প্রশ্ন: এ বছর ইসলামি সংস্থার পরিচালনাধীন মসজিদের মাধ্যমে আমি কোরবানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অন্য ছয়জনের সাথে আমি একটি গরুর ভাগে অংশীদার হয়েছি। ইসলামি সংস্থাকে ২০০০ পাউন্ড মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে। তারা কোরবানির পশু ক্রয় করেছেন। ৫ জন, ৬ জন বা ৭ জনের জোটবদ্ধ গ্রুপের সদস্য সংখ্যা অনুপাতে তারা প্রত্যেক গ্রুপের জন্য কোরবানির পশু নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। কিন্তু, ঈদের দিন ফজরের এক ঘণ্টা পূর্বে আমার কোরবানির জন্য নির্দিষ্ট গরুটি মারা গেছে। আমি কোন অর্থ ফেরত পাইনি। কেননা আমি কোরবানির পশু ক্রয় করেছি। কেনার পর ফজরের পূর্বে পশুটি মারা গেছে। আমি অন্য একটি কোরবানির পশু সন্ধান করে শেষে ১০০০ পাউন্ড দিয়ে একটি ভেড়া জবাই করেছি।
প্রশ্ন হচ্ছে; প্রথমত: এমতাবস্থায় কি করা সঠিক ওয়াজিব ছিল। দ্বিতীয়ত: এ ধরণের বঞ্চনার শিকার হওয়া কি আমার গুনাহের প্রতিফল?
জবাই করার আগে কোরবানির পশু মারা গেলে কি হুকুম
প্রশ্ন: 178524
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
আলহামদুলিল্লাহ।
১।কেউ যদি কোনএকটি পশুকেকোরবানিরজন্যনির্দিষ্টকরেন, এরপরকোন অবহেলা নাকরা সত্ত্বেওসে পশুটি মারাযায়সেক্ষেত্রেআপনার উপর কোনকিছু বর্তাবেনা।
ইবনেকুদামা (রহঃ) ‘আল-মুগনি’ গ্রন্থে (৯/৩৫৩)বলেন:
“যদি কোনঅবহেলাব্যতিরেকেতার হাত থেকেকোরবানিরপশুটি ধ্বংসহয়ে যায় কিংবাচুরি হয়ে যায় কিংবাহারিয়ে যায়সেক্ষেত্রেতার উপর কোনকিছু বর্তাবেনা। কেননাপশুটি তারহাতে আমানত। যদিতার অবহেলা নাথাকেসেক্ষেত্রেগচ্ছিত-রাখাসম্পদের মততাকে এটারক্ষতিপূরণদিতে হবে না”।[সমাপ্ত][আরও দেখুন:মিরদাওয়ি এর ‘আল-ইনসাফ’ (৪/৭১)]
২। যদি সেব্যক্তি নিজেএটাকে ধ্বংসকরে থাকে কিংবাঅন্য কেউধ্বংস করেথাকে তাহলে যেব্যক্তিধ্বংসের কারণসে এর মূল্যকিংবাসমমানের পশুক্ষতিপূরণদিবে।
ইবনে কুদামা(রহঃ) ‘আল-মুগনি’ গ্রন্থে (৯/৩৫২)বলেন:
“যদি কেউ কোনওয়াজিবকোরবানির পশুধ্বংস করে তাহলেতাকে মূল্যজরিমানা দিতেহবে। কেননা পশুএমন শ্রেণীরযেটারমূল্য-অনুমানযোগ্য।যেদিনপশুটিকেধ্বংস করেছেসেই দিনেরমূল্যধর্তব্য হবে”।
এ বিষয়টি যখনপরিষ্কার হল:সুতরাং আপনারউপর কোন কিছুআবশ্যক নয়।কেননা আপনিনিজেকোরবানিরপশুটি ধ্বংসকরেননি এবংএটিরসংরক্ষণে কোনঅবহেলাকরেননি।
পরবর্তীতেআপনিকোরবানিরনিয়তে যে ভেড়াজবাই করেছেনসেটা ভালকরেছেন। আপনিইনশাআল্লাহ্এর জন্য সওয়াবপাবেন।কিন্তু, আপনারউপর মরে যাওয়াপশুর বদলেঅন্য কোন পশুজবাই করাআবশ্যক ছিলনা। কিন্তুআপনি যেহেতুকরেই ফেলেছেনসেটি নফল এবংআপনার পক্ষথেকেঅতিরিক্তসওয়াবের কাজহয়েছে,ইনশাআল্লাহ্।
আপনারকোরবানির পশুমরে যাওয়া এমনকিছু নির্দেশকরছে না যে,আপনি বঞ্চিতকিংবা এটাআল্লাহ্রপক্ষ থেকেআপনার জন্যকোন শাস্তি।বরং কে জানেহতে পারে এটি আপনারজন্য পরীক্ষা;যে পরীক্ষারজন্য আপনি সওয়াবপাবেন। নেককাজ করার জন্যআপনি আগে যেচেষ্টাকরেছেন এরসাথে যোগহয়েছেআল্লাহ্রনির্ধারিততাকদিরঅনুযায়ী আপনিমরে যাওয়া পশুটিরবদলে অন্যএকটি পশুকোরবানিকরেছেন। আল্লাহ্রচাহে তো এআমলগুলোআপনারঅতিরিক্ত নেকিরকাজ।
শাইখুলইসলাম ইবনেতাইমিয়া (রহঃ)বলেন:
“কোন মানুষযদি সুদৃঢ়সংকল্পেরসাথে তার সাধ্যেযা কিছু করারক্ষমতা রয়েছেতা করে তাহলেশরিয়তেরদৃষ্টিতে সেব্যক্তিপরিপূর্ণকার্য সম্পাদনকারীব্যক্তিরসমান:পরিপূর্ণকার্যসম্পাদনকারীরসওয়াব কিংবাশাস্তি সে ব্যক্তিপাবে; এমনকিযা তারসাধ্যেরবাইরে এর জন্যেওসে ব্যক্তিসওয়াব কিংবাশাস্তি পাবে।উদাহরণস্বরূপনেক কাজেপরস্পরপরস্পরকে সহযোগিতাকারীব্যক্তিবর্গ”।[মাজমুউলফাতাওয়া(১০/৭২২-৭২৩),আরও জানতে দেখুন:মাজমুউলফাতাওয়া(২৩/২৩৬)]
আমরাআল্লাহ্রকাছেপ্রার্থনাকরছি তিনি যেনআপনার পক্ষথেকে এবং সকলমুসলমানেরপক্ষ থেকেকবুল করে নেন।
আল্লাহ্ইভাল জানেন।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব