ঋতুস্রাব ও প্রসব-উত্তরস্রাব
যে নারী নিফাসের রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কয়েক ফোঁটা রক্ত দেখেছেন এমতাবস্থায় তার রোযার কী হুকুম হবে?
আমি শাবান মাসে সন্তান প্রসব করেছি। এরপর আমি এক রোগে আক্রান্ত হয়েছি। যার ফলে শুধু তিনদিন নিফাসের রক্তস্রাব হয়ে আর হয়নি। এরপর স্রাব বন্ধ হয়ে গেছে। তাই আমি গোসল করে নামায পড়া শুরু করেছি। শাবান শেষ হয়ে রমযান শুরু হয়েছে কিন্তু আর কোন রক্তস্রাব যায়নি। রমযান মাসের এক সপ্তাহ অতিবাহিত হওয়ার পর ডাক্তার আমাকে কিছু এন্টিবায়েটিক ঔষধ দিয়েছেন। আমি রোযা রাখতাম। সারাদিন কোন রক্ত যেত না মাগরিবের পূর্বে সামান্য কয়েক ফোঁটা স্রাব যেত। গোটা রমযান মাস এভাবে ছিলাম। আমি কি পবিত্র হয়েছি; নাকি হইনি তা জানতে পারিনি। কিন্তু আমি সারা মাস রোযা রেখেছি। আমি কি রোযাগুলো পুনরায় রাখব; নাকি রাখা লাগবে না?জনৈক নারী ইফতার করার পর রক্তস্রাব দেখেছেন, কিন্তু তিনি সন্দেহে রয়েছেন যে, ইফতারের পূর্বেই রক্তস্রাব শুরু হয়েছে নাকি ইফতারের পর?
প্রশ্ন: আমি রমযান মাসে ইফতার করার কিছুক্ষণ পর রক্তস্রাব দেখতে পেলাম। কিন্তু, আমি জানি না: রক্তস্রাব কি ইফতারের আগে শুরু হয়েছে নাকি পরে? এমতাবস্থায় আমার উপরে কি সেই দিনের রোযা কাযা পালন করতে হবে? কিংবা অন্য কি করতে হবে?যে নারীর স্রাব নির্গত হচ্ছে এবং এর মধ্যে রক্তের একটি সুতা রয়েছে
আমার স্বচ্ছ সাদাস্রাব নির্গত হচ্ছে। এতে রক্তের একটি সুতা রয়েছে। উল্লেখ্য, দুইমাস ধরে আমার মাসিক হয়নি। এখন মাসিক হওয়ার সময়। কারণ আমি মাসিকের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াগুলো অনুভব করছি...। আমি কি রোযা রাখব; নাকি নয়?যে নারীর নিফাসজনিত স্রাব নয়মাস অব্যাহত ছিল এবং এ সময়ে তিনি নামায পড়েননি
আমার এক বান্ধবীর নিফাসজনিত স্রাব নয় মাস অব্যাহত ছিল। এ সময়কালে সে কদাচিৎ নামায আদায় করেছে। এখন তিনি কী করবেন? যদি আমরা বলি যে, নিফাসের সর্বোচ্চ সময় ৬০ দিন তাহলে তো তাকে ছয় মাসের নামায কাযা পড়তে হবে। এখন সে কিভাবে কাযা পড়বে?পবিত্র হওয়ার পর কয়েক ফোঁটা রক্তপাত হওয়া হায়েয হিসেবে গণ্য নয়
আমি রমযান মাসের চারদিন রোযা রেখেছি। এরপর আমার হায়েয শুরু হয়েছে। হায়েযের দিনগুলো শেষ হওয়ার পর আমি পবিত্র হয়েছি এবং রোযা রাখা শুরু করেছি। কিন্তু কয়েক ফোঁটা রক্তপাত হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। যখনই আমি পবিত্র হই ও রোযা রাখি তখনই দ্বিতীয়বার গোটা রমযান রক্তপাত হয়। এ ব্যাপারে সঠিক উত্তর কি?জন্ম নিরোধক পিল সেবনের ফলে হায়েয অনিয়মিত
আমার স্বাস্থ্যগত কিছু সমস্যার কারণে আমি জন্ম নিরোধক পিল ব্যবহার করছি। ভুল বশতঃ আমি সে পিল সেবন করিনি। এখন আমার রক্তপাত হচ্ছে। আমি যে দিনগুলো রক্তপাতের সমস্যায় ভুগি এ দিনগুলোর মধ্যে দুইদিন আমি নামায পড়ি। তদুপরি আমি গুনাহ করছি বলে মনে হয়। এ বিষয়ে সঠিক অভিমত কি? দয়া করে এ বিষয়টি জানবেন যে, আমি স্বাস্থ্যগত কিছু সমস্যার কারণে এ পিলগুলো সেবন করছি এবং আমার স্বামী এ বিষয়ে পূর্ণ অবগত আছেন। কারণ হয়তো আমি এ পিলগুলো সেবন করব কিংবা আমি স্বাস্থ্যগত এ সমস্যাগুলো মোকাবিলা করব। জাযাকুমুল্লাহু খাইরা।যে নারী ফজরের পূর্বে পবিত্র হয়েছেন কিনা এ ব্যাপারে সন্দিহান তিনি কি নামায ও রোযা আদায় করবেন?
মাসিকের শেষ দিন ফজরের আযানের প্রায় দুই ঘন্টা আগে আমি দেখেছি যে, হলুদ স্রাব যাচ্ছে। এরপর আমি ঘুমিয়ে পড়েছি। ফজরের আগে আর দেখিনি স্রাব কি বন্ধ হয়েছে; নাকি বন্ধ হয়নি। সকালে লক্ষ্য করলাম যে, স্রাব যাওয়া বন্ধ হয়েছে। এরপরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে পর্যবেক্ষণ করলাম; এর মধ্যে জোহরের আযান হয়ে গেছে। জোহরের পর আমি গোসল করেছি। এমতাবস্থায় ছুটে যাওয়া কোন নামায কি আমাকে কাযা করতে হবে; নাকি আমি শুধু জোহরের নামায পড়ব? রমযানের পর এই দিনটির রোযা কাযা পালন করা কি আমার উপর আবশ্যক?যে রোযাদার নারীর নিফাসের রক্তপাত বন্ধ হয়ে পুনরায় ফিরে এসেছে
জনৈক নিফাসগ্রস্ত নারী এক সপ্তাহের মধ্যে নিফাস থেকে পবিত্র হয়ে গেছেন। তিনি রযমানের কিছুদিন সাধারণ মুসলিমদের সাথে রোযাও রেখেছেন। এরপর পুনরায় তার রক্তপাত শুরু হয়েছে। এমতাবস্থায় সেই নারী কি রোযা রাখবেন না? তিনি যে দিনগুলোর রোযা রেখেছেন এবং যে দিনগুলোর রোযা ভঙ্গ করেছেন সবগুলোর কাযা পালন কি তার উপর আবশ্যক হবে?আই ইউ ডি ব্যবহার করার কারণে যে নারীর মাসিকের সময় বেড়ে গেছে
রমযান মাসে আমার স্ত্রীর হায়েয শুরু হওয়ার পর সে আই ইউ ডি সেট করার জন্য গিয়েছে। যার ফলে তার হায়েযের দিন বেড়ে যায় এবং সে ১১ দিন রোযা রাখতে পারেনি। পরবর্তীতে সাব্যস্ত হয়েছে যে, এর মধ্যে ৪ দিনের রক্ত হায়েযের রক্ত ছিল না; বরং তা ছিল সাধারণ রক্তপাত...। এই দিনগুলোর বিধান কী? এর জন্য কি কোন কাফ্ফারা আছে? থাকলে সেটা কি?জনৈক নারী এক ফোটা রক্ত দেখছেন, তিনি কি রোযা রাখবেন?
প্রশ্ন: আমি যখন টয়লেটে প্রবেশ করেছি তখন দেখেছি সে স্থানে এক ফোটা রক্ত রয়েছে। এতে আমার সন্দেহ ও আশংকার সৃষ্টি হয়েছে যে, আমি ঋতুবতী কিনা? আমি কি নামায পড়ব, রোযা চালিয়ে যাব; নাকি নয়?গোসলের পরিপূর্ণ পদ্ধতি ও জায়েয পদ্ধতি
আমি নিম্নবর্ণিত পদ্ধতিতে হায়েয থেকে পবিত্র হওয়ার গোসল করি: ১. মনে মনে পবিত্র হওয়ার নিয়ত করি; মুখে উচ্চারণ করি না। ২. শুরুতে আমি “শাওয়ার” এর নীচে দাঁড়াই এবং গোটা দেহের উপর পানি প্রবাহিত করি। ৩. লুফা ও সাবান দিয়ে সম্পূর্ণ শরীর ধৌত করি; এর মধ্যে লজ্জাস্থানও রয়েছে। ৪. শ্যাম্পু দিয়ে আমার সবগুলো চুল ধৌত করি। ৫. এরপর শরীর থেকে সাবান ও শ্যাম্পু দূর করি, তারপর ডান পার্শ্বে তিনবার পানি ঢালি। এরপর বামপার্শ্বে তিনবার পানি ঢালি। ৬. এরপর ওযু করি। সম্প্রতি আমি জেনেছি যে, আমি গোসল করার সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করছি না। আমি আপনাদের কাছে প্রত্যাশা করছি, আমি যে এত বছর যাবৎ উপরোল্লেখিত পদ্ধতিতে গোসল করে আসছি এটা কি ভুল; নাকি ঠিক? যদি ভুল হয়, সঠিক না হয় তাহলে বিগত এত বছরের এই ভুলের সংশোধনের জন্য আমি কি করতে পারি। আমার এত বছরের নামায, রোযা কি বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য? যদি তেমনই হয় তাহলে এর সংশোধনে আমি কি করতে পারি? অনুরূপভাবে আমি আপনাদের কাছে প্রত্যাশা করছি যে, আপনারা আমাকে হায়েয থেকে ও জানাবাত (অপবিত্রতা) থেকে গোসল করার সঠিক পদ্ধতি অবহিত করবেন।যে নারী উমরা সমাপ্ত করার আগে তার হায়েয শুরু হয়ে গেছে
আমি ও আমার স্ত্রী দুই দিন আগে উমরা করতে মক্কায় গিয়েছিলাম। বিমানেই আমরা উমরার ইহরাম বেঁধেছি। আমরা যখন মক্কাতে পৌঁছে ব্যাগ-ব্যাগেজ রাখার জন্য হোটেলে গেলাম। সেখানে যাওয়ার পর আমার স্ত্রী জানতে পারল যে, আমরা যখন হোটেলে পৌঁছেছি তখন তার মাসিক শুরু হয়েছে। এমতাবস্থার হুকুম কী? তার উপর কি কোন ফিদিয়া ওয়াজিব হবে? ফিদিয়ার পরিমাণ কতটুকু?ইস্তেহাযাগ্রস্ত নারীর অবস্থাসমূহ
যদি নারীর (জরায়ু থেকে) অনেক বেশি রক্তপাত হয় তথা সে ইস্তেহাযাগ্রস্ত হয় তাহলে কীভাবে নামায পড়বে?নিফাসের পর ‘কপারটি’ স্থাপনের কারণে যে নারীর রক্তপাত হচ্ছে
রমযানের দশদিন পূর্বে নিফাসের রক্ত বন্ধ হয়। এরপর রমযানের দুইদিন আগে ‘কপারটি’ স্থাপনের জন্য তিনি মহিলা চিকিৎসকের কাছে যান। তারপর থেকে আজকে পর্যন্ত রক্তপাত অব্যাহত আছে। এখন কি আমি রোযা রাখব ও নামায পড়ব? উল্লেখ্য, আমি এখন নামায-রোযা পালন করছি।জন্ম নিরোধক বড়ি ব্যবহারের কারণে যে নারীর হায়েয অনিয়মিত তিনি নামায-রোযার ক্ষেত্রে কী করবেন?
কয়েক বছর আগে আমি বালেগ হওয়ার কয়েক মাস পর আমার পরিবার হজ্জে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সফরের নির্দিষ্ট তারিখের কয়েকদিন আগে আমার হায়েয শুরু হয়। তখন আমি আমার মাকে হায়েয বন্ধের বড়ি খাওয়ার কথা বলি এবং বড়ি খাই। সে ঘটনার পর থেকে আমার হায়েয অনিয়মিত। এমনকি কয়েক মাস আমার হায়েয হয় না। কখনও কখনও হায়েয শুরু হলে আর থামে না। এ বছর রমযান মাসের ১০ দিন বা ১১ দিন আগে আমার হায়েয শুরু হয়েছে। খুবসম্ভব ৯ দিনের মাথায় আমি গোসল করেছি। খেয়াল করলাম দুইদিন পর পুনরায় হায়েয হচ্ছে। আমার দাদী আমাকে জানালেন যে, আমি যেন রমযানের প্রথম রোযা না রাখি। রমযান মাসের প্রথম দুইদিনের রোযা আমি রাখিনি। এরপর গোসল করে তৃতীয় দিন থেকে রোযা ধরেছি; যদিও রক্তস্রাব অব্যাহত আছে। এর কারণ হল আমার মনে হয় আমি একটি হাদিস পড়েছি যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তুলা বা মোটা কাপড় ব্যবহার করে নামায পড়ার অনুমতি দিয়েছেন। কেননা এটি হায়েযের রক্ত নয়। আশা করি আপনারা স্পষ্টভাবে বলবেন যে, আমি কী করব?যদি কোন নারী চল্লিশদিনের আগেই নিফাস থেকে পবিত্র হয়ে যান তাহলে তাকে গোসল করে নামায ও রোযা পালন করতে হবে
আমার স্ত্রী প্রায় ১৫ দিন আগে শাবান মাসে সন্তান প্রসব করেছে। তার নিফাসের রক্তস্রাব যদি বন্ধ হয়ে যায় এবং এ ব্যাপারে সে নিশ্চিত হয় তাহলে কি সে নামায, রোযা, উমরা, কুরআন তেলাওয়াত ও তারাবীর নামায ইত্যাদি শরয়ি দায়িত্বগুলো পালন করতে পারবে? নাকি তাকে ৪০ দিন অপেক্ষা করতে হবে; যেমনটি কেউ কেউ বলছেন?এক নারী গর্ভবতী, তার কিছু স্রাব নির্গত হয়; তিনি কি নামায ত্যাগ করবেন?
আমার স্ত্রী থেকে কফি-কালারের একটি পদার্থ নির্গত হচ্ছে। মাঝেমধ্যে তার মাসিক হয় না। সেকি রোযা রাখবে ও নামায পড়বে; নাকি পড়বে না? উল্লেখ্য আমার স্ত্রী তার প্রেগনেন্সির প্রথম দিকে, ১ মাস ১৫ দিন।যদি কোন হায়েযগ্রস্ত নারী ফজরের আগে পবিত্র হন
আমার হায়েয চলছিল। ফজরের আযানের আগে আমি পবিত্র হয়েছি। কিন্তু ক্লান্তির কারণে আমি গোসল করতে পারিনি; এর মধ্যে ফজরের আযান হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় আমি কি সেই দিনের রোযাটি পূর্ণ করব? উল্লেখ্য, আমি আযানের আগেই সেই দিনের রোযা রাখার নিয়ত করেছি।হায়েযের পূর্বে নির্গত বাদামী স্রাব
আমি জন্মনিরোধক কপার-টি ব্যবহার করি। এ কারণে হায়েযের স্বাভাবিক রক্তস্রাব নির্গত হওয়ার তিনদিন আগে বাদামী রঙের স্রাব বের হয়। এতে করে কি আমার রোযা নষ্ট হবে এবং আমাকে রোযার কাযা পলন করতে হবে?নারীর কাছ থেকে অনবরত যে স্রাব নির্গত হয় সেটি রোযাকে নষ্ট করবে না
যদি পানির মত স্বচ্ছ স্রাব নির্গত হয় (যা শুকিয়ে গেলে সাদা রঙ ধারণ করে) সে অবস্থায় আমাদের নামায-রোযা কি সহহি? এমতাবস্থায় গোসল করা আবশ্যকীয়? আশা করি আমাকে অবহিত করবেন। এই তরলটি আমার কাছ থেকে অনেক নির্গত হয়; যা আমি আমার আন্ডার ওয়্যারে দেখতে পাই। আমি দৈনিক দুইবার বা তিনবার গোসল করি যাতে করে আমার রোযা ও নামায সহিহ হয়।