এক:
আওফ বিন মালেক আল-আশজায়ী থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন: “জাহেলি যামানায় আমরা ঝাড়ফুঁক করতাম। সে প্রসঙ্গে আমরা বললাম: ইয়া রাসূলুল্লাহ্! সে ব্যাপারে আপনার মতামত কী? তিনি বললেন: তোমাদের ঝাড়ফুঁকের তদবিরগুলো আমার কাছে পেশ কর। ঝাড়ফুঁক করতে কোন অসুবিধা নাই যতক্ষণ পর্যন্ত এতে শির্ক না থাকে”।[সহিহ মুসলিম (২২০০)]
এ হাদিসটি ঝাড়ফুঁক জায়েয হওয়ার পক্ষে প্রমাণ বহন করে; যতক্ষণ পর্যন্ত এতে শির্ক না থাকে কিংবা এটি শির্কের মাধ্যম না হয়। আলেমগণ ঝাড়ফুঁক জায়েয হওয়ার জন্য তিনটি শর্ত করেছেন। হাদিসের দলিল থেকে তাঁরা সে শর্তগুলো উদ্ভাবন করেছেন। ইবনে হাজার (রহঃ) এর ‘ফাতহুল বারী’ গ্রন্থে (১০/১৯৫) এসেছে: “তিনটি শর্ত পূর্ণ হলে আলেমগণ ঝাড়ফুঁক জায়েয হওয়ার পক্ষে ইজমা (ঐক্যমত) প্রকাশ করেছেন: আল্লাহ্ তাআলার কালাম দিয়ে কিংবা তাঁর নাম ও গুণাবলি দিয়ে হওয়া, আরবী ভাষায় হওয়া কিংবা অন্য কোন বোধগম্য ভাষায় হওয়া এবং এ বিশ্বাস করা যে, ঝাড়ফুঁক নিজে থেকে কোন প্রভাব তৈরী করতে পারে না; বরং এটি আল্লাহ্র উসিলায় প্রভাব তৈরী করে। কিন্তু আলেমগণ এটি শর্ত হওয়ার ব্যাপারে মতভেদ করেছেন। অগ্রগণ্য অভিমত হচ্ছে উল্লেখিত শর্তগুলো বিবেচনা করা অনিবার্য।”[সমাপ্ত]
ইতিপূর্বে 13792 নং প্রশ্নোত্তরে শরিয়ত অনুমোদিত রুকিয়ার শর্তগুলো আলোচিত হয়েছে।
দুই:
আপনি প্রশ্নে যে তদবিরটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছেন এটি নিম্নোক্ত কারণে জায়েয নয়:
১। যেহেতু এ তদবিরটিতে বিদাত রয়েছে: কারণ রোগমুক্তি, বিয়ে সহজ হওয়া কিংবা আছরকারী শয়তানের উপর আধিপত্য তৈরী করার উদ্দেশ্যে সূরা মুহাম্মদ ১৪ বার পড়া কিংবা লাগাতর তিনদিন মাগরিবের পর শুনা— এটি বিদাত হিসেবে পরিগণিত। কেননা আলেমগণ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, কোন নির্দিষ্ট সময়কে নির্দিষ্ট যিকিরের জন্য খাস করা, কিংবা কোন নির্দিষ্ট যিকিরকে নির্দিষ্ট সংখ্যার সাথে খাস করা, কিংবা কোন নিদিষ্ট যিকিরকে বিশেষ কোন পদ্ধতির সাথে খাস করা; যে ধরণের নির্দিষ্টকরণ শরিয়তে উদ্ধৃত হয়নি— সেটি বিদাত হিসেবে গণ্য হবে। ইতিপূর্বে 148174 নং ও 87915 নং প্রশ্নোত্তরে তা উদ্ধৃত হয়েছে।
২। এ তদবিরে এমন কিছু কথা উদ্ধৃত হয়েছে যেগুলোর মর্ম অবোধগম্য। যেমন المحصنات الحجبية দ্বারা কী উদ্দেশ্য এবং أدعية الأنحاس দ্বারা কী উদ্দেশ্য তা জানা যায় না। ইতিপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঝাড়ফুঁকের তদবির জায়েয হওয়ার জন্য শর্ত হলো এতে এমন কোন শব্দাবলী না থাকা যেগুলোর মর্ম অজ্ঞাত।
আরও জানতে দেখুন: 11290 নং প্রশ্নোত্তর। এই উত্তরটিতে যাদু থেকে নিরাময়ের শরিয়তসম্মত পদ্ধতি আলোচিত হয়েছে।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।