ডাউনলোড করুন
0 / 0

মুহররম মাসের মর্যাদা

প্রশ্ন: 204142

মুহররম মাসের ফযিলত কী?

আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা

সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহ্‌র জন্য। আমাদের নবী, সর্বশেষ নবী, রাসূলদের সর্দার মুহাম্মদ এর প্রতি, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবায়ে কেরাম সকলের প্রতি আল্লাহ্‌র রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক। পর সমাচার:

মুহররম মাস একটি মহান মাস। বরকতময় মাস। এটি হিজরি সনের প্রথম মাস। এটি নিষিদ্ধ মাসসমূহের একটি; যে মাসগুলোর ব্যাপারে আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “নিশ্চয় আল্লাহর নিকট, লওহে মাহফুজে (বছরে) মাসের সংখ্যা বারটি আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি হারাম (সম্মানিত)। এটাই সরল বিধান। সুতরাং এগুলোতে তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করো না।”[সূরা তওবা, আয়াত: ৩৬]

আবু বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, “বছর হচ্ছে- বার মাস। এর মধ্যে চার মাস- হারাম (নিষিদ্ধ)। চারটির মধ্যে তিনটি ধারাবাহিক: যিলক্বদ, যিলহজ্জ ও মুহররম। আর হচ্ছে- মুদার গোত্রের রজব মাস; যেটি জুমাদা ও শাবান মাস এর মধ্যবর্তী।”[সহিহ বুখারী (২৯৫৮)]

মুহররম মাসকে এ নামে অভিহিত করা হয়েছে এটি নিষিদ্ধ মাস হওয়ার কারণে এবং এর নিষিদ্ধ হওয়াকে জোরদার করার উদ্দেশ্য।

আল্লাহ্‌র বাণী: “সুতরাং এগুলোতে তোমরা নিজেদের প্রতি যুলুম করো না।” অর্থাৎ এ নিষিদ্ধ মাসসমূহে। যেহেতু এ মাসসমূহে জুলুম করা অন্য মাসসমূহে করার চেয়ে অধিক গুরুতর গুনাহ।

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে فلا تظلموا فيهن أنفسكم (অর্থ- সুতরাং এগুলোতে তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করো না।) আয়াতের তাফসিরে এসেছে: সবমাসেই। এরপর সেখান থেকে চারটি মাসকে খাস করেছেন এবং সেগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সেগুলোর নিষিদ্ধতাকে গুরুতর করেছেন। সে মাসসমূহের গুনাহকে মহা অপরাধ গণ্য করেছেন এবং সে মাসসমূহের নেক কাজ ও সওয়াবকেও মহান করেছেন। فلا تظلموا فيهن أنفسكم (অর্থ- সুতরাং এগুলোতে তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করো না।) আয়াতের তাফসিরে কাতাদা (রাঃ) বলেন: নিশ্চয় হারাম মাসসমূহে যুলুম করা অন্য মাসসমূহে যুলুম করার চেয়ে অধিক মারাত্মক গুনাহ। যদিও যুলুম সবসময়ই মারাত্মক। কিন্তু, আল্লাহ্‌ তাআলা নিজ ইচ্ছায় তাঁর কোন কোন নির্দেশনাকে অতি মহান করে থাকেন। তিনি আরও বলেন: নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তাঁর মাখলুকের মধ্যে বিশেষ কিছু মাখলুককে মনোনীত করেছেন: ফেরেশতাদের মধ্য থেকে কিছু ফেরেশতাকে ‘রাসূল বা দূত’ হিসেবে মনোনীত করেছেন। মানুষের মধ্য থেকেও কিছু মানুষকে ‘রাসূল বা দূত’ হিসেবে মনোনীত করেছেন। বাণীর মধ্য থেকে কিছু বাণীকে ‘স্মরণিকা’ হিসেবে মনোনীত করেছেন। জমিনের মধ্য থেকে কিছু ভূমিকে ‘মসজিদ’ হিসেবে মনোনীত করেছেন। মাসসমূহের মধ্য থেকে রমযান ‘মাস ও হারাম মাসসমূহ’কে মনোনীত করেছেন। দিনসমূহের মধ্য থেকে ‘জুমা’র দিনকে মনোনীত করেছেন। রাতসমূহের মধ্য থেকে ‘লাইলাতুল ক্বদর’কে মনোনীত করেছেন। সুতরাং আল্লাহ্‌ যা কিছুকে শ্রেষ্ঠ করেছেন সেগুলোকে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দিন। কারণ বুঝবান ও জ্ঞানবান লোকদের নিকট সাব্যস্ত যে, আল্লাহ্‌ মর্যাদা দেয়ার কারণেই বিভিন্ন বিষয়কে মর্যাদা দেয়া হয়ে থাকে।[সূরা তাওবার ৩৬ নং আয়াতের তাফসির; তাফসিরে ইবনে কাছির থেকে সংক্ষেপিত ও সমাপ্ত]

মুহররম মাসে অধিক রোযা রাখার ফযিলত:

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “রমযানের পর সবচেয়ে উত্তম রোযা হচ্ছে- আল্লাহর মাস ‘মুহররম’ এর রোযা।”[সহিহ মুসলিম (১৯৮২)]

হাদিসের বাণী: “আল্লাহ্‌র মাস”: মাসকে আল্লাহ্‌র দিকে সম্বন্ধিত করা হয়েছে মর্যাদা প্রকাশার্থে। আল-ক্বারি বলেন: বাহ্যিক অর্থ হচ্ছে- গোটা মুহররম মাস।

কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি রমযান ছাড়া কোন মাসেই গোটা মাসব্যাপী রোযা রাখেননি। তাই হাদিসের এ ব্যাখ্যা করতে হবে যে, মুহররম মাসে বেশি রোযা রাখার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে; কিন্তু গোটা মাসব্যাপী রোযা নয়।

আরও সাব্যস্ত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসে বেশি বেশি রোযা রাখতেন। খুব সম্ভব মুহররম মাসের ফযিলত সম্পর্কে তাঁকে আগে ওহি পাঠানো পাঠানো হয়নি; তাঁর জীবনের একেবারে শেষ দিকে ওহি পাঠানো হয়েছে; এতে সে সিয়াম পালন সম্ভবপর হয়নি।[ইমাম নববীর ‘শারহু সহিহি মুসলিম]

আল্লাহ্‌ তাআলা স্থান ও কালকে মনোনীত করেন:

আল-ইয্‌য বিন আব্দুস সালাম (রহঃ) বলেন: “স্থান-কালের শ্রেষ্ঠত্ব দুই ধরণের: দুনিয়াবী। অন্য প্রকার হল: দ্বীনি; অর্থাৎ আল্লাহ্‌ তাআলা এই স্থান-কালের মধ্যে আমলকারী বান্দাদের সওয়াব বৃদ্ধি করার মাধ্যমে তাদের উপর তাঁর বদান্য ঢেলে দেন। যেমন- অন্য মাসসমূহের উপর রমযান মাসের শ্রেষ্ঠত্ব। অনুরূপভাবে আশুরার দিনের শ্রেষ্ঠত্ব…। এগুলোর শ্রেষ্ঠত্বের কারণ হচ্ছে- এগুলোতে বান্দার প্রতি আল্লাহ্‌র বদান্যতা ও দয়া…।”[ক্বাওয়ায়েদুল আহকাম (১/৩৮)]

আমাদের নবী মুহাম্মদ, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবায়ে কেরাম সকলের প্রতি আল্লাহ্‌র রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক।

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android
at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android