যে নারীর মাসিক শুরু হয়েছে তিনি লাইলাতুল কদরে কী করবেন? তিনি কি ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল হয়ে তার সওয়াব বাড়াতে পারবেন? যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, তবে এই রাতে তিনি কী কী ইবাদত করতে পারবেন?
যে নারীর মাসিক শুরু হয়েছে তিনি লাইলাতুল কদরে কী কী ইবাদত করতে পারবেন?
প্রশ্ন: 26753
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
যে নারীর মাসিক শুরু হয়েছে তিনি শুধুনামায, রোজা, বায়তুল্লাহ তওয়াফওমসজিদেইতিকাফব্যতীতবাকী সমস্তইবাদত করতেপারেন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে যে তিনি রমজানের শেষ দশকে রাত জাগতেন। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত: “শেষ দশক প্রবেশ করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকোমর বেঁধে নামতেন। তিনি নিজে রাত জাগতেন এবং তাঁর পরিবারবর্গকে জাগিয়েদিতেন।”[সহীহ বুখারী (২০২৪) ও সহীহ মুসলিম (১১৭৪)]
ইহইয়াউল লাইল বা রাত জাগা শুধু নামাযের জন্য বিশিষ্ট নয়, বরং তা সকল ইবাদতের মাধ্যমে হতে পারে। আলেমগণإِحْيَاء الليل কথাটিকে এই অর্থেব্যাখ্যা করেছেন।
ইবনে হাজার বলেছেন:“أحيا ليله” অর্থ-তিনি ইবাদত ও আনুগত্যের মধ্যে রাত জাগতেন।”নববীরাহিমাহুল্লাহ বলেছেন:“অর্থাৎ তিনি সালাত ও অন্য ইবাদতের মাধ্যমে গোটা রাত কাটিয়ে দিতেন।”
আউনুল মাবূদগ্রন্থেবলাহয়েছে: “অর্থাৎনামায, যিকির-আযকারওকুরআনতিলাওয়াতেরমাধ্যমে (রাত কাটিয়ে দেয়া)।”
লাইলাতুল কদরেবান্দা যে যে ইবাদত করতে পারেন তার মধ্যে কিয়ামুল লাইল (রাতের নামায) সর্বোত্তম। এজন্য নবীসাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরে বা ভাগ্য রজনীতেনামায আদায় করবে তার পূর্বের গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে।”[সহীহ বুখারী (১৯০১)ও সহীহ মুসলিম (৭৬০)]
যেহেতু যে নারীর মাসিক শুরু হয়েছেতার জন্য নামায আদায় করা নিষিদ্ধ তাই তিনিনামাযব্যতীত অন্য সব ইবাদত করার জন্য রাত জাগতে পারেন।যেমন:
১। কুরআন তেলাওয়াত করা, দেখুন (2564) নং প্রশ্নের উত্তর।
২। যিকির করা। যেমন: সুবহানাল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল হামদু লিল্লাহ ইত্যাদি জপা। সুতরাং যে নারীর মাসিক শুরু হয়েছে তিনি বেশী বেশীসুবহানাল্লাহ, আলহামদু লিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহি ওয়া সুবহানাল্লাহিল আযিম ই্ত্যাদি জপতে পারেন।
৩।ইস্তিগফার করা: তিনি বেশি বেশি ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’(আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি) পাঠ করতে পারেন।
৪। দোয়া করা: তিনি আল্লাহ তাআলার কাছে বেশি করে দোয়া করতে পারেন এবং তাঁর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ প্রার্থনা করতে পারেন। দোয়া হল সর্বোত্তম ইবাদতগুলোর অন্যতম। এটা এতবেশী গুরুত্বপূর্ণ যে,নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামবলেছেন: “দোয়া ইহল-ইবাদত।”[জামে তিরমিযী (২৮৯৫),আলবানী‘সহীহআত-তিরমিযী’গ্রন্থে হাদিসটিকেসহীহবলেউল্লেখকরেছেন (২৩৭০)]
যে নারীর মাসিক শুরু হয়েছে তিনি লাইলাতুল ক্দরেউল্লেখিত ইবাদতগুলোসহ অন্যান্য ইবাদত পালন করতে পারেন।
আমরা আল্লাহ তা‘আলার কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যা পছন্দ করেন ও যাতে সন্তুষ্ট হনআমাদেরকে যেন তা পালন করারতাওফিক দেন এবং আমাদের নেক আমলগুলো কবুল করে নেন।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব