প্রশ্ন: আমি একজন বিবাহিত নারী। একজন দ্বীনদার মানুষের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। আলহামদু লিল্লাহ তার অনেক ভাল গুণ রয়েছে। সমস্যা হচ্ছে- তার ঘুম খুব ভারী। ঘুমালে ফজরের নামাযের জন্য সহজে উঠতে পারে না। অধিকাং সময় সে যদি জুনুবি অবস্থায় (নাপাক অবস্থায়) থাকে সে ঘুম থেকে উঠতে পারে না। এতে কি আমার গুনাহ হবে? আমি নিশ্চিতভাবে জানি যে, আমি যত চেষ্টা করি না কেন সে নামাযের জন্য উঠতে পারবে না। বিশেষতঃ সে যখন সফর থেকে আসে অথবা ক্লান্ত থাকে। তাই তার নামাযের কারণে আমি কি (সহবাস) থেকে বিরত থাকতে পারি?
স্বামী ফজরের নামাযের সময় উঠতে পারবে না, ঘুমিয়ে থাকবে বিধায় স্ত্রী তাকে সহবাস করতে বাধা দেয়া কি ঠিক হবে?
প্রশ্ন: 137791
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
সমস্তপ্রশংসাআল্লাহর জন্য।
যখন কোনস্বামী তারস্ত্রীকেবিছানায়ডাকবে তখন সেডাকে সাড়াদেয়া ফরজ।দলিল হচ্ছেসহিহ বুখারি ওসহিহ মুসলিম এআবু হুরায়রা(রাঃ) কর্তৃকনবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেবর্ণিত হাদিস:“যদি কোনস্বামী তারস্ত্রীকেবিছানায় ডাকেকিন্তুস্ত্রী ডাকে সাড়ানা দেয় ফলেস্বামী রাগকরে থাকে তখনভোর হওয়াপর্যন্তফেরেশতারাতার উপর লানতকরতে থাকে।”
শাইখুলইসলাম (রহঃ)বলেন:
যখনি স্বামীস্ত্রীকেবিছানায়ডাকবে তখনি ডাকেসাড়া দেয়াস্ত্রীর উপরফরজ…। যদিডাকে সাড়া নাদেয় তাহলেস্ত্রীগুনাহগার ওঅবাধ্য হবে।যেমনটিআল্লাহ তাআলাবলেছেন: “আর যাদেরমধ্যেঅবাধ্যতারআশঙ্কা করতাদের সদুপদেশদাও, তাদের শয্যাত্যাগ কর এবংপ্রহার কর।যদি তাতে তারাবাধ্য হয়ে যায়, তবে আরতাদের জন্যঅন্য কোন পথঅনুসন্ধান করোনা।”[আল-ফাতাওয়াআল-কুবরা(৩/১৪৫-১৪৬)থেকে সংকলিত]
সহবাসের পরস্বামী যদিঘুমিয়ে থাকেতাহলেস্ত্রীরদায়িত্ব ফজরেরনামাযের জন্যস্বামীকেজাগিয়ে দেয়া।যদি স্বামীঅবহেলা করে নাজাগে তাহলেস্বামীর গুনাহহবে। স্ত্রীরকোন গুনাহ হবেনা। সুতরাং স্ত্রীরউচিত তারদায়িত্ব পালনকরা। স্বামীর নামাযেরদায়িত্ব ওঅবহেলার দায়তার উপর, যদি সেঅবহেলা করে।
ফিকাহবিদগণস্বামীর বদলেস্ত্রীসংক্রান্তএকটি মাসয়লারহুকুমস্পষ্টভাবেউল্লেখ করেছেনসেটি এখানেউল্লেখ করলেবিষয়টিপরিস্কার হবে:
রমলি (রহঃ)বলেন: যদিস্বামী জানেনযে, যদি রাতে সহবাসকরেন তাহলেস্ত্রী ফজরেরনামাযের সময় গোসলকরবে না; এতেকরে তার নামাযছুটে যাবে,ইবনে আব্দুসসালাম বলেন: এ প্রেক্ষিতেস্বামীর উপরসহবাস করাহারাম হবে না।নামাযের সময়স্ত্রীকেগোসল করারনির্দেশদিবে।ফাতাওয়ালআহনাফগ্রন্থেও এমনএকটি ফতোয়ারয়েছে।[হাসিয়াতুহুআলা আসনালমাতালিব(৩/৪৩০) থেকেসংকলিত]
নাওয়াযিলিলবারযালি গ্রন্থেআছে:
ইয্যুদ্দিনকেজিজ্ঞেস করাহয়েছিল: যেব্যক্তি রাতেছাড়া স্ত্রীসহবাসেরসুযোগ পান না।রাতে যদিস্ত্রী সহবাসকরেন তাহলেস্ত্রী গোসলকরতে অলসতাকরে; এতে তারনামায ছুটেযায়। এমতাবস্থায়স্বামীর জন্যকি সহবাস করাজায়েয হবে,এতে করেস্ত্রীরনামাযেরঅসুবিধা হোকবা না-হোক?
তিনি উত্তরেবলেন: স্বামীরজন্য রাতেস্ত্রী সহবাসকরা জায়েযহবে। স্বামীস্ত্রীকেফজরের সময়নামায পড়ারনির্দেশদিবে। যদিস্ত্রী নামাযপড়ে তাহলে তোভাল। আর যদিনা পড়ে স্বামীতার দায়িত্বপালনকরেছে।[ফাতাওয়ালবারযালি(১/২০২) থেকেসংকলিত]
সারকথাহচ্ছে- আপনারজন্যস্বামীকেসহবাস করতেবাধা দেয়াজায়েয হবে না।আপনি নামাযেরজন্য তাকে জাগিয়েদিবেন। সে যদিঅবহেলা করেনামায দেরি করেপড়ে তাহলে তারগুনাহ হবে।
আল্লাহইভাল জানেন।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব