালন করবেন। যদি এটি পালন করার আগে অজ্ঞতাবশতঃ কিংবা ভুলবশতঃ কোন নিষিদ্ধ কাজে লিপ্ত হয়ে যান তাহলে অগ্রগণ্য মতানুযায়ী তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না।
উপরোক্ত বক্তব্যের আলোকে এখন আপনার স্ত্রীর উপর চুল কাটা আবশ্যক। চুল কাটার মাধ্যমে আপনার স্ত্রী হালাল হবেন। সহবাস সংঘটিত হওয়ার কারণে তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না। কেননা তিনি এতে লিপ্ত হয়েছেন এই মনে করে যে, তিনি উমরা থেকে হালাল হয়েছেন।
শাইখ ইবনে উছাইমীন (রহঃ) এমন নারী সম্পর্কে বলেন যার উমরার কাজ শেষ হয়নি:
“পক্ষান্তরে, তিনি যে নিষিদ্ধ কার্যাবলীতে লিপ্ত হয়েছেন; ধরে নিই যে, তার স্বামী তার সাথে সহবাস করেছে (সহবাস সবচেয়ে জঘন্য নিষিদ্ধ কাজ) তদুপরি তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না। কেননা সেই নারী অজ্ঞ। প্রত্যেক যে ব্যক্তি অজ্ঞতাবশতঃ কিংবা ভুল করে কিংবা জবরদস্তির শিকার হয়ে ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ এমন কোন কাজ করে; তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না।”[সমাপ্ত][মাজমুউ ফাতাওয়া ইবনে উছাইমীন (২১/৩৫১)]
আর কোন কোন আলেমের মতে, সাঈ করার পর মাথার চুল কামানো বা ছোট করার আগে সহবাসে লিপ্ত হলে ফিদিয়া দেয়া আবশ্যক হবে। এমনকি সেটা যদি ভুলবশতঃ বা অজ্ঞতাবশতঃ ঘটে তদুপরি। এই ফিদিয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তির এখতিয়ার করার সুযোগ থাকবে। কষ্টদায়ক জিনিস দূর করার ফিদিয়ার মত। যেমন যে ব্যক্তি উকুনের কারণে বা এ জাতীয় অন্য কোন কারণে কষ্ট পেয়ে চুল কামিয়ে ফেলেন তাকে ফিদিয়া দিতে হয়। নিম্নোক্ত আয়াতটি যে ফিদিয়ার পক্ষে প্রমাণ বহন করছে: “অতঃপর তোমাদের মধ্যে যদি কেউ অসুস্থ হয় বা মাথায় কষ্টদায়ক কিছু হয় তবে সিয়াম কিংবা সদাকা কিংবা পশু যবেহ দ্বারা তার ফিদিয়া দিবে।”[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১৯৬]
সুতরাং এমন ব্যক্তি তিনদিন রোযা রাখবেন কিংবা ছয়জন মিসকীনের প্রত্যেককে অর্ধ সা’ গম বা এ জাতীয় কিছু দান করবেন কিংবা একটি ভেড়া বা ছাগল জবাই করে মক্কার হারাম এলাকার মিসকীনদের মাঝে বণ্টন করবেন।
[দেখুন: শারহুর মুনতাহাল ইরাদাত (১/৫৫৬)]
যদি আপনার স্ত্রী সতর্কতাস্বরূপ শেষোক্ত এই অভিমতের উপর আমল করেন তাহলে সেটি ভাল। সেক্ষেত্রে তিনি তিনদিন রোযা রাখবেন কিংবা ছয়জন মিসকীনকে খাদ্য দিবেন কিংবা একটি ভেড়া বা ছাগল জবাই করে হারাম এলাকার মিসকীনদের মাঝে বণ্টন করবেন।
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব