আমি জনৈক আলেমের কাছে শুনেছি যে, কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার পক্ষে ওহির দলিল ছাড়া অন্য কোন কিছু দিয়ে দলিল দেয়া যাবে না। এ কথা কি সঠিক?
কিয়ামতের জ্ঞান গায়েবের অন্তর্ভুক্ত। যে গায়েবের জ্ঞান আল্লাহ্র জন্য খাস। এর জ্ঞান তিনি কোন নৈকট্যশীল ফেরেশতা কিংবা প্রেরিত নবীকে অবহিত করেননি। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “তারা আপনাকে কিয়ামত সম্বন্ধে প্রশ্ন করে, ‘এর নির্ধারিত সময় কখন?’ বলুন: ‘এর জ্ঞান শুধু আমার রবের কাছে রয়েছে। তিনি ছাড়া কেউই এর সঠিক সময় বলতে পারে না। আসমানসমূহ ও যমীনে এটি একটি গুরুতর বিষয়। তোমাদের কাছে তা আকস্মিকভাবেই আসবে।’ তারা আপনার কাছে (এমনভাবে) প্রশ্ন করে যেন আপনি সে সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত। বলুন: ‘বিষয়টি কেবল আল্লাহ্ই জানেন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ (তা) জানে না।”[সূরা আরাফ, আয়াত: ১৮৭]
সহিহ মুসলিমের হাদিসে এসেছে যখন জিব্রাইল আলাইহিস সালাম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন তখন তিনি বলেছেন: “যাকে প্রশ্ন করা হয়েছে তিনি প্রশ্নকারীর চেয়ে বেশি জানেন না”। কিন্তু আল্লাহ্ তাআলা কিয়ামতের কিছু আলামত দিয়েছেন যে আলামতগুলো কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার প্রমাণ বহন করে। এই আলামতগুলোও গায়েবের বিষয়। আল্লাহ্ কর্তৃক অবহিত করা ছাড়া আমরা যেটাকে জানতে পারি না। আল্লাহ্র কিতাব ও রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সহিহ সুন্নাহতে এই আলামতগুলোর কিছু বিবরণ এসেছে। এ ব্যাপারে এর উপরই নির্ভর করতে হবে। পক্ষান্তরে, দুর্বল হাদিসসমূহে যা কিছু উদ্ধৃত হয়েছে কিংবা ইসরাঈলী বর্ণনায় যা কিছু বর্ণিত হয়েছে সেগুলোর ওপর নির্ভর করা যাবে না এবং এর উপর ভিত্তি করে কোন আকিদা বিনির্মাণ করা যাবে না। যদি ঈসরাঈলী বর্ণনার কোন কিছু বাস্তবের সাথে মিলে যায় তাহলে হতে পারে সেই আসমানী কিতাবসমূহে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি বিকৃত হয়নি।
বান্দার উচিত যা কিছু তার জন্য উপকারী সেটা শিখতে সচেষ্ট হওয়া। নানা রকম অনুমান ও ধারণা থেকে দূরে থাকা যেগুলো তার কোন উপকারে আসবে না। এর মাধ্যমে জানা গেল যে, কিয়ামতের আলামতগুলোর ব্যাপারে ওহীতে যা কিছু এসেছে; তথা সেটা পবিত্র কুরআনে হোক কিংবা সহিহ সুন্নাহ-তে হোক; এর বাহিরে অন্য কিছুর উপর আস্থা রাখা যাবে না।
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।