আমি অমুসলিম। আমি সুন্দর ইসলামী সমাজে নতুন জীবন কাটাতে ইসলামে প্রবেশ করতে চাই। আমি কি এমন কাউকে পাব যিনি আমাকে সহযোগিতা করবেন এবং দিক নির্দেশনা দিবেন?
জনৈক ব্যক্তি ইসলামে প্রবেশ করতে চান এবং নতুন জীবনের জন্য কিছু দিক নির্দেশনা চান
প্রশ্ন: 373188
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
ওহে আল্লাহ্র বান্দা! আমাদের জন্য কতই না আনন্দকর যে, যখন আপনি আমাদের ওয়েবসাইটে ইমেইল করছেন তখন আপনার অন্তরে নূর উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে, আপনার অন্তর খুলতে শুরু করেছে এবং নতুন নূরকে গ্রহণ করার জন্য প্রশস্ত হচ্ছে; যে নূরে নূরান্বিত হওয়াকে আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের জন্য পছন্দ করেন!!
সেটিই হচ্ছে আপনার গোটা জীবনের পরিণতি নির্ধারক মূহূর্ত। কেবল ক্ষণস্থায়ী এই দুনিয়াবী জীবনের পরিণতি নয়। বরং এই জীবনে আপনার অবস্থার উপর আখিরাতের চিরস্থায়ী জীবনে যা অপেক্ষা করছে। হয়তো জান্নাতে; যা আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের জন্য পছন্দ করেন এবং আমরা আপনার জন্য আশা করি। যেখানে আপনি অনন্তকাল থাকবেন, এর বাগানসমূহে নেয়ামতে ভরপুর থাকবেন, দুঃখিত হবেন না, ক্লান্ত হবেন না, মৃত্যুবরণ করবেন না, বৃদ্ধ হবেন না, দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত হবেন না, হতাশাগ্রস্ত হবেন না। বরং সুখী হবেন; চিরকালের জন্য সুখী…।
নয়তো জাহান্নামের আগুনে; আল্লাহ্ আমাদেরকে ও আপনাকে সে আগুন থেকে হেফাযত করুন। যেখানে আপনাকে অনন্তকাল থাকতে হবে। যেখানে আপনি মরে গিয়ে রক্ষা পাবেন না এবং শান্তি ও স্বস্তিময় জীবনও পাবেন না। বরং জাহান্নামের অধিবাসীরা লাঞ্ছনাকর জিন্দিগী ভোগ করবে, অনন্তকাল সেখানে থাকবে, সেখান থেকে তারা বের হবে না।
‘ইসলামে প্রবেশের আগ্রহের’ যে মূহূর্তটির কথা আপনি আমাদেরকে জানিয়েছেন সেটি সংকোচনের পর আপনার হৃদয় সম্প্রসারণের সবচেয়ে মহান মূহূর্ত, অন্ধকারময় হয়ে থাকার পর আলোকিত হওয়ার মূহূর্ত। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “অতএব আল্লাহ্ যাকে সুপথে পরিচালিত করতে চান ইসলামের জন্য তার মনকে প্রসন্ন করে দেন; আর যাকে বিপথে পরিচালিত করতে চান তার মন (এমন) সঙ্কীর্ণ ও কঠিন করে দেন যেন সে আকাশে (ঊর্ধ্বলোকে) আরোহণ করছে। এভাবেই আল্লাহ্ অবিশ্বাসীদের ওপর শাস্তি আরোপ করেন।” [সূরা আনআম, আয়াত: ১২৫]
সুতরাং ওহে আল্লাহ্র বান্দা! এই মূহূর্তটিকে কাজে লাগান, গড়িমসি করবেন না, বিলম্ব করবেন না এবং এই মূহূর্তটিকে কাজে লাগাতে পিছপা হবেন না…।
এই জানালাটিকে বন্ধ করবেন না; যে জানালা দিয়ে আপনার হৃদয়ে কোমল বাতাস বয়ে যাচ্ছে। আপনি যদি এই জানালাটি বন্ধ করে ফেলেন –এটি করা থেকে আল্লাহ্ আপনাকে হেফাযত করুন- তাহলে আর-রহমানের পক্ষ থেকে শ্বাসপ্রস্বাসের অভাবে আপনার অন্তর মরে যাওয়ার উপক্রম হবে; যা অন্তরগুলোকে জীবিত রাখে।
আপনার অন্তরে যে বায়ু বয়ে যাচ্ছে সেটা গ্রহণে আপনি পিছপা হবেন না। যদি আপনি ভোরের মৃদুমন্দ বায়ু গ্রহণে বিলম্ব করেন তাহলে দিনের সূর্যের উত্তাপ আপনাকে পুড়িয়ে দেয়ার উপক্রম হবে।
ওহে আল্লাহ্র বান্দা! সুযোগ যদি ছুটে যায় হতে পারে পুনরায় ফিরে আসবে না। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “যেহেতু প্রথমবার তারা তা বিশ্বাস করেনি তাই আমি তাদের অন্তর ও চোখ (সঠিক পথ থেকে) ঘুরিয়ে দেব এবং তাদেরকে ছেড়ে দেব, যাতে নিজেদের অবাধ্যতার মধ্যে উদ্ভ্রান্তের ন্যায় ঘুরতে থাকে।”[সূরা আনআম, আয়াত: ১১০]
ওহে আল্লাহ্র বান্দা! এই মূহূর্তটিকে কাজে লাগাতে অবিলম্বে উদ্যোগী হোন। কত মানুষ এই মূহূর্তটিকে নষ্ট করেছে। এরপর তারা কামনা করেছে যদি সেটি ফিরে আসত। কিন্তু সময় যদি পার হয়ে যায় এবং কাল ক্ষেপণ ঘটে তখন সেটি আর ফিরে আসে না। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “আলিফ লাম রা। এগুলো পবিত্র গ্রন্থ ও সুস্পষ্ট এক কুরআনের আয়াত। (কিয়ামতের দিন নিজেদের পরিণাম জাহান্নাম আর মুসলমানদের পরিণাম জান্নাত দেখে) কাফেরেরা প্রায়শ কামনা করবে, তারা যদি মুসলমান হত! ওদেরকে খেতে, ভোগ করতে আর আশায় ভুলে থাকতে দাও। ওরা (একদিন) জানতে পারবে।”[সূরা হিজ্র, আয়াত: ১-৩]
ওহে আল্লাহ্র বান্দা! অবিলম্বে উদ্যোগী হোন। বিষয়টি সহজ। একেবারে সহজ। আল্লাহ্ যার জন্য সহজ করে দেন ও যাকে তাওফিক দেন তার জন্য সহজ:
মুআজ বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন: আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে এক সফরে ছিলাম। একদিন আমরা হাঁটছিলাম এবং আমি তাঁর খুব নিকটে ছিলাম। তখন আমি বললাম। ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আপনি এমন একটি আমলের কথা বলুন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে? তিনি বললেন: তুমি আমাকে মহা বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছ? নিশ্চয় এমন আমল ঐ ব্যক্তির জন্য করা সহজ আল্লাহ্ যার জন্য সহজ করে দেন: তুমি আল্লাহ্র ইবাদত করবে; তার সাথে কোন কিছুকে অংশীদার করবে না, নামায আদায় করবে, যাকাত প্রদান করবে, রমযানের রোযা রাখবে এবং বায়তুল্লাহ্র হজ্জ আদায় করবে।
এরপর তিনি বলেন: আমি কি কল্যাণের দরজাগুলো তোমাকে জানিয়ে দিব না: রোযা হচ্ছে ঢালস্বরূপ, দান-সদকা পাপকে এভাবে নিভিয়ে দেয় যেভাবে পানি যেভাবে আগুনকে নিভিয়ে দেয় এবং মধ্যরাতে নামায আদায় করা। এরপর তিনি তেলাওয়াত করেন: تَتَجَافَى جُنُوبُهُمْ عَنِ المَضَاجِعِ থেকে يَعْمَلُونَ পর্যন্ত।[সূরা হামীম আস-সাজদা, আয়াত: ১৭]
এরপর তিনি বলেন: আমি সমস্ত বিষয়ের মাথা, প্রধান খুঁটি ও শীর্ষচূড়া সম্পর্কে কি অবহিত করব না? আমি বললাম: অবশ্যই হে আল্লাহ্র রাসূল। তিনি বললেন: সমস্ত বিষয়ের মাথা হচ্ছে— ইসলাম (আল্লাহ্র প্রতি আত্মসমর্পন), প্রধান খুঁটি হচ্ছে— নামায এবং শীর্ষচূড়া হচ্ছে— জিহাদ।
এরপর তিনি বললেন: আমি কি তোমাকে এ সবগুলো অর্জনের মাধ্যম কি বলব না?
আমি বললাম: অবশ্যই, আল্লাহ্র নবী।
তখন তিনি তাঁর জিহ্বাটি ধরে বললেন: এটিকে সংযত কর!!
আমি বললাম: হে আল্লাহ্র নবী! আমরা যে কথাবার্তা বলি এর জন্যে কি আমাদেরকে পাকড়াও করা হবে?
তিনি বললেন: হে মুআজ, কি বলছ তুমি!! জিহ্বা-ঘটিত পাপ ছাড়া অন্য কিছু কি মানুষকে মুখের উপরে কিংবা নাকের উপর উপুড় করিয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করাবে?[তিরমিযি হাদিসটি বর্ণনা করেছেন (২৬১৬) এবং বলেছেন: এটি হাসান সহিহ হাদিস এবং ইমাম আহমাদ ও অন্যান্য মুহাদ্দিসও হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। আলবানী হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
আপনাকে দীক্ষা দেয়ার জন্য কোন ধর্মযাজকের প্রয়োজন নেই কিংবা অন্য কেউ মাধ্যম ধরার দরকার নেই কিংবা অন্য কোন মাখলুকের মুখাপেক্ষী হওয়ার দরকার নেই যে, সে আপনাকে আল্লাহ্র সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে। বরং আল্লাহ্ নিজেই নিজের পরিচায়ক। তিনি তাঁর ঐশীবাণীতে এবং তাঁর রাসূলদের ভাষ্যে নিজের পরিচয় দিয়েছেন। সুতরাং আপনি সে উৎস থেকে তাঁকে চিনুন। নিশ্চয় তিনি নিকটবর্তী। বরং আপনার অনুমান ও ধারণার চেয়ে অধিক নিকটবর্তী:
“হে রাসূল! আমার বান্দারা যখন আপনার কাছে আমার সম্বন্ধে জানতে চায় (তখন তাদের জানিয়ে দিন) আমি তো কাছেই আছি। কেউ যখন আমাকে ডাকে আমি তখন তার ডাকে সাড়া দেই; অতএব তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক যাতে তারা ঠিক পথে থাকতে পারে।”[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১৮৬]
আপনি আপনার রবের আনুগত্যে প্রবেশ করা ও নতুন জীবন শুরু করার জন্য দিবানিশির কোন সময় বা ঘণ্টা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার কোন প্রয়োজন নেই। বরং সকল সময়ই এর জন্য উপযুক্ত সময়:
আবু মুসা আল-আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: “নিশ্চয় আল্লাহ্ তাআলা দিনের বেলায় গুনাকারীকে ক্ষমা করার জন্য রাতের বেলা তাঁর হস্তকে প্রসারিত করেন। আর রাতের বেলার গুনাহকারীকে ক্ষমা করার জন্য দিনের বেলায় তাঁর হস্তকে প্রসারিত করেন। এভাবে সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হওয়া অবধি তিনি তা করবেন।”[সহিহ মুসলিম (২৭৫৯)]
শয়তান আপনাকে আল্লাহ্র ধর্ম থেকে বিমুখ করা থেকে আপনি সাবধান হোন। বিগত কোন গুনাহ কিংবা অন্ধকার কোন অতীতকে হেতু বানিয়ে শয়তান আপনার মাঝে ও আপনার প্রভুর মাঝে আড়াল তৈরী করা থেকে আপনি সাবধান হোন। আপনি পূর্বের সবকিছুকে পিছনে ফেলে, কুফর থেকে তওবা করে, কুফরী অবস্থায় যেভাবে হোক না কেন যা কিছু ঘটেছে সেসব কিছু থেকে ফিরে এসে আপনার প্রভুর সাথে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে শুভ্র নির্মল নতুন অধ্যায় শুরু করুন:
“(আমার এই কথা লোকদেরকে) বলে দিন, ‘হে আমার বান্দারা, যারা নিজেদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছো! আল্লাহ্র রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। আল্লাহ্ তো সব গুনাহ মাফ করে দেন। নিশ্চয়ই তিনি পরম ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। তোমাদের ওপর শাস্তি আসার আগে তোমরা তোমাদের প্রভুর অভিমুখী হও এবং তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ কর (ইসলাম গ্রহণ কর)। তার পরে (কিন্তু) তোমাদেরকে সাহায্য করা হবে না। আকস্মিকভাবে ও অজ্ঞাতসারে শাস্তি এসে পড়ার আগে তোমাদের প্রভুর নিকট থেকে তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ উত্তম বিষয়ের (অর্থাৎ কুরআনের বিধানসমূহের) অনুসরণ কর। যাতে কাউকে বলতে না হয়, আল্লাহ্র প্রতি কর্তব্যে অবহেলা করেছি বলে হায় আমার আসসোস! আর আমি তো (সত্যের প্রতি) উপহাসকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। অথবা কেউ না বলে, ‘আল্লাহ্ যদি আমাকে পথ দেখাতেন তাহলে তো অবশ্যই আমি মুত্তাকীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। অথবা কেউ শাস্তি দেখার সময় না বলে, আমি যদি আরেকবার পৃথিবীতে ফিরে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারতাম! হ্যাঁ, তোমার কাছে আমার নিদর্শনসমূহ এসেছিল, কিন্তু তুমি তাকে মিথ্যা আখ্যায়িত করেছিলে। তুমি অহংকার করেছিলে এবং কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলে। যারা আল্লাহ্র বিরুদ্ধে মিথ্যা বলে, কিয়ামতের দিন তুমি তাদের মুখমণ্ডল কালো দেখবে। জাহান্নামে কি অহংকারীদের জন্য কোন আবাসস্থল নেই? (অবশ্যই আছে এবং সেখানেই তারা বাস করবে।) আল্লাহ্ মুত্তাকীদেরকে তাদের সাফল্যসহ নাজাত দেবেন। অমঙ্গল তাদেরকে স্পর্শ করবে না এবং তাদের কোন দুঃখও থাকবে না।”[সূরা যুমার, আয়াত: ৫৩-৬১]
ওহে আল্লাহ্র বান্দা! নিশ্চয় ইসলাম পূর্বের সবকিছু শির্ক, শির্কী কর্ম, শির্কী অবস্থা, শির্কী চুক্তি ইত্যাদিকে ধ্বংস করে দেয়। সুতরাং নিজের ঘাড়ের উপর থেকে এগুলোকে ফেলে দিন; যেগুলোকে আপনাকে ভারী করে রেখেছে। আপনি বিশ্বজাহানের প্রভুর সাথে নির্মল ও পরিচ্ছন্ন জীবন শুরু করুন। আল্লাহর কাছে ফিরে আসুন এবং তাঁর কাছেই পলায়ন করুন!!
হ্যাঁ আপনার সুখ, শান্তি এবং দুনিয়া ও আখিরাতের আয়েশ যে দরজাটি আপনার জন্য উন্মোচিত হয়েছে এবং যে নতুন আলোটি আপনার সামনে উদ্ভাসিত হয়েছে এর মাধ্যমেই:
“যারা পরকালের আযাবকে ভয় করে তাদের জন্য আসলেই এতে বড় এক শিক্ষা রয়েছে। সেটা এমন একদিন যখন সকল মানুষকে একত্রিত করা হবে। সেটা এমন একদিন যখন সকলেই উপস্থিত থাকবে। কেবল একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্যই আমি তা (সে দিনটি) বিলম্বিত করছি। যেদিন তা আসবে সেদিন কেউ তাঁর অনুমতি ছাড়া কথা বলতে পারবে না। তাই তাদের মধ্যে কেউ হবে হতভাগ্য এবং ভাগ্যবান। যারা হতভাগ্য হবে তারা জাহান্নামে যাবে। সেখানে তাদের জন্য থাকবে আহাজারি আর আর্তনাদ। সেখানে তারা যতদিন আসমান–জমিন থাকবে ততদিন (অর্থাৎ যুগযুগ ধরে) স্থায়ীভাবে বাস করবে। তবে তোমার প্রভু ইচ্ছা করলে কোন ব্যতিক্রমও হতে পারে। তোমার প্রভু তো যা ইচ্ছা করেন তাই করে থাকেন। আর যারা ভাগ্যবান হবে তারা জান্নাতে যাবে। সেখানে তারা যতদিন আসমান জমিন থাকবে ততদিন (অর্থাৎ যুগযুগ ধরে) স্থায়ীভাবে বাস করবে। তবে তোমার প্রভু ইচ্ছা করলে কোন ব্যতিক্রমও হতে পারে। এটা হবে এক নিরবিচ্ছিন্ন দান।”[সূরা হুদ, আয়াত: ১০৩-১০৮]
আপনি আপনার আগের ধর্ম ত্যাগ করে أشهد ألا إله إلا الله، وأن محمدا رسول الله (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহ্র বার্তাবাহক) এই সাক্ষ্য দিয়ে ইসলামে প্রবেশ করবেন। এর চেয়ে বেশি কোন শর্ত করা কিংবা কয়েদ আরোপ করার প্রয়োজন নেই।
আপনি জানবেন যে, এর মাধ্যমে আপনি আপনার পূর্বের বিশ্বাসাবলী ত্যাগ করেছেন এবং মানুষের অন্য সকল ধর্ম ছেড়ে দিয়েছেন। বিশ্বজাহানের প্রভু ছাড়া আপনার আর কোন প্রভু নেই আপনি যার উপাসনা করবেন কিংবা আর কোন উপাস্য নেই আপনি যার প্রতি ঈমান আনবেন কিংবা যার উদ্দেশ্যে নামায পড়বেন।
আপনার আর কোন নবী নেই ইসলামের নবী মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ্ ব্যতীত। তাঁর প্রতি আল্লাহ্র রহমত বর্ষিত হোক।
ইসলাম ধর্ম ছাড়া আপনার আর কোন ধর্ম নেই এবং অনুসরণযোগ্য অন্য কোন শরিয়ত বা অনুশাসন নেই। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম চাইলে তার থেকে সেটা কখনো গ্রহণ করা হবে না। আর পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”[সূরা আলেম ইমরান, আয়াত: ৮৫]
আমরা আপনার জন্য পছন্দ করছি যে, আপনি অবিলম্বে এখনই গোসল করে ভেতরে বাহিরে শুভ্রময় পুতপবিত্র হয়ে নতুন অধ্যায় শুরু করবেন।
যখন থেকে আপনি ইসলামে প্রবেশ করবেন এবং বিশ্বজাহানের প্রতিপালকের সাথে নতুন অধ্যায় শুরু করবেন অচিরেই তখনই আমরা আপনার সকল প্রশ্ন পেয়ে প্রীত হব; যে প্রশ্নে আপনি আপনার ধর্ম সম্পর্কে জানতে চাইবেন, আপনার উপাসনা ও লেনদেন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। আপনি আমাদেরকে প্রশ্ন পাঠাতে এবং আপনার মনে যে সকল জিজ্ঞাসা ও জটিলতা জাগে সেগুলোর ব্যাপারে মেইল করতে বিলম্ব করবেন না।
আপনার কাছাকাছি স্থানে যদি কোন ইসলামিক সেন্টার থাকে ভাল হয় আপনি তাদের সাথে যোগাযোগ করা, তাদের সাথে মেশা। এর মাধ্যমে আপনার দ্বীনি বিষয়ে যা কিছু প্রয়োজন সে সব ক্ষেত্রে সহায়তা পাবেন এবং এতে করে আপনি যে ধর্ম গ্রহণ করেছেন সে ধর্মের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ আপনি পাবেন।
আমরা আল্লাহ্র কাছে দোয়া করছি তিনি যেন আপনার দিলকে ইসলামের জন্য প্রসারিত করে দেন, আপনার অন্তরকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন এবং তিনি যা ভালোবাসেন ও পছন্দ করেন আপনাকে যেন সেটি করার তাওফিক দেন।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব